আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার : আরসাপ্রধানের ভাই শাহ আলী আটক

আগের সংবাদ

বালু ব্যবসায়ীদের কারণে ৩ মাস ধরে বন্ধ ড্রেজার : নদী পুনরুদ্ধার কাজে বাধা

পরের সংবাদ

অবৈধ সম্পদের পাহাড় : গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে দুদকের আরেক মামলা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : অবৈধ উপায়ে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ২১ কোটি ৮২ লাখ ৭৩ হাজার ৪৫৯ টাকা মূল্যের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী বাদী হয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দুদকের জনসংযোগ দপ্তর। এর আগে গত ৪ জানুয়ারি জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে সরকারি সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগে স্বর্ণ চোরাকারবারি গোল্ডেন মনিরসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, একসময় কাপড়ের দোকানের সেলসম্যান মনির এখন প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার মালিক। ইতোমধ্যে মনিরের নামে রাজধানীর অভিজাত এলাকায় ২৬টি প্লট ও অস্থাবর সম্পদসহ ৬১০ কোটি টাকার তথ্য দুদকের হাতে রয়েছে। এছাড়া অনুসন্ধান-তদন্তে আরো অনেক সম্পদ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা অর্থের তথ্য রয়েছে। যা দুদক যাচাই-বাছাই করছে।
গোল্ডেন মনিরের নামে পাওয়া সম্পদের রয়েছে- রাজধানীর বাড্ডা রাজউক পুনর্বাসন প্রজেক্টের ২.৫০ কাঠা জমিতে ৬তলা ভবন, উত্তরা কমার্শিয়াল এলাকার জনপথে (প্লট নং-২৩ ও ২৪) ৫ কাঠা, উত্তরার জমজম টাওয়ারে ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ, বারিধারা ব্লক-জে-এ প্রগতি সরণিতে ৪ কাঠার প্লট, বাড্ডার বারিধারা জে ব্লক এ ২নং প্লটে সাড়ে ৪ কাঠার জমি, একই ব্লকের ১৩নং রোডের ৪ কাঠা জমি, ১নং রোডের ৪ কাঠার প্লট, বাড্ডা রাজউক এলাকায় ১১নং রোডে আড়াই কাঠার প্লট, একই এলাকার ১০ নম্বর রোডের ১০ নম্বর প্লট (আড়াই কাঠা), একই এলাকায় ৪২ নম্বর প্লটে আড়াই কাঠা জমি, ব্লক নম্বর-৩২, জমির পরিমাণ আড়াই কাঠা। বাড্ডা রাজউক এলাকার ১১ নম্বর রোডের ৪৪ নম্বর প্লটে আড়াই কাঠা জমি। একই এলাকায় ৩৭ নম্বর প্লট ও ৪১ নম্বর প্লটে মোট ৫ কাঠা জমি। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ৩৩ শতাংশ জমি, বাড্ডা মৌজায় আড়াই কাঠা প্লট এবং পাশেই পৌনে তিন কাঠার প্লট, একই এলাকার ১০ নম্বর রোডে আড়াই কাঠার প্লট, আরো পৌনে তিন কাঠার প্লট, কেরানীগঞ্জে পৌনে চার কাঠা প্লট, বাড্ডা মৌজা আরো আড়াই কাঠা প্লট, উত্তরায় হরিরামপুরে ৩৬ শতাংশ জমি, একই এলাকায় ৫ কাঠার প্লট, উত্তরা এলাকায় নলভোগ মৌজায় চার কাঠার প্লট, পূর্বাচল প্রকল্পে ৫ নম্বর সেক্টরে ১০ কাঠার প্লট, বাড্ডায় রাজউক এলাকায় ১০ নম্বর সড়কে

আড়াই কাঠা প্লট এবং কেরানীগঞ্জের মগর চোর মৌজায় সাড়ে ৭ শতাংশ জমি। এছাড়াও রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় নামে-বেনামে শত শত কোটি টাকার জমি ক্রয় করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গোল্ডেন মনির গণপূর্ত এবং রাজউকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আঁতাত করে সরকারি কোটি কোটি টাকার প্লট নিজের করে নিতেন। বিনিময়ে সরকারি কর্মকর্তা থেকে শুরু করে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে কোটি কোটি টাকা ঘুষ দিয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্র জানা গেছে।
শুধু নিজের নামে নয়, স্ত্রী রওশন আক্তারের নামেও সম্পদের পাহাড় গড়েছেন মনির। ৫০০ থেকে ৬০০ ভরি স্বর্ণসহ বাড়ি-গাড়ি ফ্ল্যাট সবকিছুই দিয়েছেন স্ত্রী এবং স্বজনদের নামে। এর মধ্যে স্ত্রী রওশন আক্তারের নামে বাড্ডায় রয়েছে পৌনে ৩ কাঠার একটি প্লট, একই মৌজায় ১১ নম্বর রোডে আড়াই কাঠা প্লট, বারিধারা ভাটারা থানা এলাকায় আড়াই কাঠা আরেকটি প্লট, গুলশান-১ এলাকায় ৬ নম্বর রোডে তিন নম্বর বাড়িতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার স্কয়ার ফিটের একটি ফ্ল্যাট (যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা)।
এছাড়া মনিরের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে মনির বিল্ডার্সের ৬০০ শেয়ার, মেসার্স গালস অটো কারস লিমিটেডের ১৬৫০টি শেয়ার, একটি সেডান কার, মিৎসুবিশি মডেলের একটি জিপ, একটি পিস্তল এবং বারোটি শটগান। ২০২০ সালের ২০ নভেম্বর মধ্যরাতে মেরুল বাড্ডায় মনিরের ছয়তলা বাড়িতে র‌্যাব-৩ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসুর নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়