হাতিরঝিলের সড়ক বন্ধে রাজধানীতে তীব্র যানজট

আগের সংবাদ

বিশাল লক্ষ্যমাত্রার বাজেট প্রস্তুতি : সম্ভাব্য আকার ৬,৭৫,১৩৯ কোটি টাকা, আয় ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা

পরের সংবাদ

আইএমএফের আহ্বান : উদীয়মান অর্থনীতির দেশকে প্রস্তুত থাকতে হবে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : করোনার বিপর্যয় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে প্রাক-মহামারি পর্যায়কে ছাড়িয়ে গেছে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি। তুমুল ভোক্তা চাহিদায় দেশটিতে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে মূল্যস্ফীতির হার। এ অবস্থায় মুদ্রানীতি কঠোর করার পরিকল্পনা করছে ইউএস ফেডারেল রিজার্ভ। প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত এ পদক্ষেপ বৈশ্বিক আর্থিক বাজারকে বিপর্যস্ত এবং মুদ্রার অবমূল্যায়ন সৃষ্টি করতে পারে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় উদীয়মান অর্থনীতিগুলোকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
সম্প্রতি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি ব্লগে আইএমএফ জানিয়েছে, করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া ও মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হার বাড়ানোর পদক্ষেপ বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নিয়ে ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে উদীয়মান অর্থনীতিগুলোয় অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধকতা ও ফেডের সম্পদ কেনা ত্বরান্বিত করার সিদ্ধান্ত এরই মধ্যে উদীয়মান বাজারগুলোকে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও উচ্চতর পাবলিক ঋণের মুখে ফেলেছে।
ব্লগটির সহলেখক ও আইএমএফের কৌশল, নীতি ও পর্যালোচনা বিভাগের ম্যাক্রো নীতির বিভাগীয় প্রধান স্টেফান ড্যানিংগার বলেন, উদীয়মান বাজারগুলোয় মোট সরকারি ঋণ ২০১৯ সাল থেকে প্রায় ১০ শতাংশীয় পয়েন্ট বেড়েছে। ২০২১ সালের শেষ নাগাদ এ ঋণের অনুপাত মোট দেশজ উৎপাদনের প্রায় ৬৪ শতাংশে পৌঁছেছে। যদিও দেশভেদে এ অনুপাতে বড় ধরনের পার্থক্য রয়েছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিপরীতে উদীয়মান দেশগুলোর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও শ্রমবাজার অনেক পিছিয়ে রয়েছে। অনেক দেশের জন্যই ডলারে ঋণের খরচ কিছুটা কম হয়। তবে দেশীয় মূল্যস্ফীতি ও স্থিতিশীল বিদেশি তহবিল নিয়ে উদ্বেগ গত বছর ব্রাজিল, রাশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বেশ কয়েকটি উদীয়মান বাজারকে সুদের হার বাড়ানোর শুরু করতে প্ররোচিত করেছিল।
করোনার কারণে ২০২০ সালে ১৯৩০-এর দশকের পর থেকে গভীরতম মন্দায় পড়েছিল বিশ্ব অর্থনীতি। গত বছর বিশ্বজুড়ে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো ২৫ লাখ কোটি ডলারের আর্থিক ও মুদ্রানীতি সহায়তা দিয়েছে। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের দুর্বল গতিবেগ, করোনা প্রাদুর্ভাব, টিকাদান কার্যক্রমে অসমতা, সরবরাহ চেইনে প্রতিবন্ধকতা ও ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির ঝুঁকির কারণে গত বছরের অক্টোবরে আইএমএফ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে। বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থাটি ২০২১ সালের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ করেছে। পাশাপাশি সংস্থাটি ২০২২ সালের পূর্বাভাস ৪ দশমিক ৯ শতাংশ অব্যাহত রেখেছে।
তবে নভেম্বরে আবারো করোনা সংক্রমণ এবং পরবর্তী সময়ে ইউরোপ, এশিয়া ও আমেরিকায় বিধিনিষেধ পুনর্বহাল এ বছর অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।

ওয়াশিংটনভিত্তিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, উন্নত অর্থনীতিতে সরবরাহের প্রতিবন্ধকতা অব্যাহত থাকা এবং ক্রমবর্ধমান ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব নি¤œ আয়ের ও উন্নয়নশীল দেশগুলোয় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে স্থবির করে দেয়ার হুমকি তৈরি করেছে। ফলে দেশগুলোর অর্থনৈতিক দুর্বলতাও বেড়ে যাচ্ছে। ইতিহাস দেখায়, ফেডের মুদ্রানীতি ধীরে ধীরে কঠোর এবং শক্তিশালী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখলে উদীয়মান বাজারগুলোয় প্রভাব সীমিত হতে পারে।
তবে মার্কিন মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় ফেডের আকস্মিক পদক্ষেপ বৈশ্বিক আর্থিক বাজারকে বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে। এটি মার্কিন ভোক্তা চাহিদা ও বাণিজ্যে ধীরগতি নিয়ে আসতে পারে এবং উদীয়মান বাজারে মূলধনের বহিঃপ্রবাহ ও মুদ্রার অবমূল্যায়ন সৃষ্টি করতে পারে।
আইএমএফ পরামর্শ দিয়েছে পরিস্থিতি ও দুর্বলতার ওপর ভিত্তি করে উদীয়মান বাজারগুলোর নীতি প্রণয়ন করা উচিত। যে দেশগুলোর মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ নীতির বিশ্বাসযোগ্যতা রয়েছে, সে দেশগুলো মুদ্রানীতিকে ধীরে ধীরে কঠোর করতে পারে। অন্যদের উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ মোকাবিলায়ও ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়