দুদকের মামলা : অব্যাহতি পেতে হাইকোর্টে ওসি প্রদীপের আবেদন

আগের সংবাদ

‘কাগুজে’ বিদেশি বিনিয়োগ : সাড়া মেলে নিবন্ধনের এক-তৃতীয়াংশের,হ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং সুশাসনের অভাব

পরের সংবাদ

দেশজুড়েই চলছে বালু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে দেশজুড়েই সরকারি অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে জটিলতা দেখা দিচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাকর্মী ও প্রশাসনের প্রচ্ছন্ন মদত থাকায় এদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই সাধারণত কার্যকর হয় না। নদীতে জমে থাকা পলি-বালু অপসারণের স্বীকৃত পদ্ধতির কিছুই মানে না বালু ব্যবসায়ীরা। অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলার কারণে নদীগর্ভে বিলীন হয় গ্রামের পর গ্রাম। আর সরকারি কোনো

প্রকল্পে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা না হলেই তীর ভাঙার ভয় দেখিয়ে গ্রামবাসীকে উসকে দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় কাজ।
বিআইডব্লিউটিএর অবসরপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ বলেন, এটি একটি স্বার্থের সিন্ডিকেট। দেশের সব জায়গাতেই এমনটি দেখা যায়। এর সঙ্গে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী, থানা পুলিশ, জেলা প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অনেকেই জড়িত থাকে। বালু ব্যবসায়ীরা দেশীয় ড্রেজার দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলে। বালু বিক্রির টাকা সবার মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে। যে কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোথাও অভিযোগ করেও প্রতিকার পাওয়া যায় না।
অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলার ক্ষতি বোঝাতে গিয়ে তিনি বলেন, সরকার যখন কোনো ড্রেজিং পরিকল্পনা করে, তখন সেটি করা হয় বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে। নদীর কতটুকু, কীভাবে কাটতে হবে, এর প্রভাবে নদী ভাঙন দেখা দেবে কিনা, নদীর গতি-প্রকৃতি, পরিবেশ বা কোনো স্থাপনার ক্ষতি হবে কিনা- এসব বিবেচনায় আনা হয়। সাধারণত পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিআইডব্লিউটিএ, সেতু বিভাগ ও বন্দর কর্তৃপক্ষগুলো বিভিন্ন প্রকল্পে ড্রেজিং করে থাকে।
অন্যদিকে, বালু ব্যবসায়ীরা দেখে নদীর কোথায় বিক্রিযোগ্য বালু রয়েছে। সেটি তুলতে গিয়ে নদীর বুকে অসংখ্য গর্ত করে ফেলে তারা। ফলে তীর ভেঙে পড়ে। ফসলি জমি, গ্রামবিলীন হয়। তারা সেতুর পিলারের কাছাকাছি এসেও বালু তোলে। কার কী ক্ষতি হলো, সেসব দেখার সময় তাদের নেই।
পাংলী নদীর ক্ষেত্রেও এমনটি হয়েছে উল্লেখ করে এই প্রকৌশলী বলেন, সরকার এমনভাবে নদীটি খনন করবে যেন যমুনার পানি বুড়িগঙ্গার দিকে সহজে আসতে পারে। কিন্তু টাঙ্গাইলের ওই এলাকায় দেখা গেছে, বালু ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন পয়েন্টে নিজেদের দেশীয় ড্রেজার বসিয়ে রেখেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্ধারিত ঠিকাদার ড্রেজিং করলে তাদের ব্যবসা নষ্ট হবে। তাই এ ধরনের বাধা আসছে।
স্থানীয় প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে দেখা গেছে, দেশের এক হাজারেরও বেশি পয়েন্টে অবৈধভাবে বালু তোলার কাজ চলছে। অনেকে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে বালু মহাল ইজারা নিলেও বালু তোলার সময় কোনো নিয়ম-কানুন মানছে না। নেত্রকোনার দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদীর বালু মহালে শহর রক্ষা বাঁধের পাশেই ড্রেজার বসিয়ে বালু ও নূরী পাথর তোলা হচ্ছে। ভোলার তেঁতুলিয়া নদীতে বালু তোলার মহোৎসব চলছে। এতে নদীর তলদেশ গভীর হয়ে প্রতিদিনই তীর ভাঙছে। অসহায় হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। একই চিত্র দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়