সিদ্ধান্ত পরিবর্তন : শতভাগ যাত্রী নিয়ে চলবে গণপরিবহন

আগের সংবাদ

উৎসব-উৎকণ্ঠার ভোট আজ : সবার দৃষ্টি নারায়ণগঞ্জে > আইভী-তৈমূরের লড়াইয়ে বাড়তি মাত্রা শামীম ওসমান

পরের সংবাদ

ফেব্রুয়ারির শেষে কমবে গ্যাস সংকট

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সহজেই গ্যাস সংকট কাটছে না। প্রতি বছর শীত মৌসুম শুরু হলেই রাজধানীতে গ্যাসের সংকট তীব্র হয়। অনেক স্থানেই পাইপলাইনে গ্যাস থাকে না। এবার এই সংকট আরো তীব্রতর হয়েছে। এলএনজির সরবরাহ কম থাকা এবং দেশীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলোতে উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণে সমস্যা আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে। ফলে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের আগে সংকট থেকে উত্তরণের কোনো উপায় নেই বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। জ¦ালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্যাসের দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব না দেয়ায় এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।
পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, দেশে প্রতিদিন ৩৮০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু এই চাহিদা অনুযায়ী কখনোই গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। চাহিদার বিপরীতে সর্বোচ্চ ৩২০ থেকে ৩৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে। ঘাটতি সব সময় থেকেই গেছে। বর্তমানে ২৭০ থেকে ২৮০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। এই গ্যাস থেকেই সব শ্রেণির গ্রাহকদের রেশনিংয়ের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। গত ১ মাস আগে এলএনজি সরবরাহে ঘাটতি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্যাস সংকট তীব্র হয়।
মহেশখালীর গভীর সমুদ্রে আমদানিকৃত এলএনজি সরবরাহের জন্য সামিট পাওয়ারের দুইটি ভাসমান টার্মিনাল রয়েছে। এই দুই টার্মিনালের মাধ্যমে দিনে ১০০ কোটি ঘনফুট এলএনজি সরবরাহের সক্ষমতা রয়েছে। সরবরাহ অব্যাহত ছিল। কিন্তু গত ১৮ নভেম্বর টার্মিনালের মুরিং লাইন ছিঁড়ে যাওয়ায় এলএনজি নিয়ে আসা কোনো জাহাজ টার্মিনালে ভিড়তে পারছে না। তখন টার্মিনালে মজুত থাকা এলএনজি ১০ দিন পর্যন্ত সরবরাহ করে। এরপর ২৮ নভেম্বর থেকে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে মুরিং লাইন মেরামত কাজ শেষ হবে। এরপরই টার্মিনালে জাহাজ ভিড়তে পারবে এবং এলএনজি সরবরাহ করা হবে। অপর টার্মিনাল থেকে দিনে ৫০ থেকে ৫৫ কোটি ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে।
কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ¦ালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, এলএনজি আমদানি করা খুবই ব্যয়বহুল- এটা আমরা আগেই বলেছি। কিন্তু তারপরও দেশীয় গ্যাস উৎপাদন ক্ষেত্রগুলো থেকে উত্তোলন বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়নি। এই বিষয়টি নিয়ে আগে থেকেই সরকার কাজ করলে এখন গ্যাসের সংকট হতো না। আমি এখনো বলি, দেশীয় ক্ষেত্র থেকে উত্তোলন বাড়ানোর ওপর জোর দিতে হবে। নতুন গ্যাসকূপ খনন করতে হবে।
জ¦ালানি বিশেষজ্ঞ ম. তামিম জানান, এখন গ্যাসের যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে, তাতে রেশনিং করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। এলএনজি ব্যয়বহুল গ্যাস। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে এখানেও ঝামেলা বাড়বে। তখন দাম বাড়াতে হবে অথবা ভর্তুকি বাড়াতে হবে। ভর্তুকি বাড়াতে গ্যাসের দাম বেড়েই চলছে। এখন সরকারকে গ্যাস অনুসন্ধানের ওপর জোর দিতে হবে। যদি অনুসন্ধান চালিয়ে নতুন কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন করতে পারে তবেই সংকট কাটবে।
জানা গেছে, বিগত কয়েক বছর ধরেই দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদন কমছে। ইতিপূর্বে ২৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করা হতো। এখন তা কমে ২৩০ কোটি ঘনফুটের নিচে নেমেছে। বিদেশি প্রতিষ্ঠান শেভরন এখনো সবচেয়ে বেশি গ্যাস উৎপাদন করে। বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র থেকে শেভরন প্রতিদিন ১৩০ কোটি ঘনফুটের মতো গ্যাস উৎপাদন করে আসছিল। এখান থেকেও কমে এখন তা ১১৫ কোটি ঘনফুটে ঠেকেছে। উৎপাদন বাড়ানোর জন্য শেভরন বিবিয়ানার পশ্চিম ও উত্তর দিকে সংস্কার কাজ শুরু করেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়