সোনারগাঁওয়ে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি

আগের সংবাদ

স্বাস্থ্যবিধি নির্দেশনা নিয়ে বিভ্রান্তি

পরের সংবাদ

সমন্বয় সভায় চসিক মেয়র : শুষ্ক মৌসুমেই জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ শেষ করার তাগিদ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : নগরে যে কোনো উন্নয়ন কাজ করতে হলে চসিকের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে জানিয়ে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, জলাবদ্ধতা নিয়ে যে জনদুর্ভোগ তা এই শুষ্ক মৌসুমে শেষ করতে হবে। ১৮টি খালে যে কাজগুলো ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে বলে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা জানিয়েছে, তা সম্পূর্ণভাবে পানি চলাচলের উপযোগী করতে হবে।
গতকাল রবিবার টাইগারপাসে চসিক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে নগরের জলবদ্ধতা-সংক্রান্ত অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মেয়র বলেন, নগরের প্রকৃতি বিপর্যয়ের প্রধান কারণ হলো অবৈধভাবে পাহাড় কাটা এবং খাল ও নালা-নর্দমায় বর্জ্য ফেলা। কর্ণফুলী নদী যেভাবে ভরাট হয়ে যাচ্ছে, তা অব্যাহত থাকলে চট্টগ্রাম বন্দর সম্পূর্ণভাবে অচল হয়ে যাবে। চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধ হয়ে যাওয়া মানে পুরো বাংলাদেশ অচল হয়ে যাওয়া। সুতরাং এখন থেকেই এ ব্যাপারে সতর্কতার সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য যে ৩৬টি খালে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ হচ্ছে তার বাইরে যে ২১টি খাল রয়েছে তার প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে অবগত হয়ে তাতে নতুন প্রকল্প গ্রহণ করে জলাবদ্ধতা সম্পূর্ণ নিরসনে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি বন্দর কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে বলেন, বে-টার্মিনালের নির্মাণের যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে তাতে নগরীর পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। চসিক নগরীতে যে সড়কগুলো নির্মাণ করছে তা দিয়ে ৮-১০ টনের বেশি পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করার উপযোগী নয়, তবে বর্তমানে বন্দর কর্তৃপক্ষের ৩০-৪০ টনের গাড়ি চলাচল করছে এতে করে সড়কগুলোতে বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহুরুল আলম দোভাষ বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর সচল রেখে সব উন্নয়ন কাজ করতে হবে। তিনি কর্ণফুলী রক্ষায় পলিথিনের উৎপাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরকে কঠোর অবস্থান গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি ছোটোখাটো যে ড্রেনগুলোর কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে, তা চসিককে বুঝে নিতে অনুরোধ জানান। এছাড়া যে স্লুইচ গেটগুলো চউক ইতোমধ্যে নির্মাণ সম্পন্ন করেছে তা পরিচালনার দায়িত্ব চসিককে গ্রহণ করার জন্য জনবল নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানান। মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন সংস্থার প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মো. শাহ আলী বলেন, বর্তমানে প্রকল্পের ৬০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। শুকনো মৌসুমের মধ্যে নগরীর ১৮-২০টি খালের কাজ সম্পূর্ণরূপে শেষ হবে। ৪২টি সিল্টট্রেপ স্থাপনের কাজ চলছে। সব ঝুঁকিপূর্ণ ড্রেনের ওপর স্ল্যাব করা হবে। উন্মুক্ত খালগুলোতে ২ ফুট উচ্চতার রেলিং করা হবে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান খান বলেন, কর্ণফুলী নদীর রক্ষণাবেক্ষণ করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। নদীর একটি ব্যাঙ্ক লাইন থাকে, এই ব্যাঙ্ক লাইন মেনে চলতে না পারলে নদী নাব্যতা হারায় এবং তার নিজস্ব গতিপথ হারিয়ে ফেলে। কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে নগরীর ১৪টি গুরুত্বপূর্ণ খালের সংযোগ রয়েছে।
এই খালগুলো দিয়ে বর্জ্য পতিত হয়ে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। তিনি বে-টার্মিনাল নির্মাণের আগে সব সেবা সংস্থার সঙ্গে মতামত গ্রহণ করা হবে বলে জানান। পানি উন্নয়ন বোর্ডের শিবেন্দু খাস্তগীর বলেন, বে-টার্মিনাল নির্মাণের কারণে পানি নিষ্কাশনে যাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে। পাহাড় কাটার কারণে কর্ণফুলী ও হালদা ভরাট হয়ে যাচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১ হাজার ৬২০ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ চলমান আছে।
তিনি এই কাজগুলো বাস্তবায়নে চসিকসহ সেবা সংস্থাগুলোর সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম ওয়াসার পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্প ও রোড কাটিংয়ের কাজ সমন্বয় করতে একজন প্রকৌশলীকে লিয়াজোঁ করার দায়িত্ব অর্পণ করা হচ্ছে বলে জানান। সিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. তারেক আহম্মেদ বলেন, উন্নয়ন কাজের জন্য রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন- চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, চউক সচিব মো. আনোয়ার পাশা, প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামছ, বন্দরের সিনিয়র হাইড্রোগ্রাফার মো. নাছির উদ্দিন, জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি রায়হান মাহবুব, পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়