চট্টগ্রাম অফিস : ঘি তৈরির মূল উপাদান ননী। সেই ননী তৈরি হয় দুধ থেকে। অথচ চট্টগ্রামের বিএসপি কারখানায় ননী কিংবা দুধের কোনো উপাদান ছাড়াই তৈরি হচ্ছে ঘি। নিম্নমানের বিষাক্ত ফ্লেভার, পাম ওয়েল ও ডালডা দিয়ে মণে মণে তৈরি হচ্ছিল ঘি। এর আগে বিভিন্ন সময়ে এসব অভিযোগে তিনবার অভিযান চালালেও সংশোধন হয়নি চট্টগ্রামের কালুরঘাট বিসিক শিল্প এলাকার বিএসপি ফুডস প্রোডাক্টস।
সর্বশেষ গত ১৪ জানুয়ারি নগরের চান্দগাঁও থানার কালুরঘাট বিসিক শিল্পনগর এলাকায় অবস্থিত কারখানাটিতে অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব। অভিযানে জব্দ করা হয় ৩ হাজার ৩৬০ কেজি ভেজাল ঘি। গ্রেপ্তার করা হয় কারখানার জেনারেল ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম নিজামকে। র‌্যাব জানায়, দুধ থেকে পাওয়া উৎকৃষ্ট মানের ননী থেকে তৈরি হয় ঘি। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠান বিষাক্ত ফ্লেভার, পাম অয়েল ও ডালডার সংমিশ্রণে তৈরি করছে ঘি। বাজারে যেটি কুকমি মনোরমা গাওয়া ঘি নামে পরিচিত।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া র‌্যাব-৭’র এএসপি তাহমিদ আহমেদ চৌধুরী বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিএসপি ফুডস প্রোডাক্টস কারখানায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে বিএসটিআইয়ের কর্মকর্তাও ছিলেন। ঘি বানানোর কোনো লাইসেন্স না থাকলেও তারা ক্ষতিকর উপাদান দিয়ে দেদার ভেজাল ঘি তৈরি করে বাজারজাত করছিল। এ ঘটনায় আমিনুল ইসলাম নিজাম নামের কারখানার জেনারেল ম্যানেজারকে আটক করা হয়। ভেজাল খাদ্যপণ্য তৈরি ও ঘি জব্দের ঘটনায় নগরের চান্দগাঁও থানায় সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় প্রতিষ্ঠানটির জেনারেল ম্যানেজারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে চান্দগাঁও থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অনুমোদনহীনভাবে ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্য উৎপাদনের দায়ে বিএসপি ফুডস প্রোডাক্টস প্রতিষ্ঠানকে ২০২১ সালে এক লাখ টাকা, ২০২০ সালে ২১ লাখ টাকা এবং ২০১২ সালে এক লাখ ৫৫ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ২৩ লাখ ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছিল ভ্রাম্যমাণ আদালত। তিন দফায় ২৩ লাখ টাকা জরিমানা গুনলেও সংশোধন হয়নি প্রতিষ্ঠানটি। অব্যাহত রাখে ভেজাল ঘি তৈরি ও নিম্নমানের পণ্য উৎপাদনের কার্যক্রম।