চট্টগ্রামে সৈকতে শৃঙ্খলা ফেরাতে কমিটি

আগের সংবাদ

স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই কোথাও : বাসে গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন > ঢিলেঢালা অভিযানে ১১ জনকে জরিমানা

পরের সংবাদ

সখীপুরে বনের জমিতে চলছে ভবন নির্মাণ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সাইফুর রহমান ফারুক, টাঙ্গাইল থেকে : জেলার সখীপুরে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে বনের জমি দখল করে অবৈধভাবে বিক্রি এবং ভবন নির্মাণ করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এ নিয়ে এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার বাঁশতৈল রেঞ্জের বংশীনগর বিটের তক্তারচালা বাজারের ঢাকা-সখীপুর সড়ক ঘেঁষে নির্মিত হচ্ছে ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এরপরও দেখে না দেখার ভান করছেন বন কর্মকর্তারা।
জানা যায়, তক্তারচালা মৌজার ২নং খতিয়ানের ৩৮৮ দাগের ২০ একর ১৬ শতাংশ জমি বন বিভাগের রেকর্ডভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে কিছু জমি লিজ দেয়া হয়েছে। আবার অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি ওই লিজকৃত জমি অবৈধভাবে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। অপরদিকে কেউ কেউ বন বিভাগের জমি নিজেদের দাবি করে গড়ে তুলেছেন ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
এরই ধারাবাহিকতায় স্থানীয় বিট কর্মকর্তা মো. রুমিউজ্জামান এবং বংশীনগর বিট ও রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শাহআলমের যোগসাজশে স্থানীয় প্রভাবশালী ফরহাদ শিকদার বনের জমি দখলে নিয়ে ২১০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪০ ফুট প্রস্থ চারতলা ভবন নির্মাণকাজ শুরু করেছেন। এরই মধ্যে ভবনের তৃতীয় তলার কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এছাড়া ভবনের উত্তরপাশে ছয়টি এবং পশ্চিমপাশে তিনটি দোকান নির্মাণ করে তা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর পাশেই নির্মাণ করা হচ্ছে আরো ৪-৫টি ভবন। এর এ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিচ্ছেন স্থানীয় বিট ও রেঞ্জ কর্মকর্তা। সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, তক্তারচালা বাজারের ঢাকা-সখীপুর সড়ক ঘেঁষে চারতলা একটি ভবনের তিনতলার কাজ প্রায় শেষ। এদিকে সড়ক ঘেঁষে চারটি টিনের দোকানঘর, একটি একতলা পাকা ভবন এবং বন ঘেঁষে আরো পাঁচটি টিনের ঘর তোলা হয়েছে। ঘরগুলোতে ফার্নিচারের দোকানসহ অন্যান্য ব্যবসা চলছে। করোনার ভাইরাস সংক্রামণের সময় লকডাউনের সুযোগে রাতারাতি এসব নির্মাণ করা হয়েছে বলেছে জানিয়েয়েছেন স্থানীয়রা। চারতলা ভবনটি যৌথভাবে নির্মাণ করেছেন ফরহাদ সিকদার ও মো. আলতাফ হোসেন। তার পাশে একতলা ভবন নির্মাণ করেছেন আব্বাস খান।
এছাড়া টিনের ঘর নির্মাণ করেছেন মো. শরীফ মিয়া, আক্কাস আলী (খলিফা), চাঁন মিয়া, আলম মিয়া ও হালিম মিয়া। এরা সংঘবদ্ধ হয়ে বন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে বনের জমি দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে আসছে বলে জানান এলাকাবাসী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, এই জমিটি মূলত ২ নম্বর খাস খতিয়ানের ৩৮৮ নম্বর দাগের বন বিভাগের জমি। এই জমির পাশ কিছু রেকর্ডের জমি আছে কিন্তু তা ডিমারগেশন করা নেই। বন বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে এই এলাকার প্রভাবশালী একটি গ্রুপ বনের জমি দখল করে দোকানঘর ও বিল্ডিং নির্মাণ করছেন। জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকিয়া সুলতানা ভোরের কাগজকে বলেন, আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। ২১০১নং দাগের জমির জটিলতার বিষয়টি অবগত হয়েছি। দ্রুত পরিমাপ করে সরকারি জমিসহ ব্যক্তি মালিকানা জমির সীমানা চিহ্নিত করা হবে। সামাজিক বনায়ন ও বনের জমি রক্ষার্থে বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
ভবন মালিক ফরহাদ সিকদার বলেন, বনের জমি নয় রেকর্ড সম্পত্তি ক্রয় করে বিল্ডিং নির্মাণ করছি। জমির কাগজ দিয়ে ব্যাংক থেকে লোন তুলেছি। অযথা কিছু লোক মনে করে এটা বনের জমি। বংশীনগর বিট কর্মকতা রুমিউজ্জামানের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মো. জহিরুল হক বলেন, বন বিভাগের জমিতে কেউ কোনো স্থাপনা করতে পারবেন না। যদি কেউ করে থাকে তাহলে খোঁজ নিয়ে স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ এবং দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়