চট্টগ্রামে সৈকতে শৃঙ্খলা ফেরাতে কমিটি

আগের সংবাদ

স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই কোথাও : বাসে গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন > ঢিলেঢালা অভিযানে ১১ জনকে জরিমানা

পরের সংবাদ

হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর খবর নিয়ে ধোঁয়াশা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব ও বিএনপির সাবেক নেতা আবুল হারিছ চৌধুরী লন্ডনের একটি হাসপাতালে করোনায় মারা গেছেন। হারিছ চৌধুরীর চাচাত ভাই সিলেট জেলা বিএনপির সহসভাপতি আশিক চৌধুরীর দেয়া এমন তথ্যে বিএনপিতে চলছে তোলপাড়। হারিছ চৌধুরী কবে কোথায় মারা গেছেন, কোথায় দাফন হয়েছে; তা নিয়ে দেখা দিয়েছে ধোঁয়াশা। এ বিষয়ে সঠিক তথ্য দিতে পারছেন না বিএনপির কেউই। দলটির কেন্দ্রীয় নেতারাও হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন কৌশলে।
হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর বিষয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে বিএনপি চুপ রয়েছে। সাধারণত দলের নেতাদের মৃত্যুতে শোক জানানো হলেও তার ঘটনায় এ ধরনের কোনো বিবৃতি বা বক্তব্য আসেনি। দলীয় সূত্রের দাবি, তার প্রকৃত অবস্থান সম্পর্কে বহু বছর ধরে নেতারা অন্ধকারে ছিলেন। যে কারণে মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ হয়নি।
জানতে চাইলে গতকাল বুধবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.

খন্দকার মোশাররফ হোসেন ভোরের কাগজকে বলেন, আমি নিজেও এই বিষয়ে নিশ্চিত না। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয়েছে দেখেছি। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, খবরটি সত্যি কিনা জানি না। তবে সিলেটের স্থানীয় নেতারা সঠিকটা বলতে পারবেন। সেলিমা রহমান বলেন, আমিও বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করেছি। দলের কেউই এ বিষয়ে নিশ্চিত কিছুই বলতে পারছেন না। সিলেট বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাখায়াত হোসেন জীবন বলেন, খবরটি আমি ৪ মাস আগেই শুনেছিলাম। তখন গুজব মনে করে উড়িয়ে দিয়েছিলাম। তবে আভাস যা পাচ্ছি মনে হচ্ছে, সত্যি কোনো অঘটন ঘটেছে। হারিছ চৌধুরী লন্ডনে নাকি, বাংলাদেশে মারা গেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশে নয় ঘটনা ঘটেছে লন্ডনে।
গত বছর আগস্টে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থও হন হারিছ চৌধুরী। তবে ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ায় আবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। তিনি আগে থেকেই ব্লাড ক্যান্সার ও অন্যান্য জটিলতায় ভুগছিলেন। হারিছ চৌধুরীর চাচাত ভাই সিলেট জেলা বিএনপির সহসভাপতি আশিক চৌধুরী এ তথ্য দেন। তার মৃত্যু হয় প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে। পরিবারের সদস্যরা সংবাদটি এতদিন গোপন রেখেছিলেন। গত মঙ্গলবার রাতে আশিক চৌধুরী ফেসবুকে ইঙ্গিতপূর্ণ একটি স্ট্যাটাস দিলে হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর বিষয়টি চাউর হয়ে যায়। ফেসবুকে স্ট্যাটাসে লেখা ছিল ‘ভাই বড় ধন, রক্তের বাঁধন’। হারিছের একটি ছবি যুক্ত করে আশিক এ স্ট্যাটাস দেন। স্ট্যাটাসের নিচে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ লিখে কমেন্ট দিতে থাকেন।
অন্যদিকে, হারিছ চৌধুরী অন্তত তিন মাস আগে ঢাকায় মারা যান বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল কাহের শামীম। সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবদুল কাহের বলেন, এটা তো অন্তত তিন মাস আগের কথা। উনি মারা গেছেন ঢাকায়। পারিবারিকভাবে এটা জানানো হয়নি। হারিছ চৌধুরীকে ঢাকাতেই দাফন করা হয় বলে জানান তিনি। তবে কোথায় দাফন করা হয় তা তিনি বলতে পারেননি। সূত্র জানায়, হারিছ চৌধুরী লেবাস পাল্টে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। মৃত্যুর সময় তার কন্যা লন্ডন থেকে ঢাকায় এসেছিলেন।
হারিছ চৌধুরীর বাড়ি সিলেট জেলার কানাইঘাটের দিঘিরপাড় পূর্ব ইউনিয়নের দর্পনগর গ্রামে। তার মৃত্যু ও দাফন প্রসঙ্গে দিঘিরপাড় পূর্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ সভাপতি আলী হোসেন কাজল বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলেন, হারিছ চৌধুরী মারা গেছেন ঢাকায়। মোহাম্মদপুর এলাকার আশপাশে তার দাফন হয়েছে। মারা যাওয়ার পর বেনামে এনাউন্স হয়েছে ওই এলাকায়। উনি তো নাম পরিবর্তন কইরা হাসপাতালে চিকিৎসাও নিয়েছিলেন।
২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলাসহ একাধিক মামলার অভিযুক্ত আসামি ছিলেন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের প্রভাবশালী নেতা সিলেটের হারিছ চৌধুরী। প্রায় ১৪ বছর ধরে তিনি বিদেশে গা ঢাকা দিয়ে আছেন বলে জানা যায়। শুধু তাই নয়, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার চার্জশিটেও অভিযুক্ত আসামি হারিছ চৌধুরীকে লাপাত্তা দেখানো হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়