প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
শরীফা বুলবুল : ‘ওমিক্রন’-এর প্রাদুর্ভাব বাড়ায় ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় অমর একুশে গ্রন্থমেলা হবে কিনা- তা নিয়ে প্রকাশকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। নির্ধারিত সময় পার হলেও শঙ্কিত প্রকাশকদের অনেকেই গত বৃহস্পতিবার স্টলের ভাড়া পরিশোধের নির্ধারিত শেষ দিনে স্টলের অর্ধেক ভাড়াই পরিশোধ করেছেন। তবে মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি বলছে, স্বাভাবিক গতিতেই এগিয়ে চলছে মেলা আয়োজনের প্রস্তুতি। গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং বাংলা একাডেমি প্রান্তে অবকাঠামো নির্মাণের কাজে শ্রমিকদের ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে।
গত ২৪ নভেম্বর বইমেলায় অংশগ্রহণের আবেদন আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বাংলা একাডেমি। যেখানে বলা হয়, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে স্টলের ভাড়া পরিশোধ করে নির্ধারিত নিয়মে আবেদন করতে হবে প্রকাশকদের। নির্ধারিত তারিখে প্রকাশকদের অনেকে টাকা জমা না দেয়ায় পরে ১৩ ডিসেম্বর আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে স্টলের ভাড়া পরিশোধের সময় বাড়ায় আয়োজক প্রতিষ্ঠান। সেখানে বলা হয়, ‘২০ ডিসেম্বরের মধ্যে অর্ধেক ভাড়া পরিশোধ এবং ৫ জানুয়ারির মধ্যে বাকি টাকা পরিশোধ করতে হবে প্রকাশকদের।’ তাতেও প্রকাশকদের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে গত ৫ জানুয়ারি পুনরায় ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত স্টলের ভাড়া পরিশোধের সময় বাড়ায় একাডেমি।
প্রকাশকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেলার আয়োজন নিয়ে তাদের মধ্যে রয়েছে ব্যাপক শঙ্কা। করোনা পরিস্থিতি বাড়ায় মেলা আয়োজনের ব্যাপারে সরকারের মনোভাব পর্যবেক্ষণ করছিলেন তারা। ইতোমধ্যে স্টল ভাড়া কমানোর দাবি জানিয়ে লিখিত চিঠিও দেয়া হয়েছিল। সে ব্যাপারে কোনো ইতিবাচক সাড়া না
পাওয়ায় অর্ধেক ভাড়াই পরিশোধ করলেন প্রকাশকরা।
জানতে চাইলে সমগ্র প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী শওকত আলী তারা, মুক্তচিন্তার স্বত্বাধিকারী শিহাব বাহাদুর, বেহুলাবাংলার স্বত্বাধিকারী
চন্দন চৌধুরীসহ একাধিক প্রকাশক ভোরের কাগজকে বলেন, গত বছরের বইমেলার ক্ষতি আর ক্ষত পুষিয়ে এখনো অনেকে ঘুরে দাঁড়াতেই পারেননি। সরকারের পক্ষ থেকেও কোনো প্রণোদনা সহায়তা দেয়া হয়নি। এমন বাস্তবতায় স্টল ভাড়া অর্ধেকের আবেদন করা হলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে তারা অর্ধেক ভাড়াই জমা দিয়েছেন গতকাল ১৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার।
এ প্রসঙ্গে বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক জালাল আহমেদ ভোরের কাগজকে বলেন, আজ (গত ১৩ জানুয়ারি) পর্যন্ত টাকা পরিশোধের সময় ছিল। অনেকেই টাকা জমা দিয়েছেন। আমরা বুঝতে পারব, কতজন প্রকাশক টাকা দিয়েছেন এবং কত টাকা জমা দিয়েছেন তা জানতে রবিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করছি। এখনই এই প্রসঙ্গে কোনো কথা বলছি না। তবে এতদিন পর্যন্ত স্বাভাবিক নিয়মেই ভাড়ার টাকা নেয়া হচ্ছে। স্টল ভাড়া কমানোর কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকেই বইমেলা শুরুর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার যে সিদ্ধান্ত বা নির্দেশনা দেবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এখন পর্যন্ত আমরা আশা করছি, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে বইমেলা হবে।
তবে এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ ভোরের কাগজকে বলেন, যারা স্টল ভাড়া অর্ধেক জমা দিয়েছেন তারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই করেছেন। কর্তৃপক্ষ কী সিদ্ধান্ত নেয় তা তাদের বিষয়।
মেলা প্রসঙ্গে এই প্রকাশক নেতা আরো বলেন, করোনা বাড়ছে, অন্যান্য কর্মকাণ্ড কিন্তু থেমে নেই। আমরা আশাবাদী, বইমেলা সঠিক সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাই মেলায় আসবেন এবং সফল একটি বইমেলা হবে। এখন সরকারের কাছ থেকে কী সিদ্ধান্ত আসে, সরকারের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা আসলে অন্য কথা।
গতকাল বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সরজমিন দেখা গেছে, মেলার অবকাঠামো নির্মাণের কাজ করছেন শ্রমিকরা। একাডেমিতেও চলছে মেলা আয়োজনের দাপ্তরিক কর্মব্যস্ততা।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।