গ্যালারি কায়া : বাংলাদেশ-ভারতের শিল্পীদের নিয়ে ‘এপিক ১৯৭১’

আগের সংবাদ

স্বস্তির ভোটে আইভীর হ্যাটট্রিক : সব শঙ্কা উড়িয়ে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট, শামীম ওসমানের কেন্দ্রে হেরেছে নৌকা

পরের সংবাদ

সংসদের ১৬তম অধিবেশন বসছে আজ : ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : একাদশ জাতীয় সংসদের ষোড়শ অধিবেশন বসছে আজ রবিবার বিকাল ৪টায়। বছরের প্রথম এই অধিবেশনে সংবিধানের নিয়মানুযায়ী ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। অধিবেশন শুরুর এক ঘণ্টা আগে স্পিকারের সভাপতিত্বে কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠক বসবে। সেখানে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মনোনয়ন ও সংসদের কার্যকাল নির্ধারণ করা হবে। গত ১ জানুয়ারি সংবিধানের ৭২ (১) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সংসদ অধিবেশন আহ্বান করেন রাষ্ট্রপতি। এদিকে জাতীয় সংসদের অধিবেশন চলাকালে সংসদ সচিবালয় এবং আশপাশের এলাকায় অস্ত্র বহন এব মিছিল সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
মহামারির কারণে অন্য অধিবেশনগুলোর মতো এবারো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে সংসদের অধিবেশন। তবে করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের বিস্তারের জন্য বাড়তি কড়াকড়ি আরোপ করা হবে। প্রথম দিন অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী শোক প্রস্তাব ও সভাপতিমণ্ডলীর মনোনয়নের পর রাষ্ট্রপতিকে ভাষণ দেয়ার আহ্বান জানাবেন। রাষ্ট্রপতির ভাষণের পর অধিবেশন মুলতবি করার রেওয়াজ আছে।
এরপর দ্বিতীয় দিনের বৈঠকে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব আনা হবে। পুরো অধিবেশনজুড়ে সেই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করবেন সংসদ সদস্যরা।
অধিবেশনের শুরুর দিন কোভিড-১৯ পরীক্ষায় নেগেটিভ সনদ পাওয়া সব সংসদ সদস্য অংশ নেবেন। এরপর থেকে রোস্টারভিত্তিতে তালিকা অনুযায়ী এমপিদের আসার আমন্ত্রণ জানান হবে। সংসদের চিফ হুইপের দপ্তর এ তালিকা তৈরিও করেছে। এ বিষয়ে চিফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এবার অধিবেশনে সংসদ কক্ষে বাড়তি কর্মচারী রাখা হবে না। ঠিক যে কজন দরকার সেই অনুযায়ী রাখা হবে। সংসদ সদস্যদের যারাই বৈঠকে যোগ দেবেন তাদের করোনা ভাইরাস পরীক্ষা করাতে হবে। তিনি জানান, এই অধিবেশন ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলতে পারে। বছরের প্রথম এ শীতকালীন অধিবেশন সাধারণত দীর্ঘ হয়।
এদিকে সংসদ সচিবালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর করোনা ভাইরাস পরীক্ষা করা হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীদের শুধু প্রথম দিন সংসদ অধিবেশনের খবর সংগ্রহের জন্য সংসদ ভবনে প্রবেশাধিকার থাকছে। সেজন্য গত শুক্রবার তাদের করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা নেয়া হয়।
এদিকে রাষ্ট্রপতির আগমন উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে সংসদ সচিবালয়। সংসদে রাষ্ট্রপতির চেম্বার, গ্যালারি, প্রবেশের পথসহ বিভিন্ন জায়গায় চলাচল সীমিত করা হয়েছে। পাতা হয়েছে লাল গালিচা, ফুলের টবে সাজানো হয়েছে রাষ্ট্রপতি চেম্বার ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের যাতায়াতের পথ। সশস্ত্র বাহিনীর বাদকদের নিয়ে চলছে রিহার্সাল। রেওয়াজ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি সংসদের উত্তর প্লাজা দিয়ে আইন সভা ভবনে প্রবেশ করবেন, যা ‘প্রেসিডেন্টস প্লাজা’ নামেও পরিচিত।
