হাতিরঝিলের সড়ক বন্ধে রাজধানীতে তীব্র যানজট

আগের সংবাদ

বিশাল লক্ষ্যমাত্রার বাজেট প্রস্তুতি : সম্ভাব্য আকার ৬,৭৫,১৩৯ কোটি টাকা, আয় ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা

পরের সংবাদ

উৎসবের সপ্তম দিন : পিঠা খাওয়ার ধুম লেগেছে শিল্পকলা মাঠে!

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : পৌষের কুয়াশামাখা সন্ধ্যা রঙিন হয়ে উঠেছে শীতের গরম পিঠায়। নারীরা গভীর মমতা আর আন্তরিকতায় তৈরি করছেন বাংলার ঐতিহ্যবাহী হরেক রকম পিঠা। সেই বাহারি পিঠা থরে থরে সাজিয়ে তারা পিঠা উৎসবকে রঙিন করে তুলেছেন। ১০ দিনের পিঠা উৎসবের সপ্তম দিনে গতকাল মঙ্গলবার শিল্পকলার মাঠে দেখা গেল এসব দৃশ্য। দাম একটু চড়া হলেও পৌষ-পার্বনে মায়ের হাতের পিঠা খাওয়ার স্মৃতিই যেন সবাইকে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল শেকড়ের কাছে। মাঠজুড়ে মানুষ আর মানুষ। একদিকে পিঠা খাওয়া, আড্ডা, কেনা ও বানানোর ধুম। অন্যদিকে উন্মুক্ত মঞ্চের সাংস্কৃতিক আয়োজন উৎসবকে করে তুলেছে প্রাণবন্ত।
মেলায় আরো দেখা গেল মাছ পিঠা, মম, চিকেন সাসলি, নকশি পিঠা, গোলাপ ফুল, হাস-মুরগির মাংস, পুডিংসহ এলাকার একটু ভিন্ন স্টাইলের পিঠার পসরা সাজিয়ে বসেছে ছয় কন্যা পিঠা ঘর। কথা হলো এ পিঠা ঘরের একজন রোমানার সঙ্গে। ছয় কন্যা পিঠা ঘরের গল্পটা কেমন জানতে চাইলে ভোরের কাগজকে তিনি বললেন, ছয় বোন নয়, চার জেলার, চার প্রান্তের ছয় বন্ধু আমরা। বরিশালের একজন, পটুয়াখালীর দুজন, নোয়াখালীর একজন, পাবনার একজন এবং ঢাকার দুজন। প্রত্যেকেই পেশাজীবী। কাজের ফাঁকে বাড়তি আয়ের জন্য এমন উদ্যোগ। শুরুর দিকে তেমন বিক্রি না হলেও হতাশ হইনি আমরা। প্রত্যেকেই সিদ্ধান্ত নিলাম হার মানা হার পরব না। শুরু যখন করেছি, থেমে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। এখন ভালোই লাভ হচ্ছে। অংশ নিচ্ছি প্রতি বছরই।
ঝাল জামাই, কুসুমকলি, খোয়াজা, ছাইন্যাসহ লাবণ্য নোয়াখালী পিঠা ঘরের কাকলি বেশ দাপট নিয়ে একাই পিঠা বিক্রি করছেন। দেখা গেল পিঠা বারবার হাতে ঘাঁটাঘাঁটি করায় এক ক্রেতাকে ধমক দিয়ে বিদায়ও করলেন। কাকলি বললেন, করোনাকাল চলছে, সংক্রমণের ভয়ে আছি। পিঠার গায়ে হাতে টিপাটিপি করলে অন্য ক্রেতারা কিনতে চাইবে না। তিনি বলেন, বিশ পদের পিঠা বানাতে

পারি। দশ বছর ধরে পিঠা উৎসবে অংশ নিচ্ছি। যুদ্ধটা একাই করছি। ভালো-মন্দ মিলিয়ে অভিজ্ঞতা ভালোই। মেলায় অন্যান্য আইটেমের সঙ্গে ঝাল জামাই বিক্রির তুঙ্গে।
সিলেটি পিঠা ঘরে বিক্রয় প্রতিনিধি সাবিয়া সীমু জানালেন, সিলেটের বিখ্যাত সাতকড়া দিয়ে গরুর মাংস বিক্রির শীর্ষে। এ আইটেমটি সন্ধ্যার আগেই ফুরিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া কোয়েল পাখি আর হাসের মাংসও দেদার বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আছে সিলেটের হান্দেশ, পাটিসাপটা, মাস পিঠা, চুইঝাল পিঠা, চালের গুঁড়ার রুটি, দুধ চিতইসহ হরেক রকম পিঠা। পিঠা উৎসবে সেগুনবাগিচা থেকে ছেলেমেয়েদের নিয়ে আসা মালিহা মজিদ বলেন, ছোট বেলায় শীত এলে দেখতাম মা বাড়িতে নানা রকম পিঠা বানাতেন। আমরা দশ ভাইবোন আগুন জ¦লা চুলার পাশে মাকে ঘিরে বসে থাকতাম। মা একের পর পিঠা বানাতেন আর আমরা গরম গরম পিঠা খেতাম। মা চলে গেছেন বিশ বছর আগে। এখানে এসে মায়ের পিঠা বানানোর সেই স্মৃতিগুলো বারবার মনে পড়ছে। আমাদের ছোটবেলার সেই গ্রামীণ পিঠাপুলির ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে এবং আস্বাদন করাতে শিশুদের নিয়ে এলাম।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়