রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফের আগুন, পুড়ল সহ¯্রাধিক ঘর

আগের সংবাদ

তিন জট থেকে মুক্তির প্রত্যাশা > নাসিক নির্বাচন ঘিরে ভোটারদের মতামত : জলজট, যানজট ও আবর্জনা জট নারায়ণগঞ্জবাসীর গলার কাঁটা

পরের সংবাদ

করোনা পরিস্থিতি : আক্রান্ত ২২৩১ শনাক্তের হার ৮.৫৩ শতাংশ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে কোনো সুখবরই মিলছে না। প্রতিদিনই বেড়ে চলছে সংক্রমণের বিভিন্ন সূচক। সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারায় দেশে একদিনে শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা এক ধাক্কায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। আর ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ২২শ। শনাক্তের হারও ছাড়িয়েছে সাড়ে ৮ শতাংশ। গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ তৈরি করা ওমিক্রনে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাও বেড়ে চলছে। দেশে প্রথম ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিল গত ৯ ডিসেম্বর। গতকাল জার্মানির গেøাবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জার (জিআইএসএআইডি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য বলছে, দেশে আরো ৯ জনের শরীরে ওমিক্রনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এ নিয়ে ওমিক্রনে আক্রান্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছাল ৩০ জনে। এক মাসের মাথায় শনাক্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩০ জনে।
বৈশ্বিক এই ডাটাবেজ আরো জানায়, শনাক্ত হওয়া ৩০ জনের মধ্যে নারী ২০ জন এবং পুরুষ ১০ জন। আর নতুন শনাক্ত ৯ জনের সবাই ঢাকার বাসিন্দা। ৬ জন রাজধানীর মহাখালী এবং বাকি ৩ জন বাসাবোর বাসিন্দা। মহাখালীর বাসিন্দাদের মধ্যে ৬ জনের মধ্যে সবাই নারী। তাদের বয়স ১৮ থেকে ৫২ বছরের মধ্যে। আর বাসাবোতে সংক্রমিত ৩ জনের মধ্যে ২ জন ৫১ ও ৩০ বছর বয়সি পুরুষ। অপরজন ৫৬ বছর বয়সি নারী।
জিআইএসএআইডি জানিয়েছে, ২৯ ডিসেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারির মধ্যে বিভিন্ন সময় সংক্রমিত ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এসব নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করে তা জিআইএসএআইডিতে জমা দিয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি)।
জানা যায়, বিদেশফেরত কারো করোনা শনাক্ত হলে তাদের শরীর থেকে ভাইরাসের নমুনা নিয়ে জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হচ্ছে। পাশাপাশি আক্রান্তদের সংস্পর্শে এসেছেন এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে নমুনা নিয়েও জিনোম সিকোয়েন্স করা হচ্ছে। আক্রান্তদের সংস্পর্শে এসে দেশেও কয়েকজন আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পেয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৬ হাজার ১৪৩টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে সংক্রমণের উপস্থিতি মিলেছে ২ হাজার ২৩১ টিতে। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনয় শনাক্তের হার ৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ। এর আগে গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত ও শনাক্তের হার ছিল। ওই দিন ২ হাজার ৩২৫ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। ওই দিন নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ছিল ৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২০৮ জন, মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৮৫২টি পরীক্ষাগারে ২১ হাজার ৯৮০টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। ১ হাজার ৪৯১ জনের মধ্যে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ২৫৪ জনই ঢাকা বিভাগে। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ। মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। সুস্থ হয়েছে ২১৭ জন।
এর আগে গত রবিবার ২১ হাজার ৯৮০টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। ১ হাজার ৪৯১ জনের মধ্যে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। শনাক্তের হার ছিল ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ। মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। শনিবার ১৯ হাজার ২৭৫টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। ১ হাজার ১১৬ জনের মধ্যে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। শনাক্তের হার ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ। মৃত্যু হয়েছে ১ জনের। শুক্রবার ২০ হাজার ২০৪টি নমুনা পরীক্ষায় রোগী শনাক্ত হয় ১ হাজার ১৪৬ জন। শনাক্তের হার ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ। মৃত্যু হয় ১ জনের।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সিডিসি নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী ৩ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের সংক্রমণের সপ্তাহ গণনা শুরু হয়েছে। সেই নিয়ম অনুযায়ী ২০২২ সালের সংক্রমণের প্রথম সপ্তাহে (৩ থেকে ৯ জানুয়ারি) ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯৬৩টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। রোগী শনাক্ত হয়েছে ৭ হাজার ২৩৪ জন। সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৩৪৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের। আর গত সপ্তাহে (২৭ ডিসেম্বর ২০২১ থেকে ২ জানুয়ারি ২০২২) ১ লাখ ৩২ হাজার ৮০৭টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ২১৩ জন। সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ১৩০ জন, মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। সেই হিসাব অনুযায়ী, সপ্তাহের ব্যবধানে নমুনা পরীক্ষার হার বেড়েছে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ, শনাক্তের হার বেড়েছে ১২৫ দশমিক ১ শতাংশ, মৃত্যু বেড়েছে ৪৭ দশমিক ১ শতাংশ। আর সুস্থতা কমেছে ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, দেশে এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ কোটি ১৬ লাখ ৯৭ হাজার ৯৩৮টি। এর মধ্যে রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৫ লাখ ৯৫ হাজার ৯৩১ জন। সুস্থ হয়েছেন ১৫ লাখ ৫১ হাজার ১১৩ জন। আর মোট প্রাণহানির সংখ্যা ২৮ হাজার ১০৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৭ হাজার ৯৭৩ জন এবং নারী ১০ হাজার ১৩২ জন। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা অনুযায়ী শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ১৯ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় যে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে ৩ জনই পুরুষ। ১ জন পুরুষ আর নারী ২ জন। তাদের সবাই ষাটোর্ধ্ব বয়সি। বিভাগ বিবেচনায় ২ জন ঢাকা বিভাগের রাজশাহী বিভাগের ১ জন। ৩ জনই সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়