নির্বাচনী আইন প্রণয়নসহ ৫ দফা প্রস্তাব এনপিপির

আগের সংবাদ

বদলে গেছে ‘প্রাচ্যের ড্যান্ডি’

পরের সংবাদ

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন > বাড়তি সুবিধা পাইনি : আইভী; হয়রানি করছে পুলিশ : তৈমূর

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

অনতু রেজা, নারায়ণগঞ্জ থেকে : নির্বাচনী প্রচারণার আর মাত্র ১টি দিনই পাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ইতোমধ্যে মেয়র প্রার্থীরা তাদের বড় ধরনের শোডাউন শেষ করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার কয়েকজন কাউন্সিলর শোডাউন করেছেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভী এবং স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা তৈমূর আলম খন্দকার গণসংযোগ করেছেন। আইভী সকালে নিজ এলাকা দেওভোগে ১৬ নং ওয়ার্ডে গণসংযোগ চালান এবং ১২ নং ওয়ার্ডে শহরের কিল্লারপুর এলাকায় প্রচারণা চালান তৈমূর। গণসংযোগকালে আইভী বলেন, প্রশাসন কখনো আমার হাতের মুঠোয় ছিল না। নেয়ার চেষ্টাও করিনি। অন্যদিকে তৈমূর আলম অভিযোগ করেছেন, তার নির্বাচনী এজেন্ট ও যারা তার সমর্থনে কাজ করেন তাদের বাড়ি বাড়ি পুলিশ গিয়ে হয়রানি করছে। গতকাল সকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকায় ১৬ নং ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী। তৈমুরের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি জানি না, কাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের নাম বলুক। আমি একজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানি, যাকে হেফাজতের নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আর কাকে ধরেছে? কী করেছে? সেটি আমি জানি না। জানার ব্যাপারও না।
তিনি বলেন, প্রশাসন কখনো আমার হাতের মুঠোয় ছিল না, নেয়ার চেষ্টাও করিনি। আমি সবসময় জনগণের দোড়গোড়ায় যাওয়ার চেষ্টা করেছি। সরকারি দলের প্রার্থী হিসেবে বাড়তি সুবিধা পাইনি, নেয়ার চেষ্টাও করি না। তিনি বলেন, জনগণ যেহেতু আমার পাশে আমি কেন বাড়তি সুবিধা নিতে যাবো।
আইভী বলেন, আমি তো জনবিচ্ছিন্ন কেউ না, কেউ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করলে সেটি নিশ্চয় প্রশাসন দেখবে। আমার তো ওইটা দেখার সময় নেই। আমার জনগণের কাছে যেতে হবে, জনতার কাছে ভোট চাইতে হবে। যদি কোনো সমস্যা হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেখবে।
উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটারদের ভোট দিতে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে আইভী বলেন, বিগত দুটি সিটি নির্বাচন ও পৌরসভা নির্বাচনে টানটান উত্তেজনা ছিল। কিন্তু রাত শেষে সকালে ভোটাররা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিয়েছেন। পরিবেশ সুন্দর ছিল। তিনি প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনের পরিবেশ যেন সুন্দর থাকে সেই ব্যবস্থা যেন তারা করেন।
তিনি বলেন, নতুন প্রজন্ম মনে করেন, আমার সততা ও ইমানের সঙ্গে আমি দলের একজনকর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। একই সঙ্গে দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে নারায়ণগঞ্জবাসীর সেবা করেছি। নতুন ভোটাররা এগুলো পছন্দ করেন। আমি পরিষ্কার, স্বচ্ছ কথা বলি। কখনো মিথ্যার আশ্রয় নেই না। তিনি বলেন, শহরে যদি কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে সেটি দেখভালের

দায়িত্ব প্রশাসনের। আমি কোনো সহিংসতার সঙ্গে জড়িত না। আমি কাউকে বলিও নাই, ওকে ধরেন। আমি চাই, আমার ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে যেতে পারেন। কোনো সন্ত্রাসী যেন ঝামেলা পাকাতে না পারে, প্রশাসনকে সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করে আইভী বলেন, নারায়ণগঞ্জে নৌকার গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তারা নৌকায় ভোট দেবেন এবং মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন তারা কাকে ভোট দেবেন।
অন্যদিকে, গণসংযোগকালে তৈমূর অভিযোগ করেন, তার নির্বাচনী এজেন্ট ও যারা তার সমর্থনে কাজ করেন তাদের বাড়ি বাড়ি পুলিশ গিয়ে হয়রানি করছে। গত বুধবার রাতে ১০/১৫ জন পুলিশ তার বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা এমনিতেই বিরোধী দলের প্রার্থী, বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা তো আছেই। এখনো গায়েবি মামলার হয়রানি কাটেনি।
সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, সরকারি দলের প্রার্থীর হয়ে তার দলের নেতাকর্মী গ্রেপ্তার ও হয়রানি বন্ধ করা না হলে সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ নষ্ট হবে। তিনি অভিযোগ করেন, গত কয়েকদিনে জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়কসহ ১৭ জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজাখুঁজি করলে মানুষের মানসিক অবস্থা কী দাঁড়ায়?
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও পুলিশ সুপারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে হয়রানি বন্ধ করুন। ভোটের উৎসবমুখর পরিবেশ নষ্ট করবেন না, ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করবেন না।
নির্বাচনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও বিদেশি দূতাবাসের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, বিদেশি দূতাবাসে যারা আছেন, তাদের প্রতি অনুরোধ করব, আপনারা নির্বাচনের দিন মাঠে থাকেন। দেশি-বিদেশি মিডিয়ার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেন। পুলিশকে জিজ্ঞাসা করেন, কেন তার দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনার পুলিশ হয়রানি করছে, ১৬ তারিখে ভোটের পর আইন যা বলে, আপনি তা করবেন। কিন্তু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হতে দেন। সুষ্ঠুভাবে যে নির্বাচন হচ্ছিল সেটা বাধাগ্রস্ত হতে দিবেন না।
নগরবাসীকে উদ্দেশ করে তৈমূর বলেন, আপনারা ভোটকেন্দ্রে আসুন, ভোট দিন। নতুন ইভিএম পদ্ধতিটাকে জানুন। জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আগামী ১৬ জানুয়ারি জনগণ ভোট দেবে, জনগণের রায়ে তিনি জয়ী হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়