আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার : আরসাপ্রধানের ভাই শাহ আলী আটক

আগের সংবাদ

বালু ব্যবসায়ীদের কারণে ৩ মাস ধরে বন্ধ ড্রেজার : নদী পুনরুদ্ধার কাজে বাধা

পরের সংবাদ

বছরের প্রথম শিরোপা রিয়ালের ঘরে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : স্প্যানিশ সুপার কাপে শিরোপার ডজন পূরণ করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। অ্যাতলেটিকো বিলবাওকে গতকাল ২-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা ছিনিয়ে নেয় বেনজেমা-মড্রিচরা। অন্যদিকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে গতকাল ব্রেন্টফোর্ডকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ২১ ম্যাচে ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে উঠে এসেছে লিভারপুল। দলের হয়ে একটি করে গোল করেন ফাবিনিয়ো, অ্যালেক্স অক্সলেইড-চেম্বারলেইন এবং তাকুমি মিনামিনো।
শনিবার রাতে সৌদি আরবের কিং ফাহাদ ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে স্প্যানিশ সুপার কাপের গত আসরের চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে ফাইনালে নেমেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচের প্রথম দিক থেকেই আধিপত্য বিস্তার করে যাচ্ছিল আনচেলত্তির শিষ্যরা। রিয়ালের হয়ে গোল করেন লুকা মড্রিচ ও করিম বেনজেমা। খেলার শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন রিয়ালের ফুটবলাররা। বারবার প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে হানা দিচ্ছিলেন তারা। মাঝ মাঠকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন মড্রিচ ও টনি ক্রুজ। অন্যদিকে, আক্রমণভাগ বিচক্ষণতার সঙ্গেই সামাল দিচ্ছিলেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রড্রিগো এবং করিম বেনজেমা। বল দখলে এগিয়ে থাকা রিয়াল গোলের উদ্দেশ্যে ১৩ শট নিয়ে চারটি লক্ষ্যে রাখতে পারে। তবে দ্বিতীয়ার্ধে তারা বল দখলের রাজত্বে টিকে থাকলেও শট নিতে পারেনি সেভাবে। আনচেলত্তির শিষ্যরা ১৩ শটের ১১টিই নিয়েছিল বিরতির আগে। অন্যদিকে শেষ ২০ মিনিটে একচেটিয়া চাপ ধরে রাখা বিলবাও পুরো ম্যাচে ১৩ শটের মাত্র দুটি লক্ষ্যে রাখতে পারে, যেখানে প্রথমার্ধে তারা শট নিয়েছিল চারটি। বার্সেলোনার বিপক্ষে সেমিফাইনালে গোল পাওয়া দুই ফরোয়ার্ডের বোঝাপড়ায় ম্যাচের ১৯তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত রিয়াল। ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের বাড়ানো বল ডি-বক্সের মুখে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে শট নেন বেনজেমা। তবে একটুর জন্য সেটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। বল দখলের পাশাপাশি আক্রমণে আধিপত্য করা রিয়াল আট মিনিট পর আরেকটি সুযোগ তৈরি করে। যদিও এ যাত্রায় ডান দিক থেকে কাসেমিরোর কোনাকুনি শট তেমন ভাবাতে পারেনি গোলরক্ষক উনাই সিমোনকে। এভাবেই বিলবাওকে চাপের মধ্যে রেখে কিং ফাহাদ স্টেডিয়ামে ফাইনাল ম্যাচে প্রথম গোল হয় ৩৮তম মিনিটে। নিজেদের সীমানা থেকে সতীর্থের পাস পেয়ে মড্রিচ ডান দিকে রদ্রিগোকে বাড়িয়ে সামনে এগিয়ে যান। ব্রাজিলিয়ান তরুণ ফরোয়ার্ড ডি-বক্সে ঢুকে প্রতিপক্ষের তিনজনের মধ্যে থেকে ছোট করে কাটব্যাক করেন আর প্রথম ছোঁয়ায় জোরাল উঁচু শটে ঠিকানা খুঁজে নেন ক্রোয়াট মিডফিল্ডার। রড্রিগোর পাস থেকে চলন্ত