দুদকের মামলা : অব্যাহতি পেতে হাইকোর্টে ওসি প্রদীপের আবেদন

আগের সংবাদ

‘কাগুজে’ বিদেশি বিনিয়োগ : সাড়া মেলে নিবন্ধনের এক-তৃতীয়াংশের,হ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং সুশাসনের অভাব

পরের সংবাদ

বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম ১ হাজার ৬৮০ টাকায়

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আতিক ইসলাম সিকো, শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) থেকে : চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার ১ হাজার ৬৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম। দেখা গেছে- রাস্তার পাশে ফলের দোকানে সাজিয়ে রাখা হয়েছে এই আম। গায়ের রঙ লাল-হলুদ। একেকটি আমের ওজন ৮০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি ১০০ গ্রাম পর্যন্ত। ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি হিসেবে আমটি নিতে হলে ক্রেতাকে গুনতে হবে ১ হাজার ৬৮০ টাকা। অস্ট্রেলিয়ান সূর্যডিম আমের (মিয়াজাকি আম) পসরা নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিশ্বরোড মোড়ে বসে আছেন বিক্রেতা হযরত আলী।
হযরত আলীর ফলের দোকানে পেয়ারা ও তরমুজ ছাড়া বাকি সবগুলো ফলই বিদেশি। অস্ট্রেলিয়ান সূর্যডিম আম ছাড়াও এখানে আরো রয়েছে থাইল্যান্ডের জাম্বু ফলজি বা থাইকিউ জাই আম, চায়না হানি পামেলো লেবু (বাতাবি লেবু), রাম্বুটান, মিসরের কাঁচা খেজুর ও থাইল্যান্ডের সুমিষ্ট আতা। সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ মহাসড়কের বিশ্বরোড মোড়ের এই ফলের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, হযরত আলীর ছেলে জেলা শহরের ফুলকুঁড়ি ইসলামিক একাডেমির সপ্তম শ্রেণির ছাত্র আবদুল আলিম শ্রাবণ দোকানে বসে আছে। সে জানায়, তার বাবা বাসায় খেতে গেছেন। ফল বিক্রেতা হযরত আলীর বাড়ি জেলা শহরের বেলপুকুরে। তিনি ৭ বছর ধরে ফলের ব্যবসা করেন।
শ্রাবণ জানায়, লাল ও হলুদ বর্ণের সূর্যডিম আমগুলো অস্ট্রেলিয়া থেকে আনা হয়েছে। প্রথম চালানে ৮ পিস আনা হয়। যার একটি ইতোমধ্যে বিক্রি হয়েছে। ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি দরে আমগুলো বিক্রি হচ্ছে। বেশ কয়েকদিন আগে রাজধানী থেকে এই আম নিয়ে আসা হয়েছে। সূর্যডিম আমের স্বাদ খুবই ভালো। বাকি আমগুলো একজন অর্ডার করেছেন। দেশি বাতাবি লেবুর মতো ফল রয়েছে এই দোকানে। এ ফল সম্পর্কে জানতে চাইলে শ্রাবণ জানায়, এটির নাম চায়না হানি পামেলো লেবু। এটি ৪৫০ টাকা কেজি। তবে পিস হিসেবে নিলে ক্রেতাদের গুনতে হবে ৬৫০ টাকা। এই লেবুর ওজন একেকটা দেড় কেজি। ফলের দোকানে আধা ঘণ্টা অবস্থান করে দেখা যায়, অন্তত ১৫-২০ জন ক্রেতা দোকানে আসলেন। ফলের নাম ও দাম জিজ্ঞাসা করেই তারা ফিরে যাচ্ছেন। এদিকে কথা হয় এক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ফলগুলো দেখতে খুবই লোভনীয়। কিন্তু দাম শোনার পর তা আর কেনার ইচ্ছা থাকে না। বাইরের দেশ থেকে আনা বলে ফলগুলোর অনেক দাম।
স্কুল শিক্ষক মোতাহার আলী বলেন, আমের জেলা হিসেবে পরিচিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ। অথচ এই চাঁপাইনবাবগঞ্জেই আম বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি দরে। এটা ভাবনারও বাইরে। লোভনীয়, আকর্ষণীয় ও সুস্বাদু হলেও ফলগুলো শুধু উচ্চবিত্ত পরিবারের লোকজনের জন্য। এরই মাঝে দোকানে আসে মালিক হযরত আলী।
তিনি জানান, সূর্যডিম আম ছাড়াও তার কাছে আরেকটি জাতের আম রয়েছে। থাইল্যান্ডের জাম্বু ফলজি বা থাইকিউ জাই আম। এর দাম প্রতি কেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। তিনি আরো জানান, রাম্বুটান নামে মালয়েশিয়ান লিচুর দাম প্রতি কেজি ১ হাজার ৬০০ টাকা। ফলটি অনেক বিক্রি হয়েছে। দেশি লিচুর থেকে এটি অনেক মিষ্টি। বাংলাদেশেও এর চাষ শুরু হয়েছে। তবে এখন ফলন দেয়ার সময় হয়নি। এছাড়া রয়েছে থাইল্যান্ডের আতা ফল। ৮০০ টাকা কেজি করে বিক্রি হচ্ছে এই আতা ফল। একই দামে বিক্রি হচ্ছে মিসরের কাঁচা খেজুর। বিশেষ এই খেজুরটি আকারে সাধারণ খেজুরের তুলনায় অনেক বড় ও কাঁচা অবস্থাতেই খেতে হয়।
এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের (আম গবেষণা কেন্দ্র) বৈজ্ঞানিক আবু সালেহ ইউসুফ ভোরের কাগজকে জানান, সূর্যডিম আমকে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি আম বলা হয়। ইতোমধ্যে বাংলাদেশেও এর পরীক্ষামূলক চাষ শুরু হয়েছে। তবে শুধু আমের মৌসুমে সূর্যডিম আমের ফলন পাওয়া যায়। অস্ট্রেলিয়ায় এখন আমের মৌসুম, তাই ফলন বেশি। ব্যবসায়ীরা সেখান থেকে এনে বেশি দামে আম বিক্রি করছেন। এটি একটি লাভজনক পেশা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়