হাতিরঝিলের সড়ক বন্ধে রাজধানীতে তীব্র যানজট

আগের সংবাদ

বিশাল লক্ষ্যমাত্রার বাজেট প্রস্তুতি : সম্ভাব্য আকার ৬,৭৫,১৩৯ কোটি টাকা, আয় ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা

পরের সংবাদ

সবাই রানে ফিরলেও ব্যর্থ তামিম

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ওয়ানডে ফরম্যাটে জমে উঠেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ। (বিসিএল)। গতকাল টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জয় তুলে নিয়েছে ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোন। বিসিবি নর্থ জোনকে ২৮ রানে হারিয়ে সবার আগে ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করেছে সাকিব-সৌম্যরা। এদিন সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে টস হেরে আগে ব্যাটিং করে ওয়ালটন। তারা নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৬২ রান। জবাবে ৯ উইকেট খুইয়ে ২৩৪ রানে গুটিয়ে যায় বিসিবি নর্থ। এর ফলে সবার আগে ফাইনালে এক পা দিয়ে রাখল চার দিনের টুর্নামেন্টে সদ্য চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলটি।
এছাড়া বিসিএল টুর্নামেন্টে সাকিব, মাহমুদউল্লাহ ও সৌম্যরা রান পেলেও তামিমের ব্যাট হাঁসছে না। সবাই রানে ফিরলেও ব্যর্থ তামিম। আসন্ন ঘরোয়া ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) আগে দেশের ক্রিকেটাররা বিসিএলে নিজেদের ঝালিয়ে নিচ্ছেন। ক্রিকেটপ্রেমীরা জানেন ব্যক্তিগত কারণে ছুটি নিয়েছিলেন সাকিব।
ফলে তাকে ছাড়া নিউজিল্যান্ড সফরে খেলছে টাইগাররা। যেহেতু সামনে বিপিএলসহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ব্যস্ত সূচি তাই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার নিজেকে ফিরে পেতে বিসিএলের ওয়ানডে ফরম্যাটে দুই ম্যাচে রান পেয়েছেন। প্রথম ম্যাচে ৫৮ বলে ২ চারে ৩৫ রান করেন সাকিব। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে ৩৬ বলে ৩৩ রান করেন। প্রথম ম্যাচে ১৩ করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে ৪০ রান করেন সৌম্য। গতকাল প্রথম ম্যাচ খেলে মাহমুদউল্লাহ করেন ৪৩ রান। কিন্তু ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলের জার্সি গায়ে ব্যাট হাতে জ¦লে উঠতে পারেনি তামিম। তিনি ২৭ বলে ৯ রান করেন। এমনকি টানা দুই ম্যাচে হেরে বিসিএল থেকে ছিটকে গেছে ইসলামী ব্যাংক।
প্রথম ম্যাচে ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোনের কাছে ২২ রানে ও দ্বিতীয় ম্যাচে বিসিবি সাউথ জোনের বিপক্ষে হেরেছে ৩ উইকেটে। গতকাল সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৯২ রান করে ইস্ট জোন। জবাবে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় ফরহাদ রেজার সাউথ জোন। এই জয়ে টুর্নামেন্টে টিকে থাকল সাউথ। শেষ ম্যাচে ওয়ালটন সেন্ট্রালের বিপক্ষে জয়-পরাজয়ের ওপর নির্ভর করবে তাদের ফাইনাল ভাগ্য। দুটি করে ম্যাচের পর সর্বোচ্চ ৪ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে আছে ওয়ালটন। এছাড়া সাউথ ও নর্থের পয়েন্ট সমান ২টি করে। রানরেটে এগিয়ে থেকে নর্থ দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। আর সাউথ তৃতীয়।
গতকাল ইস্ট জোনের দেয়া ১৯৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে সাউথ। সপ্তম উইকেটে ফরহাদ-মেহেদী হাসানের ৫০ রানের জুটি রক্ষা করে সাউথকে। স্কোর টাই হওয়ার পর ফরহাদ ফেরেন ১৫ বলে ১৬ করে। জয়ের নায়ক মেহেদী হাসান অপরাজিত ছিলেন ৫০ বলে ৩৭ রান করে। এছাড়া মায়শুকুর রহমান ২৭, জাকির ২৭, নাহিদুল ইসলাম ২৭ ক্রিজে থিতু হয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। তবে শেষ পর্যন্ত বিপদ ঘটেনি মেহেদী ঢাল হয়ে দাঁড়ালে। ইস্ট জোনের হয়ে বল হাতে ৩টি করে উইকেট নেন আফিফ হোসেন ও নাঈম হাসান।
