প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
কাগজ প্রতিবেদক : ইন্ডিপেন্ডেন্স কাপ টুর্নামেন্টের ফাইনাল হবে ১৫ জানুয়ারি। তবে এর আগে গতকাল টান টান উত্তেজনায় ঠাসা লিগ পর্বের খেলা শেষে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল জোন ও বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল। দুই দলই সর্বোচ্চ ৪ পয়েন্ট নিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে। এর আগে টানা দুটি ম্যাচ জিতে ফাইনালে এক পা দিয়ে রেখেছিল ওয়ালটন। তাই গতকাল লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে বিসিবি দক্ষিণাঞ্চলের বিপক্ষে হেরেও কোনো ক্ষতি হয়নি। এদিন সিলেটে তাদের ৫ উইকেটে হারিয়েছে বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে হারিয়ে ২২০ রান সংগ্রহ করে ওয়ালটন। জবাবে হৃদয়-পিনাকের অর্ধশতকে ভর করে ফাইনালে পা রাখে দক্ষিণাঞ্চল। অন্যদিকে টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়েছে ইসলামী ব্যাংক ও বিসিবি উত্তরাঞ্চল। গতকাল দিনের অন্য ম্যাচে ইমরুল কায়েসের অর্ধশতকের সুবাদে বিসিবি উত্তরাঞ্চলকে ৪ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়েছে ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চল। কিন্তু ম্যাচ জিতলেও তাদের কোনো লাভ হয়নি। কারণ আগের ২ ম্যাচে তাদের কোনো পয়েন্ট ছিল না। ফলে ম্যাচ জিতেও ইন্ডিপেন্ডেন্স কাপ থেকে বিদায় নিলেন তামিম-ইমরুলরা। এর আগে দুই দল একটি করে ম্যাচ জিতেছিল।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতকাল দক্ষিণাঞ্চলের বিপক্ষে টস হেরে আগে ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো করতে পারেনি ওয়ালটন। দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে বল হাতে শুভসূচনা এনে দেন মোস্তাফিজ। তিনি প্রথম ওভারেই মিজানুর রহমানকে এলবিডব্লিউ করেন। এই পেসারের তৃতীয় ওভারে একটি শট বলে পরাস্ত হয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ তুলে দেন সৌম্য। ১৪ বলে ৫ রান করেন সৌম্য সাজঘরে ফিরেন। দলীয় ৯ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ওয়ালটন। তবে দলের হাল ধরেন আব্দুল মজিদ ও তাইবুর রহমান। ৩৫ বলে ২৩ রান করা তাইবুর রহমানকে শিকার করেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। ৫৯ রানে ৩ উইকেট হারায় মধ্যাঞ্চল। চতুর্থ উইকেটে ৬৪ রানের জুটি গড়েন মজিদ ও মোসাদ্দেক। ৯৫ বলে ৪৬ রানের ধীরগতির ইনিংস খেলা মজিদকে অর্ধশতক বঞ্চিত করেন শেখ মেহেদী। অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৪৪ রান করে আউট হন। তাকে সাজঘরে ফেরান মোস্তাফিজ। দুই ওভার পর জাকের আলি অনিককেও শিকার করেন কার্টার মাস্টার। দলীয় ১৭২ রানে ৮ উইকেট হারায় মধ্যাঞ্চল। তারপর বিধ্বংসী ইনিংস খেলে দলকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দেন আবু হায়দার রনি। ২৭ বলে ৫৪ রান করেন তিনি।
দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে বল হাতে মোস্তাফিজ ১০ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন। আর মেহেদী ৩ উইকেট নেন। জবাবে বেশ ধীরগতিতেই শুরু করে দক্ষিণাঞ্চল। ৩৯ বলে ২৪ রান করে বিদায় নেন ওপেনার এনামুল হক বিজয়। ২৬ বলে ৭ রান করেন সাজঘরে ফেরেন মাইশুকুর রহমান। আরেক ওপেনার পিনাক ঘোষ ধীরগতিতে অর্ধশতক হাঁকান। ৭৯ বলে ৫৪ রান করে তিনি শিকার হন হাসান মুরাদের বলে। অর্ধশতক হাঁকান হৃদয়। তবে জাকির হাসান বিদায় নেন ৪৯ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলে। জয়ের পথেই ছিল দক্ষিণাঞ্চল। তবে নেমেই দ্রুত রান তুলে সমীকরণ আরো সহজ করে দেন নাহিদুল ইসলাম। ১৫ বলে ২২ রানের ক্যামিও দেখিয়ে তিনি বিদায় নিলেও পথ হারায়নি দক্ষিণাঞ্চল। ৭৮ বলে ৬৫ রানে হার না মানা ইনিংস খেলে দক্ষিণাঞ্চলের জয় নিশ্চিত করেন হৃদয়।
এদিকে পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে ম্যাচ জমিয়ে তুলেও হেরে যায় বিসিবি উত্তরাঞ্চল। সিলেটে টস হেরে আগে ব্যাট করে উত্তরাঞ্চল। পূর্বাঞ্চলের বোলারদের আক্রমণে ২৫ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে উত্তরাঞ্চল। রুবেল হোসেন প্রথম স্পেলে ৬ ওভারে ১টি মেডেনসহ ১৮ রান খরচ করে নাঈম ইসলামকে বোল্ড করেন। এছাড়া বাকি দুইটি উইকেট নেন স্পিনার নাঈম হাসান ও তানভীর ইসলাম। পরে দলকে সামাল দেন মার্শাল আইয়ুব ও মাহমুদউল্লাহ। তার সঙ্গে জুটি গড়ার পথে অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। ৭০ বলে ৫০ রান স্পর্শ করেন তিনি। তার শতকের স্বপ্নভঙ্গ হয় রানআউট হলে। এরপর হাফসেঞ্চুরি করেন মার্শাল। কিন্তু তিনি ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হয়। ৫৪ রানে সাজঘরে ফেরেন উত্তরাঞ্চলের অধিনায়ক। তাকে আউট করেন তানভীর ইসলাম। দলীয় ১৮৭ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে উত্তরাঞ্চল। তারা নির্ধারিত ৫০ ওভারের ১ বল বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায়। নাঈম বল হাতে নেন তিনটি উইকেট শিকার করেন।
জবাবে ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলের পক্ষে ইনিংস উদ্বোধন করতে নামেন তামিম ও প্রীতম কুমার। রানের খাতা খোলার আগেই প্রীতমকে বোল্ড করেন শফিউল ইসলাম। দ্বিতীয় উইকেটে ৫৩ রানের জুটি গড়েন তামিম ও ইমরুল কায়েস। এই জুটি ভাঙেন মাহমুদউল্লাহ।
তার দুর্দান্ত বল খেলতে পুরোপুরি পরাস্ত হন তামিম। ফলে ভেঙে যায় লেগ স্টাম্প। তামিম ৩৮ বলে ৩ চার ও ১টি ছক্কায় ৩৫ রান করেন। তৃতীয় উইকেটে ৫০ রানের জুটি গড়েন ইমরুল ও আফিফ হোসেন ধ্রæব। ৪৭ বলে ২৬ রান করে আফিফ শিকার হন শফিকুল ইসলামের। ২৫ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলার ইমরুলের সঙ্গে ৫৫ রানের জুটি গড়েন শাহাদাত হোসেন দীপু। সতীর্থরা আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকলেও এক প্রান্ত আগলে খেলেন ইমরুল। তাকে ব্যক্তিগত ৭১ রানে আউট করেন মাহমুদউল্লাহ। তবে আলাউদ্দিন বাবু ও সোহরাওয়ার্দী শুভর ব্যাটে ভর করে ১২.১ ওভার বাকি রেখেই ৪ উইকেটের জয় পায় পূর্বাঞ্চল। উত্তরাঞ্চলের হয়ে বল হাতে ৯.৫ ওভারে ৫৬ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন মাহমুদউল্লাহ।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।