চট্টগ্রামে সৈকতে শৃঙ্খলা ফেরাতে কমিটি

আগের সংবাদ

স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই কোথাও : বাসে গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন > ঢিলেঢালা অভিযানে ১১ জনকে জরিমানা

পরের সংবাদ

নেশন্স কাপের শুরুতেই ধাক্কা খেল সালাহরা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : আফ্রিকা নেশন্স কাপে (আফকন) শুরুর ম্যাচেই ধাক্কা খেল মোহাম্মদ সালাহরা। গ্রুপ ‘ডি’র ম্যাচে গতকাল নাইজেরিয়ার বিপক্ষে তার দেশ মিসর হেরেছে ১-০ গোলের ব্যবধানে। ম্যাচের প্রথমার্ধেই দলের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে লেস্টার সিটির হয়ে খেলা কেলেচি ইহেয়ানাচো। অন্য ম্যাচে সিয়েরা লিওনের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেছে রিজাদ মাহরেজের আলজেরিয়া।
আগের দিন জয় দিয়ে এবারের আফ্রিকান নেশন্স কাপে যাত্রা শুরু করেছেন মোহাম্মদ সালাহর দুই লিভারপুল সতীর্থ- সেনেগালের সাদিও মানে ও গিনির নাবি কেইতা। শুধু তা-ই নয়, দলকে জয় এনে দেয়ার পাশাপাশি ম্যাচসেরাও হয়েছেন দুজন। কিন্তু সালাহর শুরুটা অত মধুর হলো না। এবারের আফ্রিকা নেশন্স কাপের অন্যতম শিরোপাপ্রত্যাশী ও টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সফল দল মিসর টুর্নামেন্ট শুরু করেছে পরাজয় দিয়ে। ১৮ বছর পর আফকনের গ্রুপ পর্বে মিসরকে প্রথম পরাজয়ের স্বাদ দিয়েছে নাইজেরিয়া।
এর আগে ক্যামেরুনের রোমদে আদজিয়া স্টেডিয়ামে গতকাল বল দখলে আধিপত্য ছিল মিসরের। কিন্তু শট নেয়ার ক্ষেত্রে নাইজেরিয়ার তুলনায় চারগুণ পিছিয়ে ছিল সালাহরা। ম্যাচে মিসর ৫৭ শতাংশ সময় বল দখলে রেখেছিল। আর ৪৩ শতাংশ সময় বল দখলে রাখা নাইজেরিয়া গোলের জন্য শট নেয় ১৫টি। সেখানে মাত্র ৪টি শট নেয় মিসর। সালাহদের ২টি শটের বিপরীতে নাইজেরিয়ার ৫টি শট ছিল লক্ষ্য বরাবর। যদিও সাফল্য আসে একটিতে। আর এই এক সাফল্যতেই সালাহদের বিপক্ষে জয় তুলে নেয় নাইজেরিয়ানরা। নাইজেরিয়ার হয়ে ম্যাচের ৩০তম মিনিটে গোল করেছেন লেস্টার সিটির স্ট্রাইকার কেলেচি ইহেয়ানাচো। এদিকে ম্যাচে গোটা ৯০ মিনিটই খেলেছেন সালাহ। কিন্তু পারফরম্যান্সটা ঠিক তার মতো হয়নি। বলে স্পর্শ করতে পেরেছেন মোটে ৩৫ বার, সব মিলিয়ে তিনি একবারই গোল বরাবর শট নিতে পেরেছেন। ড্রিবল করার চেষ্টা করেছেন দুবার। লিভারপুলে রাইট উইঙ্গার হিসেবে খেললেও মিসর দলে মূল স্ট্রাইকার হিসেবে খেলেছেন সালাহ। সবার ওপরে থাকার কারণে দলীয় খেলায় সেভাবে অংশ নিতে পারেননি। সালাহর সতীর্থরাও তাকে সেভাবে ম্যাচে সাহায্য করতে পারেননি গোল করার জন্য। মাঝমাঠের লড়াইয়েও ভালোভাবেই হেরেছে মিসর। আর্সেনালের মিডফিল্ডার মোহাম্মদ এলনেনি ও অ্যাস্টন ভিলার ত্রেজেগের সঙ্গে লড়াইয়ে পাস মার্ক নিয়েই উতরে গেছেন ইহেয়ানাচোর লেস্টার-সতীর্থ উইলফ্রায়েড এনদিদি ও রেঞ্জার্সের জো আরিবো। জয়সূচক গোলটাও এসেছে আরিবোর