নির্বাচনী আইন প্রণয়নসহ ৫ দফা প্রস্তাব এনপিপির

আগের সংবাদ

বদলে গেছে ‘প্রাচ্যের ড্যান্ডি’

পরের সংবাদ

বাড়ছে করোনা : প্রয়োজন বিধিনিষেধের কঠোর বাধ্যবাধকতা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

হঠাৎ করে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পুনরায় বাড়তে শুরু করেছে এবং এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন। যে হারে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে তাতে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ সংক্রমণের হার ডবল ডিজিট ছাড়িয়ে যাবে এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায়।
এখন প্রশ্ন হলো করোনার এই পুনঃসংক্রমণ রুখতে সরকার কিংবা সাধারণ জনগণের করণীয় কী। বিগত বছরগুলোতে করোনায় বিশ্ব অর্থনীতি থমকে গিয়েছিল। পৃথিবীর দেশে দেশে মানুষ চরম অসহায় হয়ে পড়েছিল। বর্তমান সময়ে করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কার হওয়ায় সম্ভবত এখন হয়তো তেমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে না। তবে এ বিষয়ে করোনা টিকা দেশের সব মানুষ পেল কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে, যদি না পেয়ে থাকে তাহলে এদের দ্রুত টিকার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। পুরো দেশের শিক্ষার্থীরা এখন পর্যন্ত করোনা টিকার আওতায় না আসায় বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে চিন্তার বেশ অবকাশ রয়েছে। তবে সে চিন্তা করোনা মহামারির প্রথম দিককার মতো নয়। করোনা পরিস্থিতি ২০২০ সালের শেষের দিকে বলা যায় বেশ স্বাভাবিক ছিল; কিন্তু হঠাৎ করে ২০২১ সালের প্রথম দিকে ওমিক্রন নামক করোনার নতুন ধরন আবিষ্কার হওয়ার পর এটির সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে থাকে, এর বাইরে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এ ধরনটির সংক্রমণ বেশিমাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়া বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। এমন পরিস্থিতিতে সরকার বেশকিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করলেও এসব প্রজ্ঞাপন সাধারণ জনগণ কঠোরভাবে মেনে চলছে কিনা তা তদারকির দায়িত্বে যারা আছেন তারা বিষয়টিকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন তার ওপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে, কারণ বর্তমানে সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে শিক্ষিতদের মধ্যেও বেশিরভাগ মানুষকে করোনার প্রাথমিক সময়কার মতো কঠোরভাবে করোনাবিধি মেনে চলতে দেখা যাচ্ছে না এবং এমনকি অনেকেই মাস্ক পর্যন্ত ব্যবহার করছে না, ফলে এসব করোনাবিধি মেনে না চলা মানুষদের এই বিধি মানতে বাধ্য করা না হলে দেশে যে কোনো সময় করোনার অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি ঘটতে পারে, এমনকি করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণও বেড়ে যেতে পারে। দেশের সাধারণ মানুষকে করোনার এই পুনঃসংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে করোনার বিধিনিষেধগুলো কঠোরভাবে মানাতে বাধ্য করানো ছাড়া সরকারের হাতে আর কোনো উপায় আছে বলে আমরা মনে করি না। কারণ বারবার লকডাউন দেয়া কিংবা বিভিন্ন কিছু বন্ধ করে দেয়া এটা যে কোনো স্থায়ী সমাধান নয় তা আমরা বিগত দিনে খুব ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছি। এতে যে জনগণের কষ্ট বাড়ে এবং গরিব মানুষ চরম দরিদ্র হয়ে পড়ে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা প্রত্যাশা করব এই মুহূর্তে সরকার করোনা বিধিগুলো দেশের সব শ্রেণির নাগরিককে কঠোরভাবে মানতে বাধ্য করবে এবং অত্যন্ত স্বল্প সময়ের মধ্যে দেশের সব মানুষকে করোনা টিকার আওতায় নিয়ে আসবে, যার ফলে করোনার ঝুঁকি কমবে। প্রকৃতপক্ষে বিশ্বব্যাপী করোনাকাল চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এ ক্ষেত্রে করোনার বিধিনিষেধগুলো আমাদের প্রত্যেকের জানা রয়েছে। আমরা যদি সবাই সেই বিধিনিষেধ মেনে চলতাম তাহলে আজ আর করোনার পুনঃবৃদ্ধি দেখতে হতো না। সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলেও এ হারে বৃদ্ধি
পেত না। মাঝখানে আমরা সবাই মনে করেছি করোনার এবার বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে আর এই খুশিতে প্রায় সবাই মাস্ক ছাড়া মাঠে-ময়দানে, শপিংমলে, বাজারে, স্কুল-কলেজে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়িয়েছি আর মাঝখান থেকে করোনা সেই সুযোগটা গ্রহণ করেছে এবং পুনঃমাত্রায় শক্তি বৃদ্ধি করে আবার মানুষকে আক্রমণ করতে শুরু করেছে। এমতাবস্থায় আমরা যদি সাবধানতা অবলম্বন না করি এবং করোনা বিধিনিষেধ কঠোরভাবে পালন না করি তাহলে করোনার আগ্রাসী থাবা থেকে কেউ আমাদের বাঁচাতে পারবে না। তাই আসুন করোনার পুনঃবৃদ্ধির এই সময়ে করোনাকে লাগাম দেয়ার জন্য আমরা সবাই করোনাবিধি মেনে চলি। এই বিষয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও আমরা অনুরোধ করব আপনারা দেশ এবং জনগণের স্বার্থে আরো তৎপর হোন, যারা করোনাবিধি মানছে না তাদের এই বিধি নামতে বাধ্য করুন।

রতন কুমার তুরী
লেখক এবং শিক্ষক।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়