গ্যালারি কায়া : বাংলাদেশ-ভারতের শিল্পীদের নিয়ে ‘এপিক ১৯৭১’

আগের সংবাদ

স্বস্তির ভোটে আইভীর হ্যাটট্রিক : সব শঙ্কা উড়িয়ে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট, শামীম ওসমানের কেন্দ্রে হেরেছে নৌকা

পরের সংবাদ

ওয়ানডেতেও চ্যাম্পিয়ন ওয়ালটন

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে শক্তিশালী দল গড়েছিল ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল। তারা সাকিব আল হাসান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও সৌম্য সরকারকে দলে নিয়েছিল। এই ক্রিকেটাররাও ব্যাট-বল হাতে বেশ দাপটেই খেলেছেন। তবে এই টুর্নামেন্টে প্রথম দুই ম্যাচ খেলেছিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। পরে ফিটনেস জটিলতায় তৃতীয় ও ফাইনাল ম্যাচ খেলতে পারেননি সাকিব। তিনি দ্বিতীয় ম্যাচ শেষ হতেই ঢাকায় ফিরে আসেন। ফলে গতকাল ফাইনালে সাকিবকে ছাড়াই হেসেখেলে শিরোপা ঘরে তুলেছে মধ্যাঞ্চল। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ৪৮.৫ ওভারে ১৬৩ রান তুলে অলআউট হয় বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল। জবাবে ৬ উইকেট ও ৪৫ বাকি রেখে জিতেছে মোসাদ্দেক-সৌম্যরা। একই দলকে হারিয়ে এর আগে বিসিএলের চারদিনের আসরেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ওয়ালটন। এর ফলে দলটি ঘরোয়া ক্রিকেটে এবারের মৌসুমে শিরোপার ?‘ডাবল’ পূর্ণ করেছে।
গতকাল অন্য দিনগুলো থেকে দেশের আবহাওয়া ছিল ব্যতিক্রম। ভোরে সূর্যোদয় হলেও কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশে নিখোঁজ ছিল আলোর ঝলকানি। এমন দিনে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে জ¦লেছে ফ্লাডলাইট। সেই আলোতে ঝলক দেখালেন মোসাদ্দেক-সৌম্যরা। তাদের দুজনের অনবদ্য ব্যাটিং-বোলিং নৈপুণ্যে বিসিবি দক্ষিণাঞ্চলকে হারিয়েছে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল। ব্যাট হাতে মোসাদ্দেক ৩৩ ও সৌম্য ২১ রান করেন। আর বল হাতে তারা দুজন ২টি করে উইকেট শিকার করেন। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতকাল টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পায় দক্ষিণাঞ্চল। কিন্তু তারা মধ্যাঞ্চলের দুই পেসার সৌম্য ও মৃত্যুঞ্জয় এবং তিন মোসাদ্দেক, মুরাদ ও অপুর ঘূর্ণির সামনে কোমড় সোজা করে দাঁড়াতে পারেনি। ফলে ১৬৩ রানেই অলআউট হয় দক্ষিণাঞ্চল। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন ওপেনার পিনাক ঘোষ। এছাড়া নাহিদুল ইসলাম ৩১, অমিত হাসান ২৯ ও এনামুল হক ২০ রান করেন। তবে পিনাক-বিজয় বিসিবি সাউথের শুরুটা এনে দিয়েছিলেন দারুণ। দুজনের পঞ্চাশ রানের জুটি পার হতেই তাদের থামিয়ে স্বস্তি এনে দেন নাজমুল ইসলাম অপু। ২০ রানে বিজয় ফিরলে ৫১ রানে ভাঙে জুটি। এরপর সৌম্যর বলে ওপেনার পিনাক ঘোষও ফেরেন একটু পরেই। তার ব্যাট থেকে আসে ৩৫ রান। দুজন ফেরার পর নতুন ব্যাটসম্যান তৌহিদ হৃদয় অপুর শিকার হয়ে ফেরেন শূন্য রানে। অমিত হাসান-জাকির হাসান খেলার হাল ধরেন। ১৪ রানে সৈকতের বলে বোল্ড হলে এই জুটিও ভেঙে যায় ৩৪ রানে। অমিতও বেশি দূর যেতে পারেননি। ২৯ রান করা অমিতও মোসাদ্দেকের শিকার। একাই লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন নাহিদুল ইসলাম। কিন্তু তিনি কাউকে সঙ্গী হিসেবে পাননি। এক প্রান্তে নাহিদুল আগলে রাখলেও আরেক প্রান্তে পড়তে থাকে উইকেট। তার ব্যাট থেকে আসে ৩১ রান। শেষ চার ব্যাটসম্যানের কেউই দুই অঙ্কের ঘর ছুঁতে পারেননি। ওয়ালটন সেন্ট্রালের ৫ বোলার, সৈকত, অপু, সৌম্য, হাসান মুরাদ ও মৃত্যুঞ্জয় নেন দুটি করে উইকেট। একমাত্র রবিউল হক ছাড়া সবাই উইকেটের দেখা পান। আবু হায়দার রনির পরিবর্তে একাদশে জায়গা পেয়েছিলেন রবিউল।
এছাড়া ১৬৪ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে মিজানুর রহমান ও সৌম্য মিলে ওপেনিং জুটিতে ৬৫ রান তুলে ফেলেন। এরপর ১১ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারিয়ে কিছুটা বিপদে পড়ে যায় মধ্যাঞ্চল। তবে অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন ও আল আমিন জুনিয়রের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৪৫ বল আগেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় মধ্যাঞ্চল।
আল আমিন ৬৯ বলে ৬ চারে ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন। এছাড়া মোসাদ্দেক ৮৫ বলে খেলেন অপরাজিত ৩৩ রানের ইনিংস। এর বাইরে মিজানুরের ব্যাট থেকে আসে ৩৯ রান, সৌম্য খেলেন ২১ রানের ইনিংস। দক্ষিণাঞ্চলের বোলারদের মধ্যে নাসুম আহমেদ একাই নেন ৩ উইকেট। বাকি উইকেটটি নেন মেহেদী হাসান।
এছাড়া ওভার শেষেই সাউথের সমান স্কোর হয় ওয়ালটন সেন্ট্রালের। ৪৩ ওভার করতে এলেন ফরহাদ রেজা।
প্রথম দুই বলে কোনো রান নেননি। তৃতীয় বলে শর্ট কাভারে ঠেলে দিয়ে মোসাদ্দেক দিলেন ভোঁ দৌড়। এ পাশে এসেই স্টাম্প তুলে নেন তিনি। এরপর শুরু হয় বিজয়োল্লাস। ডাবলস জয়ের উল্লাস। মোসাদ্দেক ৩৩ ও আল আমিন ৫৩ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। দুজনের জুটি থেকে আসে ৮৮ রান। তবে মজার বিষয় হলো- রান তাড়া করতে নেমে মিজানুর রহমান-সৌম্য সরকার দুর্দান্ত শুরু এনে দেন। বলে-রানে ছিল প্রায় সমান। উদ্বোধনী জুটি ৫০ ছড়িয়ে পার করে ফেলে ৬০ রানের ঘরও। তখনই বাগড়া দিলেন নাসুম আহমেদ।
২১ রান করা সৌম্যকে ফেরান সাজঘরে। ভেঙে যায় মিজানুরের সঙ্গে গড়া ৬৫ রানের জুটি। সৌম্যের আউটের পর স্কোরবোর্ডে ১১ রান যোগ না হতেই ওয়ালটন সেন্ট্রাল আরো তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে। দুর্দান্ত খেলতে থাকা মিজানুর ফেরেন নাসুমের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে। তার ব্যাট থেকে আসে ৫৩ বলে ৩৯ রান। দুই অঙ্কের ঘর ছোঁয়ার আগেই ফেরেন আবদুল মজিদ (১) ও মোহাম্মদ মিঠুন (৪)।
সবশেষ দুই ম্যাচে মিঠুন অসুস্থ থাকায় দলে ছিলেন না। ফাইনালের মঞ্চে ফিরেও রাঙাতে পারেননি। তবে যাইহোক ওয়ালটনের হয়ে অধিনায়ক মোসাদ্দেক বল হাতেও সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি ব্যাটে-বলে নৈপুণ্য দেখিয়ে ওয়ালটনকে চ্যাম্পিয়ন করতে রেখেছেন দারুণ ভূমিকা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়