এর আগে ব্যাটিং করতে নেমে লড়াকু স্কোর হয়নি ইস্ট জোনের। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা দলটি ১৯২ রান করে ইমরুল কায়েসের ৬৯ রানে ভর করে। ৯৭ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে এই রান করেন ইমরুল। ফিফটি পেয়েছিলেন ৮০ বলে। এছাড়া ইরফান শুক্কুর ৩৩ ও আফিফ হোসেন ২৯ রান করেন। তিন মাস পর মাঠে ফিরে সুবিধা করতে পারেননি তামিম।
২৬ বলে ৯ রান করে ফেরেন তিনি। সাউথ জোনের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি ১০ ওভারে ৪৪ রান দেন। এছাড়া ২ উইকেট নেন নাহিদ। ব্যাট হাতে ২৭ রানের পাশাপাশি বল হাতে জোড়া উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন নাহিদ।
এছাড়া দিনের অন্য ম্যাচে ব্যাট হাতে ওয়ালটনের ক্রিকেটাররা দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে লড়াকু স্কোর ছুড়ে দেয়। বল হাতেও সবাই মিলেই লড়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের নর্থ জোনের বিপক্ষে। রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি নর্থ জোনের। প্রথম ওভারেই মোসাদ্দেকের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন ওপেনার তানজীদ হাসান তামিম (১)। দলটি দ্রুত ঘুরে দাঁড়ায় পারভেজ হোসেন ইমন ও নাঈম ইসলামের প্রতিরোধে। দুজনেই খেলতে থাকেন সমান তালে। নাজমুল ইসলাম অপু ইমনকে ৩০ রানে ফিরিয়ে ভেঙে দেন ৮৬ রানের জুটি। পারভেজের আউটের পরে ক্রিজে এসেই মৃত্যুঞ্জয়ের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন মার্শাল আইয়ুব। হঠাৎ করে দুই উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে নর্থ জোন। কিন্তু পথের কাঁটা হয়ে রইলেন নাঈম ইসলাম। ইমনের সঙ্গে জুটির পর এবার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গী বানিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন। দুজনে জুটি গড়েন ৬৭ রানের। ৬৯ বলে নাঈম টানা দ্বিতীয় ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন। বল হাতে ওয়ালটনের মৃত্যুঞ্জয় ৬ ওভারে ২০ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন। ২ উইকেট করে নেন সৌম্য-মোসাদ্দেক। এদিকে দিনের অন্য ম্যাচে দলীয় নৈপুণ্যে ওয়ালটন সেন্ট্রাল ২৬২ রান করে। মোসাদ্দেক সর্বোচ্চ ৫৪ ও জাকের আলী অনিক ১৪ রানে অপরাজিত ছিলেন।
শেষ ওভারে গিয়ে চারটি চারে ৫৪ বলে ফিফটির দেখা পেয়েছিলেন অধিনায়ক। ওয়ালটন সেন্ট্রালের হয়ে হাফ সেঞ্চুরি করেন আব্দুল মজিদও। ৯০ বলে ধীর গতির ফিফটির পর অবশ্য তিনি ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ৫৩ রানে আউট হন মজিদ।
দ্রুত প্রথম উইকেট হারানোর পর সৌম্যকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েছিলেন মজিদ। কিন্তু দ্রুত রান তুলতে গিয়ে সৌম্য আউট হন ৪০ রানে। দারুণ ইনিংসের আভাস দিয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু মাহমুদউল্লাহর বলে মারতে গিয়ে ইনিংস লম্বা করতে পারেননি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। এগিয়ে এসে মারতে গেলে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন। ৩৬ বলে ৪ চারে সাকিব ৩৩ রান করেন।
তারপরে মোসাদ্দেক নতুন ব্যাটসম্যান আল আমিনকে সঙ্গে নিয়ে এগোতে থাকেন। ৮৩ রানের জুটি গড়ে লড়াকু স্কোরের ভিত গড়ে দেন তারা।
আল আমিন ৪ চারে ৩২ বলে ৪৩ রান করে আউট হন। এবার মোসাদ্দেক ইনিংস শেষ করেন জাকের আলীকে নিয়ে। বল হাতে বিসিবি নর্থের হয়ে সর্বোচ্চ দুটি উইকেট নেন শফিকুল ইসলাম। শামীম হোসেন পাটোয়ারী, সানজামুল ইসলাম ও মাহমুদউল্লাহ একটি করে উইকেট নেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়