আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার : আরসাপ্রধানের ভাই শাহ আলী আটক

আগের সংবাদ

বালু ব্যবসায়ীদের কারণে ৩ মাস ধরে বন্ধ ড্রেজার : নদী পুনরুদ্ধার কাজে বাধা

পরের সংবাদ

শিল্পকলায় ঢাকা পদাতিকের ‘কথা-৭১’ মঞ্চায়ন

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : একজন মুক্তিযোদ্ধা এখনো আত্মযন্ত্রণায় ভুগছেন। কারণ যুদ্ধাপরাধীরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পাঁয়তারা করছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে মাঠে নামেন। তার বিশ্বাস, এ কাজে অনেকেই অতঃপর এগিয়ে আসবে। এই মুক্তিযোদ্ধা একটি সফল সমাবেশ সম্পন্ন করে বাসায় ফিরে দেখেন তার সন্তান ঘরে উচ্চ শব্দে ইংরেজি গান শুনছে। মুক্তিযোদ্ধা পিতা এ জন্য বিরক্তবোধ করেন। তিনি গান বন্ধ করে দেন। এতে ছেলে ক্ষুব্ধ হয়ে পিতার সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হয়। পিতা-পুত্রের এই বিতর্কের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বেরিয়ে আসে। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই অপারেশন সার্চলাইট নিয়ে পাকিস্তানি আর্মিরা পর্যালোচনার মাধ্যমে গণহত্যার রূপরেখা চূড়ান্ত করে। এ সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বর্বর হামলা পরিচালনার দায়িত্ব নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়। শুরু হয় গণহত্যা। এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলে নাটক।
নাটকের ভেতরেই জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের সেই গণহত্যা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েটের) অধ্যাপক নূরুউল্লা নিজের ভিডিও ক্যামেরায় ধারণ করার মাধ্যমে ’৭১-এ গণহত্যার প্রামাণ্য দলিল তৈরি করেন। জগন্নাথ হলের নিহতের লাশ সরায় ডোমরা। এরই মধ্যে চুন্নু ডোম এবং পরদেশি ডোম কথা বলে ঢাকা শহরের নির্মম গণহত্যা নিয়ে। সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং মর্মান্তিক ধর্মান্তরের কথা। অধ্যাপক যতীন সরকারের স্ত্রী কানন সরকারের ধর্মান্তরের প্রতিবাদ করায় মাওলানা সাহেবকে মসজিদে খুন করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। স্বাধীনতা বিরোধীদের শান্তি কমিটি রাজাকার-আলবদর বাহিনী গঠন, তাদের এবং পাকিস্তানি আর্মিদের অমানবিক নির্যাতন, ধর্ষণ, গণহত্যায় দিশেহারা বাঙালিরা রুখে দাঁড়ায়। গঠিত হয়, মুক্তিবাহিনী, মুজিবনগর সরকার, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে পরিবেশিত অনুষ্ঠান সেদিনের বিধ্বস্ত বাঙালি জাতির মনে বিরাট আশার সঞ্চার করে।
‘কথা-৭১’ নাটকের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধারা বারবার ইতিহাসের সত্যের মুখোমুখি হন। মুক্তিযোদ্ধাদের এই সত্য ইতিহাস যথার্থভাবে উপস্থাপন হয়নি বলেই তরুণদের একটি অংশ আজও বিভ্রান্ত, ‘কথা-৭১’ ইতিহাসের সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করারই একটি উদ্যোগ মাত্র। দেশের প্রথম সারির নাট্য সংগঠন ঢাকা পদাতিক।

‘নাটক হোক জীবনের প্রকাশিত সত্য, নাটক হোক জীবন যুদ্ধের হাতিয়ার’ স্লোগানে এক ঝাঁক উচ্ছল ও প্রাণবন্ত তারুণ্যের সমাবেশে গড়ে ওঠে ঢাকা পদাতিক। দলটির নিয়মিত প্রযোজনায় ‘কথা-৭১’ নাটকটি মঞ্চস্থ হলো।
গতকাল সোমবার শীত সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে লেখক ও গবেষক কুমার প্রীতিশ বল রচিত ‘কথা-৭১’ নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন দেবাশীষ ঘোষ। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন ফিরোজ হোসাইন, কাজী চপল, সিফাত বিন আজিজ, শেখ শান-এ-মাওলা, এইচ এম মোতালেব, জোসেফ পরিমল রোজারিও, আবুল হাসনাত, কিরণ জাকারিয়া প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়