গ্যালারি কায়া : বাংলাদেশ-ভারতের শিল্পীদের নিয়ে ‘এপিক ১৯৭১’

আগের সংবাদ

স্বস্তির ভোটে আইভীর হ্যাটট্রিক : সব শঙ্কা উড়িয়ে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট, শামীম ওসমানের কেন্দ্রে হেরেছে নৌকা

পরের সংবাদ

অর্থবছরের প্রথমার্ধে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ২৮ শতাংশ : যুক্তরাষ্ট্রে সর্বাধিক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ৪৬ শতাংশ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মরিয়ম সেঁজুতি : সদ্য বিদায়ী বছরের শেষ ৬ মাসে রপ্তানিতে সুবাতাস বইছে। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৪৬ শতাংশ। পাশাপাশি ইউরোপ ও কানাডার বাজারে ২৪ শতাংশ রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এছাড়াও নন-ট্রেডিশনাল মার্কেটে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বেড়ে হয়েছে ২৪ দশমিক ২৬ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এদিকে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে দেশের পোশাক খাতে। ফলে অক্টোবর ও নভেম্বরের তুলনায় গত বছরের ডিসেম্বরে রপ্তানি অর্ডার কমেছে। ২০ ডিসেম্বর থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত নতুন করে খুব বেশি অর্ডারও আসেনি। শুধু তাই নয়, অর্ডার দেয়া পণ্য নিতে বিলম্ব করছেন ইউরোপ-আমেরিকার বায়াররা। ফলে দুশ্চিন্তায় পোশাক মালিকরা।
পোশাক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স¤প্রতি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জার্মানসহ ইউরোপে ওমিক্রন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট মোকাবিলায় ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। অনেক স্থানে পোশাক বিক্রির দোকান ও আউটলেট বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে বায়াররা করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তারা পোশাক পণ্য গ্রহণে ‘ধীর’ নীতি অবলম্বন করেছেন। বর্তমানে যে অবস্থা তাতে খুব বেশি সমস্যা হবে না। কিন্তু এটি যদি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করে তাহলে পোশাক খাতের অনেক ক্ষতি হবে। আমরা সেই শঙ্কায় আছি।
এ ব্যাপারে ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেড ও বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ওমিক্রনের কারণে বায়াররা ডেলিভারি কমিয়ে দিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত দেশের পোশাক খাতে কোনো অর্ডার বাতিল হয়নি। তিনি বলেন, তবে বর্তমানে সমস্যা হচ্ছে, বায়াররা অর্ডার দেয়া পণ্য নিতে বিলম্ব করছেন। তাতে পেমেন্ট দেরিতে হবে, পেমেন্ট দেরিতে পেলে ব্যাংক ঋণ পরিশোধে সমস্যা হবে। শুধু তাই নয়, ওমিক্রন যদি আরো বিস্তার লাভ করে, এরপর বায়াররা অর্ডার স্থগিত করলে বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হব। তার কারণ ইতোমধ্যে কাঁচামাল চলে এসেছে, পোশাকও প্রস্তুত হয়ে যাবে। আর প্রস্তুত করা পণ্য রপ্তানি করতে না পারলে টাকা পাওয়া যাবে না।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) সারাবিশ্বে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১ হাজার ৯৯০ কোটি ৭ লাখ ডলারের, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১ হাজার ৫৫৪ কোটি ৫৫ লাখ ৭ হাজার ডলার। সেই হিসাবে ৬ মাসে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ২৮ শতাংশ। জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৪২৩ কোটি ১৬ লাখ ৫ হাজার ডলারের, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২৯০ কোটি ৮ হাজার ডলার।
অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি বেড়ে হয়েছে ৪৫ দশমিক ৯১ শতাংশ। ওভেন খাতে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ২৬৮ কোটি ২১ লাখ ৭ হাজার ডলারের পোশাক, যা আগের বছর ছিল ১৯১ কোটি ৬১ লাখ ৯ হাজার ডলার। অর্থাৎ ওভেন খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩০ দশমিক ৬৯ শতাংশ। নিটওয়্যার খাতে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে রপ্তানি হয়েছে ১৫৪ কোটি ৬০ লাখ ৭ হাজার ডলারের পোশাক, যা আগের বছর ছিল ৯৮ কোটি ৩৮ লাখ ৯ হাজার ডলার।
যুক্তরাষ্ট্রের পর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ১ হাজার ২০০ কোটি ৭১ লাখ ১ হাজার ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৯৬৯ কোটি ৬৫ লাখ ২ ডলার। অর্থাৎ ৮৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। কানাডার বাজারে ৬ মাসে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৬০ কোটি ২৮ লাখ ২ হাজার ডলারের, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪৮ কোটি ৭০ লাখ ২ হাজার ডলার। অর্থাৎ ২৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেড়েছে।
বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ সূত্র বলছে, করোনার প্রথম বছর ভারত, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামসহ বেশিরভাগ দেশে তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ ছিল। তাতে ২০২০ সালের শেষের দিকে শুরু করে ২০২১ সালে এসব দেশের অর্ডারগুলো বাংলাদেশমুখী হয়। ফলে ওভেন ও নিটওয়ার কারখানাগুলোতে চাহিদার অনেক বেশি অর্ডার রয়েছে। এসব অর্ডার তৈরির কাজ চলছে। অনেক অর্ডার প্রস্তুত শেষে রপ্তানির পর্যায়ে রয়েছে। ঠিক সেই সময় ওমিক্রনের খবরে তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়ীদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়