চট্টগ্রামে সৈকতে শৃঙ্খলা ফেরাতে কমিটি

আগের সংবাদ

স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই কোথাও : বাসে গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন > ঢিলেঢালা অভিযানে ১১ জনকে জরিমানা

পরের সংবাদ

র‌্যাবের অভিযানে ৭ আফ্রিকান গ্রেপ্তার : ভ্রমণ ভিসায় এসে প্রতারণা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ভ্রমণ ভিসায় বাংলাদেশে এসে বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল বিদেশিদের একটি চক্র। বিভিন্ন পরিচয়ে তারা অবস্থান করছিল দেশে। কেউ পরিচয় দিত গার্মেন্টস ব্যবসায় জড়িত, কেউ বা ফুটবল খেলোয়াড়।
গতকাল বুধবার রাজধানীর মিরপুর রূপনগর ও উত্তরার দক্ষিণখান এলাকার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে ৭ জন নাইজেরিয়ান নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কারওয়ানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন র?্যাব-৪ এর অধিনায়ক এডিশনাল ডিআইজি মোজাম্মেল হক।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ওডেজে ওবিন্না রিবেন (৪২), নটোম্বিকনা (৩৬), ইফুইন্নায়া ভিভান (৩১), সানডে ইজিম (৩২), চিনেডু নিয়াজি (৩৬), কোলিমন্স তালিকে (৩০), চিঢিম্মা ইলোফোর (২৬), নাহিদুল ইসলাম (৩০), সোনিয়া আক্তার (৩৩)। গ্রেপ্তার ৯ জনের মধ্যে ৬ জন নাইজেরিয়া, একজন দক্ষিণ আফ্রিকা এবং দুইজন বাংলাদেশের। র‌্যাবের অভিযানে তাদের কাছ থেকে ৮টি পাসপোর্ট, ৩১টি মোবাইল ফোনসেট, তিনটি ল্যাপটপ, একটি চেকবই, তিনটি পেনড্রাইভ ও নগদ ৯৫ হাজার ৮১৫ টাকা জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তার ৭ বিদেশির মধ্যে ৬ জনের ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করে বিদেশ থেকে পরবর্তী সময়ে গিফট পাঠানোর কথা বলে প্রতারণার সঙ্গে জড়িত থাকায় তাদের গ্রেপ্তারের পর এমনই সব তথ্য পায় র?্যাব। এ ছাড়াও গ্রেপ্তার ৭ বিদেশিসহ দুই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তারের পর আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে মোজাম্মেল হক বলেন, বিদেশি প্রতারক চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে অভিনব কায়দায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারীদের আইডি তৈরি করত। পরবর্তী সময়ে মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, ফেসবুক ইত্যাদির মাধ্যমে নিজেদের পশ্চিমা বিশ্বের উন্নত দেশের নাগরিক হিসেবে প্রকাশ করত। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরির পর দামি উপহার বাংলাদেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার জাল বিছাত তারা। এক পর্যায়ে বাংলাদেশের কাস্টমস অফিসার পরিচয় একজন নারী ভিকটিমকে ফোন দিয়ে বলত -একটি পার্সেল বিমানবন্দরে এসেছে, এটি ডেলিভারি নিতে হবে, মোটা অঙ্কের টাকা বিকাশে কিংবা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম্বারে পরিশোধ করতে হবে। আর পার্সেলে যেহেতু অতি মূল্যবান দ্রব্যসামগ্রী রয়েছে তাই কাস্টমস চার্জ একটু বেশি বলে ভিকটিমদের কাছে উপস্থাপন করা হয়। অনেকেই মূল্যবান পার্সেলের কথা শুনে প্রলুব্ধ হয়ে বিকাশ এবং ব্যাংক একাউন্টে টাকা পাঠিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছে।
আমাদের কাছেও অনেকে অভিযোগ করেছে। টাকা দেয়ার পর পরবর্তী সময়ে পার্সেলের বিষয়ে জানতে চাইলে পরবর্তী সময়ে ফোন দেয়ার পরও কেউ আর ফোন ধরে না। ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে ফোন কেটে দেয় তারা।
তিনি আরো বলেন, নাইজেরিয়ান নাগরিক ওডেজে ওবিন্না রিবেন ২০১৭ সালে বাংলাদেশে আসে। তার ভিসার মেয়াদ নেই। এর আগেও ২০২০ সালের র?্যাব-৪ এর একটি মামলায় পাসপোর্ট জব্দ করা রয়েছে। সে নিজেকে সবার কাছে একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী পরিচয় দিত কিন্তু প্রকৃতপক্ষে প্রতারণায় ছিল তার মূল পেশা। আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্রের মূল হোতা সে। গ্রেপ্তার এই চক্রের বিদেশি আরেক নাইজেরিয়ান কোলিমন্স ২০১৯ সালে বাংলাদেশে এলেও ২০২১ সালে তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়। অপর একজন নিজেকে ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে পরিচয় দিত। নিজেকে গার্মেন্টস ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পরিচয় দিত গ্রেপ্তার প্রতিটি বিদেশি। বিভিন্ন পরিচয় ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রতারণা।
র?্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রতারণার সঙ্গে বাংলাদেশের এক দম্পতি জড়িত রয়েছে। তাদেরও আমরা গ্রেপ্তার করেছি। গ্রেপ্তার নাহিদুল ও সোনিয়া দম্পতির সঙ্গে ২০১৮ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওডেজে ওবিন্না রিবেনের পরিচয় হয়। পরবর্তী সময়ে প্রতারণার কাজে সহায়তার জন্য ভিকটিমদের কাছ থেকে প্রতারিত টাকার ২৫ ভাগ এই দম্পতি পেত। ২০২১ সালে ৩৫ জন তাদের দ্বারা প্রতারিত হয়েছে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়