আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার : আরসাপ্রধানের ভাই শাহ আলী আটক

আগের সংবাদ

বালু ব্যবসায়ীদের কারণে ৩ মাস ধরে বন্ধ ড্রেজার : নদী পুনরুদ্ধার কাজে বাধা

পরের সংবাদ

বাণিজ্যমেলা প্রতিদিন : যাতায়াতের দুর্ভোগে বিরক্ত দর্শনার্থী > শিশুদের জন্য জাম্পিং হাউজ চালু

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মরিয়ম সেজুঁতি : শুধু বেচাকেনা আর বাণিজ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৬তম আসর। দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় সব পণ্য ও সেবার বিশাল সমাহার নিয়ে বসেছে মেলার এবারের আসর। পুরো জানুয়ারি বড়-ছোট সবার জন্য এক আকর্ষণীয় বিনোদন কেন্দ্রে রূপ নিয়েছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা।
বছরের পর বছর এভাবেই ঢাকাবাসীর মনে জায়গা করে নিয়েছে বাণিজ্যমেলা। যদিও এবারের মেলা ঢাকা থেকে সরিয়ে পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যাতায়াতের অব্যবস্থাপনা ও ধুলার মধ্যে অনেকটা দুর্গম পথ পাড়ি দিয়েই যেতে হচ্ছে বাণিজ্যমেলায়। তবে মেলার ভেতরে প্রবেশ করলেই সবার মন ভালো হয়ে যাবে। অনেকটা গোছানো, ছিমছাম আর খোলামেলা জায়গা থাকায় এখানে অনেকেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন।
ব্যস্ততা আর বিনোদনের মধ্যেও শত শত কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে মেলার প্যাভিলিয়ন ও স্টলগুলোয়। তবে এতদিন বাণিজ্যমেলায় শিশুদের জন্য ছিল না কোনো বিনোদনের ব্যবস্থা। মেলার মাঝামাঝি এসে শিশুদের বাড়তি বিনোদনের জন্য আলাদা দুটি জাস্পিং হাউজ চালু হয়েছে। ফলে বড়দের পাশাপাশি বাণিজ্যমেলায় নির্মল আনন্দে মেতে উঠছে শিশুকিশোররাও। একদিকে কেনাকাটা, অন্যদিকে শিশু পার্ক।
গতকাল ছিল বাণিজ্যমেলার ১৮তম দিন। সময় বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে দর্শনার্থীর সংখ্যা। ব্যবসায়ীদের মুখের হাসিও বাড়ছে। মেলা ঘুরে দেখা গেছে, বড়দের পাশাপাশি ছোটরাও নিয়মিত ঘুরতে আসছে। বিভিন্ন জিনিস কিনে নিয়ে যাচ্ছে। পূর্বাচলে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার প্রথম ১৫ দিনে মেলায় প্রবেশের টিকিট বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৬ লাখ। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে গত শুক্রবার। রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে দুই ছেলে নিয়ে মেলায় ঘুরতে আসা শরিফুল ইসলাম জানান, শিশুদের ঘোরার জন্য তো ঢাকায় খুব বেশি জায়গা নেই। তাছাড়া তেমন অবসর সময়ও পাই না। তাই মেলা উপলক্ষে শিশুদের নিয়ে এসেছি। এখানে শিশুরা অন্য শিশুদের সঙ্গে আনন্দ করছে। দেখে বেশ ভালো লাগছে। রাজধানীর মিরপুর থেকে মেলায় এসেছেন মালিহা রহমান। সঙ্গে এক ছেলে ও এক মেয়ে। জানালেন, মেলায় শিশুদের জন্য এমন একটি বিনোদনের ব্যবস্থা ভালোই লাগছে। আমার মেয়ে ও ছেলেকে নিয়ে আসার সময় কুড়িলে অনেক সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। শিশুরা অনেক ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। এখন মেলার ভেতরে যেতে চাচ্ছে না। তাই তাদের হাউজে পাঠিয়েছি।
জাম্পিং হাউজের দায়িত্বে থাকা আনিসুর রহমান বলেন, গত শুক্রবার থেকে মেলায় শিশুদের জন্য দুটি জাম্পিং হাউজ খোলা হয়েছে। মেলার শেষ দিন পর্যন্ত এটি চলবে। ইপিবি সচিব ও বাণিজ্য মেলার পরিচালক মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, মেলায় আগত শিশুদের জন্য দুটি জাম্পিং হাউজের ব্যবস্থা করেছি। শুক্রবার থেকে এ ব্যবস্থা চালু হয়েছে। প্রতিদিন শত শত শিশু মেলায় এসে আনন্দ করছে। তিনি বলেন, মেলায় আসা শিশুদের জন্য মিনি পার্ক কিংবা বিনোদনের ব্যবস্থা রাখা দরকার ছিল। আগামীতে রাখা হবে। এতে শিশুরা মেলায় এসে বেশি করে আনন্দ উপভোগ করতে পারবে। মেলার প্রতি শিশুদেরও আগ্রহ বাড়বে।
পূর্বাচলে প্রথমবারের মতোই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মাসব্যাপী এ মেলার প্রথম দুই সপ্তাহে শিশুদের জন্য তেমন কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এছাড়া মেলায় শিশুদের জন্য ভালো কোনো খেলনার দোকানও নেই। ফলে মেলায় আসা শিশুরা এবং তাদের অভিভাবকরা বেশ হতাশ ছিলেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মেলার ইজারাদার ও মেসার্স মীর ব্রাদার্সের অপারেশনাল ম্যানেজার ছাইদুর রহমান (বাবু)। তিনি ঢাকা বলেন, ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত মেলায় মোট সাড়ে ৬ লাখ টিকিট বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে গত শুক্রবার সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে। পরের দিন শনিবার বিক্রি হয়েছে ৪২ হাজার টিকিট। তিনি বলেন, প্রথম কয়েক দিন এক-দুই হাজার করে টিকিটি বিক্রি হয়েছে। এখন বিক্রি বাড়ছে। আগারগাঁওয়ের মেলার তুলনায় অর্ধেক টিকিটও বিক্রি হয়নি উল্লেখ করে ছায়েদুর রহমান বলেন, আশা করছি আগামীতে বাড়বে। উল্লেখ্য, পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত বাণিজ্য মেলায় দেশি-বিদেশি ২২৫টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে বিদেশি ৬টি স্টল ও ৪টি মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। বাকিগুলো দেশি স্টল। এবারো প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন, জেনারেল স্টল, ফুডকোর্ট, মিনি স্টল, প্রিমিয়ার স্টল ক্যাটাগরি রয়েছে। মিলনায়তনের ভেতরে নিজস্ব একটি ক্যাফেটেরিয়া রাখা হয়েছে। সেখানে একসঙ্গে ৫০০ লোক বসে খাবার খেতে পারেন।
প্রবেশমূল্য ও সময় : মেলা চলছে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। তবে ছুটির দিনে মেলা চলে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। এবার প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা এবং ছোটদের জন্য ২০ টাকা। দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে ৩০টি কাউন্টার করা হয়েছে। এছাড়া বিকাশের কাউন্টার রয়েছে ১৫-২০টি। কেউ বিকাশ অ্যাকাউন্ট খুললে একটি টিকিট ফ্রি দেয়া হচ্ছে। আবার কাউন্টারে না গিয়ে কেউ যদি বিকাশে টিকিট নেন, তাদের জন্য রয়েছে ৫০ শতাংশ ছাড়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়