হাতিরঝিলের সড়ক বন্ধে রাজধানীতে তীব্র যানজট

আগের সংবাদ

বিশাল লক্ষ্যমাত্রার বাজেট প্রস্তুতি : সম্ভাব্য আকার ৬,৭৫,১৩৯ কোটি টাকা, আয় ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা

পরের সংবাদ

সুন্দর পরিবেশ চান আইভী-তৈমূর

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

অনতু রেজা, নারায়ণগঞ্জ থেকে : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের বাকি আর মাত্র চার দিন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে দুই মেয়র প্রার্থী তুমুল প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন, গণসংযোগ করছেন সিটির ২৭টি ওয়ার্ডে। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে শুনছেন দুঃখ-দুর্দশার কথা, আশ্বস্ত করছেন বিজয়ী হলে সিটির উন্নয়নে কী কী করবেন সেসব বিষয়ে।
নির্বাচনের প্রায় শেষ মুহূর্তে এসে আরো মনোযোগী হয়ে উঠেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। উন্নয়নের চলমান কাজ সমাপ্ত এবং নতুন প্রকল্পের কাজ সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে দিচ্ছেন নিশ্চয়তা। আইভী বলেছেন, আমি অবশ্যই চাইব নারায়ণগঞ্জের পরিবেশ সুন্দর থাকুক। প্রশাসন যেন নিরপেক্ষ থাকে, অ্যাক্টিভ

