গ্যালারি কায়া : বাংলাদেশ-ভারতের শিল্পীদের নিয়ে ‘এপিক ১৯৭১’

আগের সংবাদ

স্বস্তির ভোটে আইভীর হ্যাটট্রিক : সব শঙ্কা উড়িয়ে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট, শামীম ওসমানের কেন্দ্রে হেরেছে নৌকা

পরের সংবাদ

তাইওয়ানে নতুন সংকটের সম্ভাবনা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বিশ্ব রাজনীতি আজ একের পর এক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সংকটগুলো যেন পিছু ছাড়ছে না। ইউক্রেন, তাইওয়ান, তালেবানসহ বেশকিছু দেশে এ সংকট বিরাজমান। ঠিক এমনই এক সংকটের নাম তাইওয়ান সংকট। যে সংকটের মাত্রা সংঘাতের দিকে ধাবিত হচ্ছে। তাইওয়ানকে নিয়ে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে সেখানে বিশ্বের দুই পরাশক্তির অবস্থান। একদিকে রয়েছে গণতন্ত্রের পূজারি যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে কমিউনিস্ট পূজারি চীন। তাইওয়ানকে নিয়ে আলোচনার আগে একটা বিষয় খোলাসা করা দরকার। আর সেটা হলো- যুক্তরাষ্ট্র তার মূলনীতিতে একটা বিষয় মান্য করে আর সেটা হলো গণতন্ত্র। যুক্তরাষ্ট্র চায় বিশ্বের সব দেশ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী হবে। যার ফলে তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে চীন-রাশিয়া চায় বিশ্বের দেশগুলো কমিউনিস্টে বিশ্বাসী হয়ে বিশ্বের দেশগুলো তাদের নেতৃত্ব মেনে নেবে। যার ফলে দেখা যায় গণতন্ত্রের সঙ্গে কমিউনিস্টদের স্নায়ুযুদ্ধ। যে যুদ্ধের ফলে একটা আতঙ্ক বিরাজ করে।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ঘোষণা দিয়েছেন তাইওয়ান আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করলেই সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের চীনের সঙ্গে একীভূত করবেন। এখন কথা হলো এই কথা বলার উদ্দেশ্য কী? বর্তমানে তাইওয়ানের অন্যতম রাজনৈতিক দল কুওমিনটাঙ (কেএমটি) ছিল পুরো চীনের ক্ষমতায়। গৃহযুদ্ধের মাধ্যমে তাকে পরাস্ত করে ক্ষমতা দখল করে সিপিপি। দীর্ঘসময় ধরে দুই দলের মধ্যে বৈরী সম্পর্ক থাকলেও বর্তমানে তাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক সৃষ্টি হতে শুরু করেছে। যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে তাইওয়ানের ওপর। কারণ তাইওয়ানের জনগণ তো এখন আর চীনের সঙ্গে একীভূত হতে চায় না। অন্যদিকে চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের প্রধান শর্ত হচ্ছে এক চীন নীতিকে স্বীকৃতি দিয়ে মেনে নিতে হবে। যার পরোক্ষ অর্থ হলো, স্বেচ্ছায় চীনের সঙ্গে একীভূত হওয়ার, যা কখনো সম্ভব নয়। কারণ আমরা জানি বর্তমানে চীনের সঙ্গে স্থল ও জল সীমানা নিয়ে সীমান্তবর্তী ১৭টি দেশের সঙ্গে সংকট চলছে। যাদের সঙ্গে সংকট চলছে তারা কখনো চাইবে না তাইওয়ান চীনের সঙ্গে একীভূত হোক। অন্যদিকে চীন যদি সামরিক অভিযান পরিচালনা করে তাহলে সেটা সে দেশগুলোর জন্য অশুভ পরিণতি হিসেবে দেখা দেবে। কারণ তারা কেউই কমিউনিস্টে বিশ্বাসী নয়।
অন্যদিকে এখানে সবচেয়ে বৃহৎ পরাশক্তিগুলো যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারতের জোট কোয়াড এবং যুক্তরাষ্ট্রে নতুন জোট অকাস আমেরিকা, ব্রিটেন এবং অস্ট্রেলিয়া। তাই তাইওয়ানে যুদ্ধ শুরু হলে সেটা দ্রুত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরিণত হবে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র চায় তাইওয়ান তার নীতিতে অনড় থাকুক। কারণ তাইওয়ান যদি গণতন্ত্র শাসনব্যবস্থা কায়েম করে তাহলে তাদের সঙ্গে মৈত্রী সম্পর্ক সৃষ্টি হবে। যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান অন্যতম প্রাপ্তি। তাইওয়ানকে কাজে লাগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তখন চীনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারবে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের ২ কোটি ৪০ লাখ মানুষের স্বপ্ন যেন ভেঙে না যায় সেদিকে লক্ষ্য দিয়েছে।
তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো যে তাইওয়ান প্রাচীনকাল থেকেই চীনকে লিড দিত। সেই তাইওয়ান যদি যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের দখলে নিয়ে আসতে পারে তাহলে চীনের উত্থান কিছুটা প্রশমিত করা সম্ভব হবে। আর চীন যদি সামরিক অভিযান পরিচালনা করে তাহলে চীনের আগ্রাসন বাকি দেশগুলো সহজভাবে মেনে নেবে না। কারণ এখানে যুক্তরাষ্ট্র এক কৌশল অবলম্বন করেছে আর সেটা হলো জোট। কারণ এই জোটগুলোই পারে যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়াকে পূরণ করতে। চীন যদি আগ্রাসন চালায় তাহলে তার বিরুদ্ধে যাবে বিশ্বের প্রায় ১৩৪টি দেশ। তাইওয়ানের স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। এখন দেখার পালা তাইওয়ানকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের ভূমিকা কোন দিকে গড়ায়। বিশ্ব সংকটমুক্ত হতে পারবে কিনা এটাই দেখার বিষয়।
জাফরুল ইসলাম
শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়