আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার : আরসাপ্রধানের ভাই শাহ আলী আটক

আগের সংবাদ

বালু ব্যবসায়ীদের কারণে ৩ মাস ধরে বন্ধ ড্রেজার : নদী পুনরুদ্ধার কাজে বাধা

পরের সংবাদ

হুঙ্গা-টোঙ্গা-হুঙ্গা হাপাইয়ে উদ্গীরণ : সুনামিতে ক্ষতিগ্রস্ত লাখো মানুষ এখনো বিচ্ছিন্ন টোঙ্গা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ভয়াবহ সুনামির কবলে পড়ে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের ক্ষতিগ্রস্ত ছোট্ট দ্বীপ টোঙ্গা বাকি বিশ্ব থেকে এখনো বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। আগ্নেয়গিরির ছাইয়ে ঢাকা পড়েছে প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপ দেশটি। ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনার জন্য গতকাল সোমবার অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সেখানে পর্যবেক্ষণকারী বিমান পাঠিয়েছে। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
অস্ট্রেলিয়ার প্রশান্ত মহাসাগর বিষয়কমন্ত্রী জেড সেসেলা জানান, শনিবারের আগ্নেয়গিরি উদ্গীরণ ও সুনামিতে টোঙ্গায় ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে প্রাথমিক প্রতিবেদনগুলো থেকে জানা গেছে। কিন্তু অস্ট্রেলীয় পুলিশের বরাতে অস্ট্রেলীয় রেডিও স্টেশনকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সেখানে কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে টোঙ্গা বিমানবন্দর তুলনামূলক ভালো অবস্থায় আছে। একজন ব্রিটিশ নারী নিখোঁজ রয়েছেন এখনো।
অস্ট্রেলিয়ায় টোঙ্গা-মিশনের ডেপুটি প্রধান কার্টিস টুইহালানগিনগি জানান, পর্যবেক্ষণকারী বিমানগুলো সন্ধ্যার মধ্যে ফিরে আসার কথা। টোঙ্গা সরকার ত্রাণ কার্যক্রমকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ত্রাণ সরবরাহ কার্যক্রমের মাধ্যমে কোভিড-১৯ মুক্ত দ্বীপটিতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন হয়ে আছে টোঙ্গা। টেলিফোনে রয়টার্সকে তিনি বলেন, আমরা কোভিড-১৯ এর সুনামির মতো আরেকটা ঢেউ বয়ে আনতে চাই না।
বেসরকারিভাবে তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়ে টোঙ্গার কূটনীতিকরা উদ্বিগ্ন। ত্রাণ তহবিলের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত জনগণকে অপেক্ষা করার আহ্বান জানান তারা। টোঙ্গায় পাঠানো সব ত্রাণ কোয়ারেন্টাইন করতে হবে এবং কোনো বিদেশি কর্মীকে সম্ভবত বিমান থেকে নামার অনুমিত দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি। হুঙ্গা-টোঙ্গা-হুঙ্গা হাপাই আগ্নেয়গিরিতে ভয়াবহ উদ্গীরণের পর সৃষ্ট সুনামি টোঙ্গার উপকূলগুলোতে আঘাত হানে। পুরো দ্বীপটির ফোন ও ইন্টারনেট লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সাগরতলের সাবমেরিন কেবল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আন্তর্জাতিক যোগাযোগ মারাত্মক বিঘিœত হচ্ছে। সবকিছু পুনরায় চালু হতে এক সপ্তাহের বেশি সময় লেগে যাবে। টোঙ্গার টেলিফোন নেটওয়ার্ক ফের চালু হলেও ছাই বড় ধরনের স্বাস্থ্য উদ্বেগ হিসেবে দেখা দিয়েছে। এর কারণে পানিও দূষিত হয়ে পড়ছে।
টুইহালানগিনগি বলেন, ছাই যে বিষাক্ত আর এর মধ্যে নিঃশ্বাস নেয়া যে ক্ষতিকর এবং তাদের যে মাস্ক পরা উচিত, অধিকাংশ মানুষই তা নিয়ে সচেতন নয়। রাজধানী নুকুয়ালোফা থেকে ২১ কিলোমিটার পশ্চিমে হিহিফো উপদ্বীপের হাতাফু বিচ রিসোর্ট ‘পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে’ বলে এর মালিকরা ফেসবুকে জানিয়েছেন। রিসোর্টের ব্যবস্থাপনায় থাকা পরিবারটি সুনামির হাত থেকে তাদের জীবন বাঁচাতে জঙ্গলে গিয়ে আশ্রয় নেন বলেও জানান তারা। তাছাড়া ব্রিটিশ নারী অ্যাঞ্জেলা গøভার সুনামির ঢেউয়ের তোড়ে ভেসে যান। তার স্বামী জেমস গøভার একটি গাছ ধরে কোনো রকমে রক্ষা পেলেও তার স্ত্রী ও পোষা কুকুরগুলো ভেসে গেছে।
কয়েক দশকের মধ্যে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের অভিজ্ঞতায় এবারের উদ্গীরণ ও সুনামি সবচেয়ে মারাত্মক ছিল বলে রেডক্রস জানিয়েছে। রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্টের প্রশান্ত অঞ্চলের প্রধান কেটি গ্রিনউড রয়টার্সকে জানান, সুনামিতে প্রায় এক লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হুঙ্গা-টোঙ্গা-হুঙ্গা হাপাই আগ্নেয়গিরির উদ্গীরণের প্রভাব ফিজি, নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানেও অনুভূত হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়