সংসদ সচিবালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, প্রতিবছর ফুল দিয়ে রাষ্ট্রপতিকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। তবে এবার স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার জন্য তা করা হবে না। সংসদ ভবনে প্রবেশ করে রাষ্ট্রপতি সংসদের বিশেষ লিফটে চড়ে সাত তলায় তার চেম্বারে যাবেন। সেখান থেকে অধিবেশন কক্ষে যাবেন তিনি। স্পিকার তাকে আমন্ত্রণ জানালে বিউগলে ফ্যানফেয়ার বাজবে। রাষ্ট্রপতি সংসদে ঢুকলে নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় সংগীত বাজানো হবে। সংসদে স্পিকারের পাশে চেয়ারে বসবেন রাষ্ট্রপতি। তাকে ভাষণ দিতে অনুরোধ জানানোর পর ডায়াসে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেবেন রাষ্ট্রপতি। মন্ত্রিপরিষদ থেকে ঠিক করে দেয়া ভাষণের সংক্ষিপ্তসার সংসদে পাঠ করবেন তিনি। তবে রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন, বিভিন্ন মেগা প্রকল্প, কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে সরকারের সাফল্যসহ রাজনৈতিক দলমত নির্বিশেষে দেশের উন্নয়নে সবাইকে কাজ করারও আহ্বান জানাবেন।
সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে জানা গেছে এবার কয়েকটি আইন প্রণয়নের কাজ রয়েছে। নতুন কয়েকটি খসড়া আইন সংসদে তোলার জন্য জমা পড়েছে। তার মধ্যে রয়েছে- বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ বিল, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, বাণিজ্য সংগঠন বিল এবং পেমেন্টস এন্ড সেটেলমেন্টস বিল। এছাড়া আগের ৭টি বিল সংসদীয় কমিটিতে পরীক্ষাধীন রয়েছে। এবারের অধিবেশনে এক ডজন বিল পাস ও বেশ কয়েকটি উত্থাপন করা হবে বলে আইন শাখা সূত্রে জানা গেছে।
অস্ত্র বহন ও মিছিল সমাবেশ নিষিদ্ধ : একাদশ জাতীয় সংসদের ষষ্ঠদশ অধিবেশন উপলক্ষে বেশ কিছু বিষয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এর মধ্যে সব ধরনের অস্ত্রশস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য, অন্যান্য ক্ষতিকারক ও দূষণীয় দ্রব্য বহন এবং যে কোনো প্রকার সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ প্রদর্শন ইত্যাদি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত ১২টা থেকেই এ নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়। ষষ্ঠদশ অধিবেশন শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ আদেশ বলবৎ থাকবে। ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে যেসব এলাকায় নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকার কথা বলা হয়েছে সেগুলো হলো- ময়মনসিংহ রোডের মহাখালী ক্রসিং থেকে পুরাতন বিমানবন্দর হয়ে বাংলামোটর ক্রসিং পর্যন্ত, বাংলামোটর লিংক রোডের পশ্চিম প্রান্ত থেকে হোটেল সোনারগাঁও রোডের সার্ক ফোয়ারা পর্যন্ত, পান্থপথের পূর্ব প্রান্ত থেকে গ্রিন রোডের সংযোগস্থল হয়ে ফার্মগেট পর্যন্ত, মিরপুর রোডের শ্যামলী মোড় থেকে ধানমন্ডি-১৬ (পুরাতন-২৭) নম্বর সড়কের সংযোগস্থল, রোকেয়া সরণীর সংযোগস্থল থেকে পুরাতন ৯ম ডিভিশন (উড়োজাহাজ) ক্রসিং হয়ে বিজয় সরণির পর্যটন ক্রসিং, ইন্দিরা রোডের পূর্ব প্রান্ত থেকে মানিক মিয়া এভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্ত, জাতীয় সংসদ ভবনের সংরক্ষিত এলাকা এবং এ সীমানার মধ্যে অবস্থিত সমুদয় রাস্তা ও গলিপথ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়