চট্টগ্রামে সৈকতে শৃঙ্খলা ফেরাতে কমিটি

আগের সংবাদ

স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই কোথাও : বাসে গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন > ঢিলেঢালা অভিযানে ১১ জনকে জরিমানা

পরের সংবাদ

সরকারি কোম্পানির উল্টো দৌড়ে কমল সূচক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ৭টি, প্রকৌশল খাতের ৪টি, খাদ্য এবং বিবিধ খাতে দুটি করে, ব্র্যাংক, আর্থিক ও টেলিকমিউনিকেশন খাতের একটি করে কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। এর প্রতিটিই দর হারিয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি দর হারিয়ে দিনের সর্বনি¤œ দর হারানোর প্রান্তসীমা ছুঁয়েছে। দুই দিন অস্বাভাবিক উত্থানের পর সরকারি খাতের কোম্পানিগুলোর দাপট থামল। আগের দিন সবচেয়ে বেশি দর বাড়ার তালিকায় যেখানে এই কোম্পানিগুলোর প্রাধান্য ছিল, সেখানে পরের দিন দরপতনের শীর্ষ তালিকায় দেখা গেছে কোম্পানিগুলোকে।
সপ্তাহের চতুর্থ র্কাযদিবস গতকাল বুধবার বহুজাতিক বড় মূলধনি কোম্পানি রবির শেয়ারদরে উত্থানে সূচকে ৪৩ পয়েন্ট যোগ হলেও সার্বিকভাবে সূচক কমল ৫৩ পয়েন্ট, যেখানে আগের দিন বেড়েছিল ৫৪ পয়েন্ট। সূচক কমিয়েছে যেসব কোম্পানির, তার শীর্ষ ১০টির মধ্যে ৬টিই সরকারি খাতের, যেগুলোর দর গত কয়েক দিন ধরেই টানা বাড়ছিল। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ৭টি, প্রকৌশল খাতের ৪টি, খাদ্য এবং বিবিধ খাতে দুটি করে, ব্র্যাংক, আর্থিক ও টেলিকমিউনিকেশন খাতের একটি করে কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। এর প্রতিটিই দর হারিয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি দর হারিয়ে দিনের সর্বনি¤œ দর হারানোর প্রান্তসীমা ছুঁয়েছে। গত দুই দিনে ১১৫ পয়েন্ট সূচক বেড়ে ৭ ডিসেম্বরের পর প্রথমবারের মতো ৭ হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়ে গেলেও সেটি আবার এই ধাপের নিচে নেমে গেছে। কমেছে লেনদেনও। আগের দিন ২ হাজার কোটি টাকার বেশি হাতবদল হলেও গতকাল দেড় হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে কোনো রকমে। টানা প্রায় চার মাসের সংশোধনের পর চলতি বছরের শুরুতেই উত্থানের ইঙ্গিত দিয়ে আসছে। এই সময়ে নয় দিনের লেনদেনে দুই দিন কমেছে সূচক। বাকি সাত দিনই বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনার আগ্রহে বেড়েছে সূচক।
দিন শেষে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে মাত্র ৮৮টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। গত মঙ্গলবার বেড়েছিল ১৮৯টি কোম্পানির। বিপরীতে দর কমেছে ২৪৩টি কোম্পানির। লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৯৭৬ কোটি ৮৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকা।
সূচক পতনে প্রধান ভূমিকায় ছিল বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি পাওয়ার গ্রিড। কোম্পানিটির ৬.৩৭ শতাংশ দরপতনের সূচক কমেছে ৯.৬ পয়েন্ট। এই তালিকায় শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে সরকারি কোম্পানি ছিল আরো ৫টির এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবির শেয়ার দর ২.৮৩ শতাংশ কমায় সূচক ৮.৫৯ পয়েন্ট, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির দর ৬.০২ শতাংশ কমায় সূচক ৬.৫৮ পয়েন্ট, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের দর ৯.৯৮ শতাংশ কমায় সূচক ৫.৪১ পয়েন্ট, তিতাস গ্যাসের দর ৩.৬৩ শতাংশ কমায় সূচক ৪.৯৭ পয়েন্ট এবং ডেসকোর দর ৭.৬৯ শতাংশ কমায় সূচক কমেছে ৩.৯৯ পয়েন্ট।
