সোনারগাঁওয়ে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি

আগের সংবাদ

স্বাস্থ্যবিধি নির্দেশনা নিয়ে বিভ্রান্তি

পরের সংবাদ

মামলাজট কমানোই বড় চ্যালেঞ্জ : বিচারাধীন মামলা ৪০ লাখ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

তানভীর আহমেদ : মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে গত দুই বছরে বেশির ভাগ সময় কখনো লকডাউন, কখনো বিধিনিষেধ, আবার কখনো অবকাশকালীন ছুটির কারণে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। মামলার শুনানি ও নিষ্পত্তি নিয়মতান্ত্রিকভাবে না হওয়ায় বিচারাধীন মামলার জট বেড়েছে এই সময়ে। বর্তমানে উচ্চ আদালতসহ নিম্ন আদালতগুলোতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। তাই মামলা জট খুলতে দেশের নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর চ্যালেঞ্জ বলেও মনে করেন আইনসংশ্লিষ্টরা। ২১ মাস দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাওয়া প্রধান বিচারপতির সামনে বিচার বিভাগের অন্য সমস্যাগুলো সমাধানের পাশাপাশি মামলাজট নিরসনই বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন আইনজ্ঞরা।
আইনজ্ঞদের মতে, নতুন বছরে বিচারালয়ে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৪০ লাখ মামলার জট কমিয়ে আনা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এছাড়া আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক স্বল্পতা নিরসন, বিচারাঙ্গনের দুর্নীতি-অনিয়ম রোধ, বিচার বিভাগের ডিজিটালাইজেশন ও যুদ্ধাপরাধের বিচার ত্বরান্বিত করাও নতুন বছরের চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, উচ্চ আদালতসহ দেশের অধঃস্তন আদালতগুলোতে প্রায় ৪০ লাখ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ২৩ হাজার ৬১৭, হাইকোর্ট বিভাগে চার লাখ ৮৯ হাজার ৬৮টি। ৬৪ জেলার অধঃস্তন আদালতে ৩১ লাখ ৭২ হাজার ৪৩টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। সে হিসেবে মাত্র এক দশকে মামলা বেড়েছে ১৬ লাখের বেশি।
এদিকে, করোনা ভাইরাসের কারণে ২০২০ সাল থেকে দীর্ঘ সময় উচ্চ ও অধঃস্তন আদালতের নিয়মিত বিচারকাজ বন্ধ ছিল। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ২০২১ সালের মামলার পরিসংখ্যান প্রস্তুত করা সম্ভব হয়নি। হালনাগাদ কাজ সম্পন্নের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে। সুপ্রিম

কোর্টের আইনজীবীরা জানান, লকডাউন বিচার বিভাগের বিদ্যমান সংকট আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। যেহেতু করোনার কারণে স্বাভাবিক বিচারকাজ পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু লাখ লাখ মামলা ঠিকই হয়েছে। কিন্তু নিষ্পত্তি হয়েছে নামমাত্র। তাই মামলাজট ৪০ লাখ ছাড়িয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।
তাদের মতে, নিষ্পত্তি বাড়ানো ও জটের লাগাম টেনে ধরতে বহুমুখী উদ্যোগ নিতে হবে। সেক্ষেত্রে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির দিকে বেশি নজর দিতে হবে। আবার নিম্ন আদালতের বিচারকদের কর্মঘণ্টা বাড়িয়ে ও অবকাশকালীন ছুটি কমিয়ে দিতে হবে।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, মামলাজট ছাড়া আর কোনো সমস্যাই আমার কাছে বড় মনে হয় না। প্রায় ৪০ লাখ মামলার জট। এই বিশাল পরিমাণ মামলা না কমানো গেলে বিচারপ্রার্থী জনগণের দুর্ভোগ দূর করা যাবে না। নতুন প্রধান বিচারপতিকে অবশ্যই মামলাজট কমানোর বিষয়ে ভাবতে হবে।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন আদালত বন্ধ থাকায় নিম্ন ও উচ্চ আদালতে মামলা নিষ্পত্তি হয়নি। যা বর্তমানে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।
করোনার কারণে দেশের আদালতে সৃষ্ট মামলার জট নিরসনে কোনো উদ্যোগ নেয়া হবে কিনা- জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ইতোমধ্যে বিচারিক আদালতে শারীরিক উপস্থিতিতে বিচারকাজ শুরু হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় মামলাজট নিরসনে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা করে উদ্যোগ নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়