পাস থেকেই। এদিকে টুর্নামেন্টটা মিসর সাতবার জিতলেও মোহাম্মদ সালাহ একবারের জন্যও জেতেননি। সর্বশেষ মিসর আফকন জিতেছিল ২০১০ সালে, মিসরের হয়ে সালাহর অভিষেক হয়নি তখনো। নাইজেরিয়ার বিপক্ষে সালাহদের হার সেই স্বপ্নে বেশ ভালোভাবেই ধাক্কা দিল। টুর্নামেন্ট জেতার স্বপ্ন জিইয়ে রাখতে চাইলে আগামী শনিবার গিনি-বিসাউর বিপক্ষে জিততেই হবে মিসরকে। ওদিকে নিজেদের ম্যাচে গিনি-বিসাউ গোলশূন্য ড্র করেছে সুদানের বিপক্ষে।
এদিকে আফ্রিকা নেশন্স কাপের অন্য ম্যাচে সালাহদের মতো না হারলেও জেতেনি আরেক ফেভারিট দল, গতবারের চ্যাম্পিয়ন আলজেরিয়া। রিয়াদ মাহরেজদের দল গোলশূন্য ড্র করেছে সিয়েরা লিওনের বিপক্ষে। আফকনে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই ম্যাচসেরা হয়েছেন সিয়েরা লিওনের গোলরক্ষক মোহাম্মদ কামারা। সাত-সাতটা সেভ করেছেন, মাহরেজ-বেনরাহমাদের গোলমুখ খুলতে দেননি। ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে নিয়ে খুুশির অশ্রæ যেন বাঁধ মানছিল না কামারার। সিয়েরা লিওনের পয়েন্ট পাওয়ার আরেক নায়ক সেন্টারব্যাক স্টিভেন কলকার।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের পোড় খাওয়া সাবেক এ সেন্টারব্যাক ২০১২ সালে ইংল্যান্ডের হয়ে একটা ম্যাচ খেলে একটা গোল করলেও পরে আর সুযোগ পাননি। এখন সিয়েরা লিওনের ডাকে সাড়া দিয়ে খেলছেন আফকনে। দু-দুটি দুর্দান্ত ক্লিয়ারেন্স করে দলকে হারের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন। আজ রাতে আফ্রিকা নেশন্স কাপে ইথিওপিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামবে স্বাগতিক ক্যামেরুন।
এর আগে ২০২১ সালে জুন-জুলাই মাসে হওয়ার কথা ছিল আফ্রিকা নেশন্স কাপের ৩৩তম আসর। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারির কারণে ২০২০ সালে আয়োজন দেশ ক্যামেরুন সূচি পরিবর্তন করে ২০২২ সালকে বেছে নেয়। ৬৫ বছর আগে ১৯৫৭ সাল থেকে আফ্রিকার দেশগুলো নিয়ে প্রথমবার আফকন আয়োজিত হয়। আসরে সর্বোচ্চ সাতবার নেশন্স কাপটির শিরোপা জিতেছে মোহাম্মদ সালাহর দেশ মিসর। আসরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচবার শিরোপার স্বাদ পেয়েছে বর্তমান আসরের আয়োজক দেশ ক্যামেরুন। এছাড়া ঘানা চারবার ও নাইজেরিয়া জিতেছে তিনবার।
দুবার করে শিরোপা জিতেছে আইভোরি কোস্ট, আলজেরিয়া ও ডিআর কঙ্গো। একবার করে আফকনের শিরোপা জিতেছে জাম্বিয়া, তিউনিসিয়া, সুদান, ইথিওপিয়া, মরক্কো, দক্ষিণ আফ্রিকা ও কঙ্গো। এবারের আসরে ছয়টি গ্রুপে মোট ২৪টি দল অংশ নিয়েছে। তবে দলগুলোর মধ্যে হট ফেভারিটের তালিকায় আছে মিসর, নাইজেরিয়া, আলজেরিয়া, সেনেগাল ও ক্যামেরুন। তবে শেষ পর্যন্ত কারা পাবে ৩৩তম আসরের ট্রফি, সেটি জানা যাবে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারির ফাইনাল ম্যাচের পর।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়