সূচক যত কমেছে তার ৬০ শতাংশের বেশি কমিয়েছে সরকারি খাতের ৬টি কোম্পানি। অন্যান্য কোম্পানির মধ্যে লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট ৯.০৭ পয়েন্ট, বেক্সিমকো ৭.০৯, ইউনাইটেড পাওয়ার ৬.১৫ পয়েন্ট এবং বেক্সিমকো ফার্মা ৪.৩৬ পয়েন্ট সূচক কমিয়েছে। অর্থাৎ এই ১০টি কোম্পানির কারণেই সূচক কমেছে ৬৫.৭১ পয়েন্ট, যার মধ্যে সরকারি ৬ কোম্পানি কমিয়েছে ৩৫.০৫ পয়েন্ট। বিপরীতে কেবল রবি সূচকে যোগ করেছে ৪৩.৮৪ পয়েন্ট। কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৭.৮৫ শতাংশ। গ্রামীণ ফোনের দর ১.০৫ শতাংশ বাড়ার কারণেও সূচকে যোগ হয়েছে ১৩.৯৪ পয়েন্ট। আর এ কে সিরামিকস, বিকন ফার্মা, এসআইবিএল, ফরচুর সুজ, ইবিএল, লিনডে বিডি, আল আরাফাহ ব্যাংক, ও লাভেলো আইসক্রিমও পয়েন্ট যোগ করেছে সূচকে।
সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে লাভেলো আইসক্রিমের দর ৯.৯৫ শতাংশ। কোম্পানিটির দর ৪৫ টাকা ২০ পয়সা দর থেকে পৌঁছেছে ৪৯ টাকা ৭০ পয়সায়। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা তাল্লু স্পিনিংয়ের দর বেড়েছে ৯.৯১ শতাংশ। ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকার ১১ লাখ ৬ হাজার ৮১৬টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে। দর বৃদ্ধিতে তৃতীয় স্থানে ছিল আর এ কে সিরামিক, যার দর বেড়েছে ৯.৮২ শতাংশ। আট শতাংশের বেশি দর বেড়েছে এএমসিএল (প্রাণ) এর। শেয়ার দর ৩০৯ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ৮.৭২ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৩৩৬ টাকা ৩০ পয়সা। এছাড়া রবির দর ৭.৮৫ শতাংশ, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের দর ৭.৭২ শতাংশ, মিথুন নিটিংয়ের দর ৭.৬৩ শতাংশ, মুন্নু অ্যাগ্রোর দর ৭.৪৯ শতাংশ সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের দর ৬.৫০ শতাংশ বেড়েছে।
আরো ২টি কোম্পানির দর ৫ শতাংশের বেশি, ২টির দর ৪ শতাংশের বেশি, ৬টির দর ৩ শতাংশের বেশি, ১২টির দর ২ শতাংশের বেশি বেড়েছে। আর দরপতনের শীর্ষে দশে আরো ছিল বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি, ন্যাশনাল হাউজিং এন্ড ফিন্যান্স, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, এলটাস বাংলাদেশ, পেনিনসুলা, ইনফরমেশন সার্ভিসেস, ডেফোডেল কম্পিউটার ও কেডিএস এক্সেসরিজ ছিল দরপতনের শীর্ষ তালিকায়।
লেনদেনে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে ছিল ফরচুন সুজ। ১০১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা লেনদেনে হাতবদল হয়েছে ৮২ লাখ ৬২ হাজার ৪৮১টি শেয়ার। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৮ কোটি ১৯ লাখ টাকার। শেয়ার হাতবদল হয়েছে ৬৫ লাখ ২৫ হাজার ৭১৯টি শেয়ার। তৃতীয় অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। পাওয়ার গ্রিডের ৭৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, আরএকে সিরামিকের ৬৮ কোটি ২৭ লাখ টাকা। এছাড়া তিতাস গ্যাসে লেনদেন হয়েছে ৫৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা, লেনদেন হয়েছে ১ কোটি ১৩ লাখ ২৭ হাজার ৯৪৩টি শেয়ার। রবির শেয়ার ৫৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা, ফারইস্ট লাইফের ৪১ কোটি ৪১ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। এছাড়া লেনদেনে এগিয়ে থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে ছিল বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল, বসুন্ধরা পেপার মিলস ও লাফার্জ হোলসিম।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়