কাগজ প্রতিবেদক : বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে রাতে বাড়ি ফেরার সময় গারো সম্প্রদায়ের স্কুলপড়–য়া দুই কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সোলায়মান হোসেন রিয়াদকে (২২) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানী কারওয়ানবাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। র্যাব জানায়, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের কাটাবাড়ীতে গারো সম্প্রদায়ের একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নেয় সোলায়মান হোসেন রিয়াদসহ তার ৯ সহযোগী। গত ২৬ ডিসেম্বর রাতে ওই বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিল গারো সম্প্রদায়ের স্কুলপড়–য়া দুই কিশোরী। এ সময় তাদের পিছু নেয় তারা। একপর্যায়ে রাত ২টার দিকে পথ আটকে দুই কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে রিয়াদসহ ছয়জন। এ সময় বাকি চারজন আশপাশে পাহারায় ছিল। এরপর দুই কিশোরীকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। ঘটনার পর পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী এক কিশোরীর বাবা হালুয়াঘাট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলো- কচুয়াকুড়া গ্রামের মো. শরীফ (২০), এজাহার হোসেন (২০), কাটাবাড়ী গ্রামের রমজান আলী (২১), মো. কাউছার (২১), মো. আসাদুল (১৯), শরিফুল ইসলাম (২২), মো. মিজান (২২), মো. রুকন (২১) ও মো. মামুন (২০)।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত রিয়াদ। ১০ থেকে ১৩ জনের একটি বখাটে দলের নেতৃত্ব দিত সে। তার কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই। ছোটবেলায় তিন বছর মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছিল। স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে রিয়াদ ও তার সহযোগীরা ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করত বলে অভিযোগ রয়েছে। রিয়াদ আগেও এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। সেগুলো সালিশি বিচারের মাধ্যমে সমঝোতা হয়েছিল। গারো সম্প্রদায় ও স্থানীয়রা আমাদের এসব তথ্য জানিয়েছে।
তিনি জানান, ঘটনার পর রিয়াদ একটি মালবাহী ট্রাকে করে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করছিল। পরে গফরগাঁওয়ে আত্মগোপন করে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রিয়াদের বিরুদ্ধে হালুয়াঘাট থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মাদক চোরাচালান মামলা রয়েছে। এর আগেও সে পুলিশের কাছে গ্রেপ্তারের ঘটনায় কারাভোগ করেছে। সে সহযোগীদের নিয়ে এলাকায় মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াত।
র্যাবের মুখপাত্র বলেন, যখন দুই কিশোরীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয় তখন সেখানে ১০ বছরের একটি শিশু ছিল। কিন্তু ওই শিশু পালিয়ে বাড়িতে চলে যায়। ভুক্তভোগীরা প্রাথমিকভাবে বিষয়টি গোপন রাখেন। পরে গারো সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে গত ৩০ ডিসেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রিয়াদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। তবে তার বাবা এলাকার জনপ্রতিনিধি ছিলেন। যেহেতু তার বাবা জনপ্রতিনিধি ছিলেন, সে আধিপত্য বিস্তার করেছিল। তদন্ত করলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে। এছাড়া রিয়াদের বাকি সহযোগীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।