নির্বাচনী আইন প্রণয়নসহ ৫ দফা প্রস্তাব এনপিপির

আগের সংবাদ

বদলে গেছে ‘প্রাচ্যের ড্যান্ডি’

পরের সংবাদ

করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে রাঙ্গামাটিতে জরুরি সভা : অর্ধেক পর্যটক ও মাস্ক নিশ্চিত করার নির্দেশ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নন্দন দেবনাথ, রাঙ্গামাটি থেকে : স্বাস্থ্য বিভাগ কর্র্তৃক রাঙ্গামাটিকে রেড জোন ঘোষণা করায় করোনা সংক্রমণ রোধে রাঙ্গামাটির জন্য বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের মোবাইল টিম কার্যক্রম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। রাত ৮টার মধ্যে সব দোকান-পাট বন্ধ, পর্যটন স্পটগুলোতে ধারণক্ষমতার অর্ধেক সংখ্যক পর্যটক ও মাস্ক নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে রাঙ্গামাটিকে করোনার রেড জোন ঘোষণা করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন মহল। গত বুধবার জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, শুধু একজনই ভর্তি আছেন সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে। রাঙ্গামাটি জেলা করোনা রেড জোন ঘোষণা করায় আতঙ্ক বেড়েছে অনেকের মধ্যে।
রেড জোনে থাকা রাঙ্গামাটি জেলার করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয় নির্ধারণে জেলা করোনা প্রতিরোধবিষয়ক কমিটির উদ্যোগে গতকাল জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জরুরি সভায় বক্তব্য রাখেন- রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মামুন, রাঙ্গামাটি জেলা পুলিশ সুপার মীর মোহাম্মদ মোদদাছছের হোসেন, পৌরসভা মেয়র মো. আকবর হোসেন চৌধুরী, জেলা সিভিল সার্জন ডা. বিপাশ খীসা প্রমুখ।
গত ‘নভেম্বর মাসে রোগীর সংখ্যা ছিল ৮ জন। ডিসেম্বরে ২৭ জন এবং গতকাল পর্যন্ত রাঙ্গামাটি জেলায় এই সংখ্যা ২৪ জন। এটা শুধু পর্যটকদের আসার কারণে হয়েছে বলব না। এখানকার অনেক লোক বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে যায়। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে লোকও আসে। তবে সীমান্তবর্তী এলাকা নিয়ে আমাদের বেশি ভীত-সন্ত্রস্ত হওয়ার কোনো প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না’। করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে নিজেদের সক্ষমতা উল্লেখ করে সিভিল সার্জন বলেন, ‘মন্ত্রিপরিষদ থেকে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেগুলোর ব্যাপারে ইতোমধ্যে আমরা সার্কুলার ইস্যু করেছি। আমাদের কোভিড ইউনিট প্রস্তুত আছে। সেখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই, পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী ও ওষুধপত্রসহ প্রয়োজনীয় লজিস্টিকও আছে’।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, উচ্চঝুঁকি থাকায় ঢাকা ও রাঙ্গামাটি জেলা সংক্রমণের রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া মধ্যম ঝুঁকির তালিকায় ৬ জেলাকে ‘হলুদ জোন’

এবং কম ঝুঁকির ৫৪ জেলাকে সবুজ জোন বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ফের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেখানে সংক্রমণের উচ্চঝুঁকি, মধ্যম ঝুঁকি ও কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করা হয়। সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৪৫ জনের। এর মধ্যে তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৬.৬৭%।
গত বুধবার নিজের কার্যালয়ে সিভিল সার্জন বলেন, ‘রোগী শনাক্তের হার ১০ থেকে ১৯ শতাংশ হলেই সেখানে রেড জোন ঘোষণা করা হচ্ছে। তার ভিত্তি করেই রাঙ্গামাটিকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে। গত সপ্তাহে আমাদের রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৮ জন। সেই হিসেবে আমি মনে করি যে সংখ্যাটা খুব একটা বেশি নয়। শুধু এখানে আমাদের পরীক্ষা সংখ্যা কম হওয়াতে এই পার্সেন্টিজ বেড়ে গেছে’।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, করোনা রেড জোন ঘোষণা করার সময় এখনো হয়নি। তবে সরকার হয়তো বা ঝুঁকি মনে করেছেন তাই রেড জোন ঘোষণা করেছেন। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক ১১ বিধিনিষেধ দাপ্তরিক আদেশ পেয়েছি। আজ থেকে জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা করোনা বিধিনিষেধ জনগণকে সচেতন করতে মাঠে থাকবে। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিধিনিষেধ না মানলে প্রয়োজনে জেল-জরিমানা করা হবে। রাঙ্গামাটিবাসীকে সরকারের বেঁধে দেয়া ১১ বিধিনিষেধ মেনে চলতে আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক। তিনি আরো বলেন, সবাই মাস্ক ব্যবহার করবেন এবং রাত ৮টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রাখার পরামর্শ দেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে বনরুপা কাঁচাবাজার, রির্জাভ বাজার, তবলছড়ি ও কলেজগেট এলাকায় করোনা সচেতনতায় জনগণের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, পুলিশ সুপার মীর মোদদাছছের হোসেন। এ সময় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং বনরুপা বাজার, তবলছড়ি বাজার, রির্জাভ বাজার ও কলেজগেট ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়