সিদ্ধান্ত পরিবর্তন : শতভাগ যাত্রী নিয়ে চলবে গণপরিবহন

আগের সংবাদ

উৎসব-উৎকণ্ঠার ভোট আজ : সবার দৃষ্টি নারায়ণগঞ্জে > আইভী-তৈমূরের লড়াইয়ে বাড়তি মাত্রা শামীম ওসমান

পরের সংবাদ

বরিশালে স্কুলে যাওয়া নিয়ে শঙ্কায় ৯০ হাজার শিক্ষার্থী : জনবল সংকটে টিকা প্রদানে ধীরগতি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এম কে রানা, বরিশাল থেকে : করোনা প্রতিরোধে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হলেও বরিশালে জনবল সংকট থাকায় টিকা প্রদানে ধীরগতিতে একদিকে যেমন করোনা ঝুঁকিতে পড়ছে শিক্ষার্থীরা, অপরদিকে পাঠদানও ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কেননা, গত ১০ জানুয়ারি সরকার ঘোষিত ১১ দফা বিধিনিষেধে বলা হয়েছে, ১২ বছরের বেশি বয়সি সব শিক্ষার্থীকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত তারিখের পর টিকা সনদ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে না, যা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে গত বৃহস্পতিবার থেকে। আর এতেই বিপাকে পড়েছে বরিশালের প্রায় ৯০ হাজার শিক্ষার্থী।
বরিশাল সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, এ পর্যন্ত জেলায় ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সি ২ লাখ ৫০ হাজার ৫০৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে টিকা দেয়া হয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার ৭৪২ জনকে। অভিভাবক ও সচেতন মহলের দাবি, শিক্ষার্থীদের টিকাদান নিশ্চিত করার পর কিংবা যারা এখনো টিকা পায়নি তাদের পাঠদান ব্যবস্থা বিধিনিষেধে উল্লেখ করা প্রয়োজন ছিল। এদিকে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি পরিপত্র বাস্তবায়নে শিক্ষার্থীরা যাতে টিকা দিয়ে স্কুলে যেতে পারে সে চেষ্টা চলছে। এজন্য বুথের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন তারা।
সূত্রমতে, বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় ৫৪৪ দিন পর গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল-কলেজ খুলে দেয়া হয়। মাত্র ১২২ দিনের মাথায় ফের করোনার ধাক্কা খেল শিক্ষার্থীরা। চলতি মাসে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ১০ জানুয়ারি ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করে সরকার। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, টিকা সনদ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে না। কিন্তু গ্রামগঞ্জে এখনো শিক্ষার্থীদের টিকা নেয়ার হার আশাব্যঞ্জক নয়। বরিশাল সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, জেলায় ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সি আড়াই লাখের বেশি শিক্ষার্থীর মধ্যে টিকা নেয়নি প্রায় ৯০ হাজার জন।

বরিশালের সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান বলেন, জেলায় ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সি ২ লাখ ৫০ হাজার ৫০৩ জন শিক্ষার্থীকে টিকা দিতে হবে। এর মধ্যে নগরীসহ সদর উপজেলায় রয়েছে ৬০ হাজার ১০৮ জন। ইতোমধ্যে বরিশাল জেলায় ওই বয়সের শিক্ষার্থীদের মধ্যে টিকা দেয়া হয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার ৭৪২ জনকে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে টিকাদান কার্যক্রম শেষ করতে হবে। তবে জনবল সংকটে এখনো শেষ হয়নি। নতুন বিধিনিষেধ অনুযায়ী গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে টিকা কার্ড নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হবে ছাত্রছাত্রীদের।
নগরীর একাধিক স্কুলের সামনে অপেক্ষারত অভিভাবকরা জানান, টিকা কার্ড নিয়ে ক্লাসে আসার বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা বাস্তবায়নে শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান আরো আগে শুরু করা উচিত ছিল। এদিকে হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জ, বাকেরগঞ্জ, বাবুগঞ্জে ধীরগতিতে চলছে টিকা প্রদান কার্যক্রম। মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তপন কুমার দাস বলেন, পাঁচ দিন ধরে টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। ২২ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৬ হাজার জনকে টিকা দেয়া শেষ করেছেন।
অপরদিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে নগরীর শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামে চলছে টিকাদান কর্মসূচি। বুধবারের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত নগরীসহ সদর উপজেলায় ৩৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী টিকা নিয়েছে। টিকাদান কার্যক্রম তদারকিতে থাকা বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ভিপি আনোয়ার হোসাইন বলেন, তারা চিন্তা করছেন বুথের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়টি। যাতে করে সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা যায়।
বরিশাল প্রধান শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, শিক্ষার্থীদের টিকাদান কর্মসূচি এগিয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার থেকে সরকারি নির্দেশনা মেনে শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসা শুরু হয়েছে।
বরিশাল শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যফ্রন্টের বিভাগীয় আহ্বায়ক অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল বলেন, এখনো প্রায় লক্ষাধিক ছাত্রছাত্রী টিকা নেয়নি। তাহলে এই ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান কীভাবে চলবে এটাও ভাবা দরকার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়