চট্টগ্রামে সৈকতে শৃঙ্খলা ফেরাতে কমিটি

আগের সংবাদ

স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই কোথাও : বাসে গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন > ঢিলেঢালা অভিযানে ১১ জনকে জরিমানা

পরের সংবাদ

ড. মোস্তাফিজুর রহমান, সিপিডির সম্মানীয় ফেলো > বাজেটে ৫ ঝুঁকি মোকাবিলার প্রতিফলন থাকতে হবে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : করোনার তৃতীয় ধাক্কা চলে এসেছে। করোনার ক্ষতি কতদিনে কাটিয়ে ওঠা যাবে তা বলা মুশকিল। কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনীতির যে গতিবিধি, তা সন্তোষজনক; আমদানি-রপ্তানি আয়, এমনকি বেসরকারি খাতের অবস্থাও অনেক ভালো। তবে নতুন বছরে অর্থনীতির যে পাঁচটি ঝুঁকি রয়েছে, আগামী বাজেটে এগুলো মোকাবিলার প্রতিফলন থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান। ভোরের কাগজের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি আরো বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ

মোকাবিলারও উপায় থাকতে হবে এবারের বাজেটে।
এ অর্থনীতিবিদ বলেন, ২০২২ সালে অর্থনীতি কয়েকটি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এগুলো আগামী বাজেটে বিবেচনায় রাখতে হবে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। এ জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি রাখা প্রয়োজন, তা রাখতে হবে। তিনি বলেন, করোনা মহামারির সঙ্গে আমাদের হয়তো আরো কয়েক বছর থাকতে হতে পারে। এ জন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যবিধি ও স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ মাথায় রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত, মূল্যস্ফীতিকে বিবেচনায় রাখতে হবে। আমরা আমদানিকৃত মূল্যস্ফীতিও দেখছি আবার স্থানীয় মূল্যস্ফীতিও দেখছি। এজন্য সামাজিক সুরক্ষায় যে সমস্ত বরাদ্দ আছে সেগুলোকে বাজেটে আরো সুসংহত করতে হবে। তৃতীয়ত হচ্ছে, করোনা মহামারিতে শিক্ষা খাত অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেকে ঝরে পড়েছে। এজন্য শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে এবং ঝরে পড়া অর্থাৎ যারা স্কুল ছেড়ে চলে গেছে বা বাল্যবিয়ে হয়েছে তাদের জন্য বাজেটে আলাদা বরাদ্দ রাখতে হবে।
চতুর্থ হচ্ছে, চলমান মেগা প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করতে বাজেটে এদিকে নজর দিতে হবে। কারণ মেগাপ্রকল্পগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন হলে বেসরকারি খাতেরও গতি ফিরবে। ফলে অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। পঞ্চমত, আর্থিক খাতকে সচল রাখতে রাজস্ব বোর্ডেরও সংস্কার দরকার। বিশেষ করে ডিজিটাইজেশন করাসহ নানা পদক্ষেপ। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এনবিআরের কর আহরণ বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম। তাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। পাশাপাশি ট্যাক্সের আওতা বাড়ানোর জন্য আরো কাজ করতে হবে। মূল কথা, রাজস্ব আহরণে সরকারকে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার করতে হবে। যারা নিয়মিত আয়কর পরিশোধ করছেন তাদের ঘাড়ে আরো চাপানো যাবে না। আগামী বাজেটে এসব জায়গায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে এবং বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
এলডিসি থেকে উত্তরণে আগামী বাজেটে বরাদ্দের প্রয়োজন প্রসঙ্গে মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ উত্তরণের প্রভাব ৪টি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে পড়বে। এর ফলে বৈশ্বিক বাজারে অগ্রাধিকারমূলক প্রবেশগম্যতার বিনাশ ঘটবে, বিশেষ ও তারতম্যমূলক বাণিজ্য সুবিধার ক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে, ব্যবসাক্ষেত্রে বৈশ্বিক পর্যায়ের কঠোর মান নিশ্চিত করার বিষয়টি সামনে আসবে এবং অ-পারস্পরিক বাণিজ্য সুবিধা কমবে। তবে ইইউ বাজারে বাংলাদেশ ২০২৬ সালের পর আরো তিন বছর অর্থাৎ ২০২৯ সাল পর্যন্ত শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা ভোগ করতে পারবে। এ ছাড়া প্রস্তুতিকালে বাংলাদেশ এলডিসি হিসেবে যেসব সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আসছিল সেগুলো অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, এলডিসি থেকে গ্র্যাজুয়েশনের জন্য আমাদের মধ্যমেয়াদি কৌশল যেটা আছে সে কৌশল বাস্তবায়নের দিক থেকে এ বাজেটে তার প্রতিফলন থাকতে হবে। যেমন গ্র্যাজুয়েশনের ফলে মার্কেটে আমরা শুল্কমুক্ত সুবিধা পাব না। এজন্য আমাদের দক্ষতা বাড়াতে হবে, প্রযুক্তি বাড়াতে হবে। সুতরাং টেকনোলজি আপগ্রেডেশন ফান্ড আরো বাড়াতে হবে, দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তুলতে আরো বেশি বিনিয়োগ করতে হবে।
এলডিসি থেকে উত্তরণে সরকারের যেসব কমিটি গঠন করা হয়েছে তাদের সুপারিশের আলোকে বাজেটে বরাদ্দ থাকতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়