(সক্রিয়) থাকে। কিছুটা হতাশ স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপি নেতা এড. তৈমূর আলম খন্দকার। তিনি বলেন, ঝামেলা মোকাবিলা করেই আমি নির্বাচন করব। জনগণ আমাকে নিয়ে নির্বাচনে থাকবে। কারো পায়ে আমি হাঁটি নাকি? আমার গণভিত্তি আছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে শহরের ১২নং ওয়ার্ডের খানপুর এলাকায় পোলস্টার ক্লাবের সামনে থেকে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু করেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমার আস্থা সব সময় আমার জনগণ। তিনি (শামীম ওসমান) কীভাবে মাঠে থাকবেন, তিনি একজন সংসদ সদস্য। তারা মাঠে থাকলে আচরণবিধি লঙ্ঘন হবে। আমি আবারো গণমাধ্যমের কাছে বলি আমার আস্থা সব সময় জনগণের প্রতি, আমার নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি। এর বাইরে আর কিছু বলতে চাই না।
আইভী বলেন, যে কোনো প্রার্থীর ভেতরে শঙ্কা থাকে। আমি তার বাইরে কেউ নয়। আমি অবশ্যই চাইব নারায়ণগঞ্জের পরিবেশ সুন্দর থাকুক। প্রশাসন যেন নিরপেক্ষ থাকে, অ্যাক্টিভ থাকে। আমার ভোটাররা যেন নির্বিঘেœ ভোট দিতে যেতে পারে, সে ব্যবস্থা যেন করা হয়। মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে যায়। আশা করি এবারো সেই রকম পরিবেশ থাকবে।
তিনি বলেন, আমি প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত, তাই সঠিক জানি না। তবে আমরাই তো বলি সব ধরনের অস্রধারীদের গ্রেপ্তার করা হোক। শহরের মধ্যে যারা মাদক ব্যবসায়ী, যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে তাদের গ্রেপ্তার করা হোক। এটা সব প্রার্থীরই চাওয়া থাকে। তিনি (তৈমূর) বলেন পরিবেশটা সুন্দর থাকুক, আমিও বলি পরিবেশটা সুন্দর থাকুক। আমি চাই এমন কোনো ঘটনা যেন না ঘটে যার কারণে সমস্যা সৃষ্টি হয়। আইভী বলেন, আমার নেতাকর্মীরা আমার সঙ্গে আছে, তার নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে থেকেই ভোট চাচ্ছে। কোথায় কী হয়েছে আমার জানা নেই।
শামীম ওসমানের ব্যাপারে আইভী বলেন, আমি বলিনি তারা আমার সঙ্গে নেই। আমি সব সময় বলে এসেছি আমার সঙ্গে আমার জনতা আছে। আমার দল যেহেতু আমাকে নমিনেশন দিয়েছে তাহলে নিশ্চয়ই দল আমার পাশে আছে। দলের ভেতর থেকে কে আসবে কে আসবে না সেটা আমার দেখার বিষয় নয়, সেটা কেন্দ্রীয় নেতারা দেখবেন।
এদিকে, আইভীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা। গতকাল বেলা ১১টায় নগরীর ২নং রেলগেটে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জড়ো হয়ে জেলা ও বিভিন্ন উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা একত্রিত হয়ে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিভক্ত হয়ে আইভীর পক্ষে ভোট চান। পরে তারা বঙ্গবন্ধু সড়কে র‌্যালি করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- মুক্তিযোদ্ধা সফিকুল বাহার টিপু, বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন পাহাড়ী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান গনি। এ সময় তাদের সঙ্গে একাত্ততা ঘোষণা করে নৌকার পক্ষে ভোট চান নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত। এছাড়া নগরীতে ওয়ার্কার্স পার্টিসহ ১৪ দলের নেতাকর্মীরাও আইভীর পক্ষে প্রচারণা চালান।
অন্যদিকে, নগরীর ১২নং এবং বন্দরে ১৯ ওয়ার্ডে গণসংযোগ চালান নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার। এ সময় তিনি বলেন, আমাদের জীবনটাই ঝামেলা। এই ঝামেলা মোকাবিলা করেই আমি নির্বাচন করব। জনগণ আমাকে নিয়ে নির্বাচনে থাকবে। কারো পায়ে আমি হাঁটি নাকি? আমার গণভিত্তি আছে। নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা রয়েছে। খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজ, সামাজিক প্রতিষ্ঠান গড়ার আন্দোলনে সব সময় সম্পৃক্ত ছিলাম।
পুলিশি হয়রানির অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, তাদের (আওয়ামী লীগ) একটা অঙ্গ সংগঠনের কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে। তাদের বাড়িতে গিয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করতে বলে আসা হয়েছে। এ রকম সব জায়গায় পুলিশ যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, তারা দুজন (শামীম ওসমান ও সেলিনা হায়াৎ আইভী) একই দলের। তাদের বক্তব্যে পারস্পরিক যে বিভাজন এটা অত্যন্ত পরিষ্কার। জনমনে এটার একটা ভালো প্রভাব পড়েছে এবং সেটা আমাদের পক্ষে যাবে। কালকে এসপি অফিসে গিয়েছিলাম তাকে পাইনি। আজকে (মঙ্গলবার) গিয়ে বলব আমার কাছে আর কোনো বিকল্প নেই। প্রয়োজনে আপনার অফিসের সামনে বসে পড়ব। এখান থেকেই আমি আমার নির্বাচন পরিচালনা করব। তৈমূর বলেন, আমি শঙ্কিত হব না কেন। নেতাকর্মীদের বাড়িতে যখন পুলিশ হামলা করে। এজেন্টকে যখন পুলিশ ধরে নিয়ে যায় হেফাজতের মামলায়, তখন তো শঙ্কা সৃষ্টি হবেই। তিনি বলেন, আমরা মামলা খেয়ে খেয়ে এবং গ্রেপ্তার হয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেছি। এতদিন জনগণ প্রার্থী পায়নি আমরাও রাজি হইনি। এখন আমরা রাজি হয়েছি জনগণ মনের মতো প্রার্থী পেয়েছে। যে প্রার্থী সবসময় জনতার থাকবে।
তৈমূর বলেন, ভাই-বোন এক হয়ে গেলে ভালোই হতো। মিডিয়ার কল্যাণে এসব কথাবার্তা শুধু নারায়ণগঞ্জের মানুষ শোনে না, বিশ্বব্যাপী মানুষ শোনে। বাইরে কোথাও গেলেই নারায়ণগঞ্জের ব্যাপারে অনেক কথা উঠে যায়।
তিনি আরো বলেন, আমার সঙ্গে শুধু বিএনপি নয় সব দলের লোকেরা আছে। আমি দুই-তিন ধাপে এজেন্ট তৈরি করছি। নারায়ণগঞ্জের যারা নাগরিক, যারা ট্যাক্স দেয় তাদের ট্যাক্স বৃদ্ধি করা হয়েছে। তারা পানি পাচ্ছে না, শব্দদূষণ-বায়ুদূষণের শিকার। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতার জন্য জনগণ পরিবেশবান্ধব নগরী পাচ্ছে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়