কাগজ ডেস্ক : যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে অচলাবস্থা মোকাবিলায় ইউক্রেনের জন্য সহায়তা হিসেবে দেশটিতে ট্যাঙ্কবিধ্বংসী অস্ত্র সরবরাহ শুরু করেছে তারা। স¤প্রতি ইউক্রেন সীমান্তের কাছে বিপুল সেনা জড়ো করে রাশিয়া। এ থেকে পশ্চিমা দেশগুলোর আশঙ্কা, ইউক্রেনে নতুন করে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। কেননা, এর আগে ২০১৪ সালেও একবার দেশটিতে সামরিক অভিযান চালিয়েছিল রাশিয়া। অন্যদিকে এ ধরনের হামলার আদৌ কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বারবার দাবি করেছে রাশিয়া। তবে তারা এও বলছে, পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে পাঠানো তালিকা অনুযায়ী তাদের উত্থাপিত দাবিগুলো পূরণ না হলে তারা অনির্ধারিত সামরিক পদক্ষেপ নিতেও পারে।
ইউক্রেনকে ন্যাটোতে নেয়া হবে না, পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে এমন প্রতিশ্রæতি চাইছে রাশিয়া। উপরন্তু পূর্ব ইউরোপ থেকেই ন্যাটোর অপসারণ চাইছে তারা। এ নিয়ে গত সপ্তাহে শেষ হওয়া আলোচনার কোনো ফলাফল ছাড়াই শেষ হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ইউক্রেন পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে তাদের আত্মরক্ষায় সহায়তা করতে অস্ত্র চায় বলে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এ বিষয়ে গত সোমবার যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেন ওয়ালেস পার্লামেন্টে বলেন, আমরা ইউক্রেনকে সাঁজোয়া যান ও ট্যাঙ্কবিরোধী হালকা প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি আরো জানান, সোমবার প্রথম ধাপের অস্ত্রগুলো পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে এবং অল্পসংখ্যক ব্রিটিশ সেনা সদস্য সেখানে স্বল্পকালীন প্রশিক্ষণও দেবে।
তবে তিনি পাঠানো অস্ত্রের পরিমাণ ও ধরন সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট ধারণা দেননি। শুধু বলেছেন, এগুলো কৌশলগত কোনো অস্ত্র নয় এবং রাশিয়ার জন্য কোনো হুমকিও তৈরি করবে না। এগুলো শুধু আত্মরক্ষার কাজে ব্যবহারের জন্য দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, এগুলো স্বল্প-পাল্লার, কিন্তু তবুও এগুলো শত্রæকে থামিয়ে দেবে এবং তারা কী করছে তা পুনর্বার চিন্তা করতে বাধ্য করবে। আর যদি ইউক্রেনে রুশ ট্যাঙ্ক ঢুকে পড়ে; হামলা চালায়, তাহলে এগুলো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অংশ হবে। ইউক্রেইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওলেক্সি রেজনিকভ ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ ঘোষণাকে স্বাগত জানান। এক টুইটে তিনি বলেন, ব্রিটেনের অ্যান্টি-আর্মার, প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র ব্যবস্থাসহ একটি নতুন নিরাপত্তা প্যাকেজ দেয়ার সিদ্ধান্তকে ইউক্রেন স্বাগত জানায়!
এর আগে, ইউক্রেনে ‘রাশিয়া তাদের সম্ভাব্য সামরিক হামলা’ চালালে কঠোর ফল ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ব্রিটেন। ইউক্রেনের নৌবাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রেও ব্রিটেন সহযোগিতা করছে। ওয়ালেস রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শইগুকে লন্ডন সফরের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। তবে রাশিয়া তা গ্রহণ করবে কিনা তা নিশ্চিত নন ওয়ালেস। ওয়ালেস বলেন, সা¤প্রতিক সমস্যার পরিধিটা একটু বিস্তৃত হলেও তা সমাধানযোগ্য। কূটনীতির বিজয় ‘সুনিশ্চিত’ জানিয়ে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিনও এটা চান। রাশিয়াও বলছে, আলোচনা ‘অচলাবস্থায় পৌঁছালেও’ এখনি কূটনৈতিক সমাধানের চেষ্টা ছেড়ে দিচ্ছে না তারা। তবে উত্তেজনা প্রশমিত না হলে বিকল্প পদক্ষেপ কী হতে পারে, তা নিয়ে সামরিক বিশ্লেষকরা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। এর আগে ইউক্রেনে অভিযানের অজুহাত সৃষ্টিতে ‘নিজেদের ওপর হামলা ঘটিয়ে’ রাশিয়া উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড মঞ্চস্থের ‘ষড়যন্ত্র’ করছে বলেও অভিযোগ আনেন এক মার্কিন কর্মকর্তা।