বলে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণের পরিমাণ আরো বাড়িয়ে দেয় বেনজেমারা। খেলা শুরুর ৫০ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি পায় রিয়াল মাদ্রিদ। গোলের উদ্দেশ্যে বেনজেমার শট ইরে আলভারেজ হাতে লাগার কারণে পেনাল্টি পায় রিয়াল মাদ্রিদ। স্পট কিকে গোল করে শিরোপা অর্জনের পথে দলকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যায় করিম বেনজেমা। দারুণ ছন্দে থাকা বেনজেমা এবার বিলবাওয়ের বিপক্ষে গোল করেই চলেছেন। লা লিগায় চলতি আসরে দুইবারের দেখায়ই গোলের দেখা পেয়েছেন তিনি। গত ডিসেম্বরের শুরুতে তার একমাত্র গোলেই দলটিকে হারায় রিয়াল। পরবর্তী দেখায় দলের ২-১ ব্যবধানের জয়ে দুটি গোলই করেন ৩৪ বছর বয়সি এই স্ট্রাইকার। ৬৪তম মিনিটে সুযোগ আসে বিলবাওয়ের সামনে। দাভিদ আলাবার চ্যালেঞ্জের মুখে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি রাউল গার্সিয়া। ৭৬তম মিনিটে এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডারের হেড লাগে পাশের জালে। বাকি সময়ে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে বিলবাও। কিন্তু নিশ্চিত সুযোগ মিলছিল না। এরই মাঝে ৮৬তম মিনিটে গার্সিয়ার হেড গোলমুখে মিলিতাওয়ের হাতে লাগলে ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সেই সঙ্গে লাল কার্ড পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে এই ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডারের। গার্সিয়ার সোজাসুজি শট নেয়ার পূর্বে কোর্তোয়া ডানদিকে ঝাপিয়ে পড়লেও অসাধারণ ক্ষিপ্রতায় পা দিয়ে গোল ঠেকিয়ে দেয়। পরবর্তী কয়েক মিনিট রিয়ালের ১০ জনের দল খেললেও বিলবাও কোনো গোলের দেখা পায়নি। অবশেষ ২-০ গোল ব্যবধান নিয়ে শিরোপা উল্লাসে মেতে উঠে ২০১৯-২০ আসরের চ্যাম্পিয়নরা।
লা লিগার শীর্ষে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ কোচ এই স্প্যানিশ সুপার কাপে খেতাব জয় নিয়ে বলেছেন, ‘এই সাফল্য অনুপ্রেরণা দেবে আগামীতেও সাফল্যের ধারা বজায় রাখতে। তবে আমাদের খুব বেশি সময় নেই এই সাফল্য নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার। কারণ আরো একটি প্রতিযোগিতা আসছে।’ লুকা মড্রিচ আর মার্সেলোর জন্য এই শিরোপা জয় আরো বিশেষ হয়ে উঠেছে। রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসে সবচেয়ে বয়সি খেলোয়াড় হিসেবে গোল করার রেকর্ড গড়েছেন লুকা মড্রিচ। ৩৬ বছর ১২৯ দিন বয়সে গোল পেয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে তিনি এই ম্যাচে ম্যাচ সেরা পুস্কারেও ভূষিত হয়েছেন। রিয়ালের হয়ে এর চেয়ে বেশি বয়সে গোল করার রেকর্ড অন্য কারো নেই। রিয়ালের হয়ে সবচেয়ে বেশি শিরোপা জেতার তালিকায় কিংবদন্তি উইঙ্গার পাকো হেন্তোর পাশে বসেছেন রিয়ালের বর্তমান অধিনায়ক। একই সঙ্গে রিয়ালের হয়ে ট্রফি জয়ের দৌড়ে ছাড়িয়ে গেছেন ২২টি শিরোপা জেতা সাবেক অধিনায়ক সের্হিও রামোসকে। ২০টি শিরোপা জিতে হেন্তো, মার্সেলো আর রামোসের পেছনেই আছেন করিম বেনজেমা। স্প্যানিশ সুপার কাপে রিয়াল মাদ্রিদ এই নিয়ে ১২টি শিরোপা ঘরে তুলেছে। এই টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ১৩ শিরোপা জয়ের রেকর্ডের একক অধিকারে আছে রিয়ালের চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী ক্লাব বার্সেলোনা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়