আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার : আরসাপ্রধানের ভাই শাহ আলী আটক

আগের সংবাদ

বালু ব্যবসায়ীদের কারণে ৩ মাস ধরে বন্ধ ড্রেজার : নদী পুনরুদ্ধার কাজে বাধা

পরের সংবাদ

প্রবাদপ্রতিম নৃত্যগুরু বিরজু মহারাজের মহাপ্রয়াণ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : উপমহাদেশের কিংবদন্তি নৃত্যগুরু বিরজু মহারাজের হৃদয়ের কম্পন, তার নাচ থেমে গেছে। গত রোববার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিরবিদায় নিয়েছেন কত্থকের ‘মহারাজা’। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। সাদাসিদে জীবনযাপনকারী বিরজু মহারাজ ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশে এসে গেছেন। সেবার ছায়ানটে কত্থক নৃত্য উৎসবের মঞ্চে নিজের কর্মময় জীবনের গল্প, নাচ নিয়ে একান্ত ভাবনার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, সারা দুনিয়াই নাচছে! এই দেখুন না, বাতাস নাচছে, চাঁদ নাচছে, পৃথিবী নাচছে, পাতা নাচে, ফুল নাচে। কৃষ্ণ বাঁশি বাজায়, শিব ডমরু বাজায়, নাচে তো বটেই। ভগবান আসলে আমাদের সবার মধ্যে কেমন এক অদ্ভূত ছন্দ দিয়েছেন। হৃদয়ের কম্পনই তো নাচ। এই নাচ কেউ খুঁজে পায়, কেউ পায় না।
এ বিষয়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দিল্লির বাড়িতে নাতির সঙ্গে খেলার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন বিরজু মহারাজ। দ্রুত দিল্লির সাকেত হাসপাতালে নেয়া হলেও তাকে বাঁচানো যায়নি। বেশ কিছুদিন ধরেই কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন প্রবাদপ্রতিম এ শিল্পী। তাকে নিয়মিত ডায়ালাইসিস করাতে হচ্ছিল। আনন্দবাজার জানায়, একাধারে নাচ, তবলা এবং কণ্ঠসংগীতে সমান পারদর্শী ছিলেন বিরজু। ছবিও আঁকতেন। রবিশঙ্কর তার নাচ দেখে বলেছিলেন, তুমি তো লয়ের পুতুল!
উপমহাদেশের কত্থক কিংবদন্তি ঈশ্বরী প্রসাদের এ বংশধর জন্ম নেন জন্ম ১৯৩৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি। বাবা পতি অচ্ছন মহারাজের কাছে ‘তেহাই’ আর ‘টুকরা’ আবৃত্তি দিয়ে শুরু; আট বছর বয়সেই তুখোড় হয়ে ওঠেন নাচ, গান আর বাদনে। ৯ বছর বয়সে ‘শিক্ষক’ বাবাকে হারিয়ে ছন্দপতন। নিরুপায় হয়ে ভিটেবাড়ি বিক্রি করেছেন। তবে সংগীত আর নৃত্যসাধনা থেকে একচুল বিচ্যুত হননি। কিশোর বয়সেই বিরজু হয়ে ওঠেন নৃত্যগুরু। প্রথমে সংগীতভারতী, পরে ভারতীয় কলাকেন্দ্র, কত্থককেন্দ্র ও নিজের প্রতিষ্ঠিত কলাশ্রমে তালিম দেন ৪৬ বছর বয়সে ‘পদ্মবিভূষণ’ পাওয়া এ কিংবদন্তি।
ভারতীয় পুরাণ, ইতিহাস ও ঐতিহ্যনির্ভর ১৭টি নৃত্যনাট্য নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। ঠুমরি, দাদরা, ভজন, গজল গায়ক হিসেবেও খ্যাতিমান হয়েছেন। আবার সেতার, সরোদ, বেহালা, সারেঙ্গি, তবলাসহ একাধিক যন্ত্রবাদনে পারদর্শী। তিনি একাধারে কবি ও লেখক। পেয়েছেন সংগীত ও নাটক আকাদেমি অ্যাওয়ার্ড, কালিদাস সম্মাননা, নৃত্যচূড়ামণি পুরস্কারসহ আরও অসংখ্য পদক ও পুরস্কার। বাংলাদেশের জনপ্রিয় নৃত্যশিল্পী শিবলী মুহম্মদ, মুনমুন আহমেদ, এমনকি বলিউডের নামকরা অভিনেত্রীরাও এই নৃত্যগুরুর কাছে তালিম নিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়