দুদকের মামলা : অব্যাহতি পেতে হাইকোর্টে ওসি প্রদীপের আবেদন

আগের সংবাদ

‘কাগুজে’ বিদেশি বিনিয়োগ : সাড়া মেলে নিবন্ধনের এক-তৃতীয়াংশের,হ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং সুশাসনের অভাব

পরের সংবাদ

অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন বিট কর্মকর্তারা : সখীপুরে শত শত একর বন উজাড় করে জমি দখল!

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : সখীপুরে উজার হচ্ছে শত শত একর বনের গাছ। যে যেমন পারছেন তেমন করেই বনের গজারি গাছ কেটে বিক্রি এবং জমি দখল করে গড়ে তুলছেন বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিলাসবহুল ভবন। আর এসব করতে দায়িত্বরত বিট কর্মকর্তাদের দিতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। আর এতে বনের জমি দখল বা গাছ কাটার অনুমতি মিলছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, হতেয়া বিটের চতলবাইদ গ্রামের রশিদ ভূইয়ার চালাটি বন বিভাগের আওতাধীন অর্ধেকের বেশি গজারি গাছ কাটা শেষ। শ্রমিকরা গাছের পাতা ও গাছের গুঁড়ি সরানোর কাজ করছেন। পাশেই আব্দুল মজিদ মিয়া দাঁড়িয়ে রয়েছেন। সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে গাছ কাটা বন্ধ রাখেন শ্রমিকরা। গাছ কাটা শ্রমিক হোসেন আলী জানান, এখানে গাছ কাটতে লিটন দেওয়ান তাদের নিয়ে এসেছেন। শুনেছেন চার লাখ টাকায় এই গাছগুলো কিনেছেন তিনি। স্থানীয়রা জানান, এই চালাটি আব্দুল মজিদ ও তার তিন ভাইয়ের নয়। তারা বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে দীর্ঘদিন ধরে ওই জায়গা তারা চার ভাই ভোগ দখল করে রেখেছেন। বন বিভাগ থেকে কর্মকর্তারা আসলে এর আগেও তারা পর্যাপ্ত কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। এদিকে একই উপজেলার বাঁশতৈল রেঞ্জের পাথরঘাটা বিটের তক্তারচালা বাজার থেকে এক কিলোমিটার পশ্চিমে রাজনীতির মোড় এলাকায় বনের জমি দখল করে গড়ে উঠেছে পোলট্রি খামার, সিমেন্টের খুঁটি তৈরির কারখানা, দোকানপাট ও এক তলা পাকা ভবন। তক্তারচা বাজার থেকে কামালিয়া চালা যাওয়ার পথে বনের জমি দখল করে সিমেন্টের খুঁটি তৈরির কারখানা, ফার্নিচার ও একটি ছাপড়া ঘর দিয়ে বনের প্রায় অর্ধ শতাংশ জমি দখল করেছে স্থানীয় কদম আলী। এছাড়া ৩৮০২ নম্বর দাগের বনের জমিতে আনুমানিক ৪৫ হাত লম্বা দুটি পোলট্রি খামারের ঘর দিয়েছেন স্থানীয় সেলিম খান। একই দাগের বনের জমিতে স্থানীয় কদ্দুস মিয়া এক তলা একটি পাকা ভবন নির্মাণ করেছেন। এছাড়া ৩৭২৬ নম্বর দাগের বনের জমি দখল করে ঘর নির্মাণ করেছেন স্থানীয় রমজান আলী। গজারি গাছের ক্রেতা লিটন দেওয়ান বলেন, দুই মাস আগে আমার শ্বশুর এই গাছগুলো আব্দুল মজিদের কাছ থেকে কিনেছেন। দেড় মাস আগে আমার শ্বশুর মারা গেছেন। গাছ কাটা হচ্ছে, তবে বাগানে আমি এখনো যাইনি। আব্দুল মজিদ বলেন, এই জায়গাটি আমাদের বাপ দাদার সম্পত্তি। আমাদের নামে রেকর্ড আছে। এর আগেও এই জায়গা থেকে তিন বার গাছ বিক্রি করেছি। হতেয়া বিট কর্মকর্তা আব্দুল আহাদ জানান, বিষয়টি জানার পর গাছ কাটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। পাথরঘাটা বিট কর্মকর্তা মো. জাহিদ হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এ বিষয়ে টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জহিরুল হক বলেন, যারা বনের জমি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন সেই জমিগুলো উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট বিট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া এসব জমি দখলে কোনো বিট কর্মকর্তা জড়িত থাকলেও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়