প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
কাগজ প্রতিবেদক : লায়ালপুর জেল। ২৫ মার্চ রাতে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার পরে লাহোর থেকে আশি মাইল দূরে এই কারাগারে বঙ্গবন্ধুকে রাখা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পরেও তিনি বন্দি থাকেন পশ্চিম পাকিস্তানের জেলে। বিচার নামের এক প্রহসন মঞ্চস্থ হয় বঙ্গবন্ধুর এই জেল জীবনে। পৃথিবীতে আর কোথাও কোনো নেতার এরকম হাস্যকর সাজানো বিচার হয়েছে কিনা ইতিহাসে তার সাক্ষ্য মেলা ভার। ১৯৭১ এর জুলাইয়ের গোড়ার দিকে ইয়াহিয়া বুঝতে পারেন যে পূর্ব পাকিস্তানে তার সেনাবাহিনী বিপুল প্রতিরোধের মুখে পড়ছে এবং পৌঁছে যাচ্ছে পরাজয়ের ধারপ্রান্তে। তখন প্রতিশোধের নেশায় ইয়াহিয়া শেখ মুজিবকে হত্যার পরিকল্পনা করে। জুলফিকার আলী ভুট্টো তাকে নিবৃত্ত করে এই বলে যে, মুজিবকে হত্যা করা হলে বিশ্ব সমর্থন একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকবে। কেবলমাত্র বিচারের মাধ্যমে তাকে সাজা দিলে সেটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে। শুরু হয় বিচার। লায়ালপুর জেলে চলে বঙ্গবন্ধুর ট্রায়াল। অভিযোগ দাঁড় করানো হয় বারোটি। ছয়টি প্রমাণিত হলে নিশ্চিত শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্যে ব্রোহি নামক এক ব্যারিস্টারকে নিয়োগ দেয়া হয় যিনি বঙ্গবন্ধুর পক্ষের উকিল হবেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সাফ জানিয়ে দেন আমার পক্ষে কোনো উকিলের প্রয়োজন নেই আমি নিজেই আমার যুক্তিতর্ক তুলে ধরব। বিচারে সাজানো কিছু সাক্ষী হাজির করা হয়। বঙ্গবন্ধু তার ক্ষুরধার যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করে দিতে থাকেন যে তার বিরুদ্ধে সব মামলাই ভিত্তিহীন। সাক্ষীরা সব টাকা খেয়ে মিথ্যে সাক্ষী দিতে এসেছে। তারপরেও বিচারের রায় হয় এবং রায়ে বঙ্গবন্ধুর ফাঁসির আদেশ ঘোষণা করা হয়। তাকে লায়ালপুর জেল থেকে নেয়া হয় মিয়াঁওয়ালি জেলে যেখানে তার ফাঁসি কার্যকর করা হবে। কবর খোঁড়া হয় তার জন্যে। বঙ্গবন্ধু সেই কবর খোঁড়া দেখতেও পান। তিনি মৃত্যুকে ভয় পাননি। কেবল বলেছিলেন তার লাশটা যেন তার দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। এদিকে দেশ স্বাধীন হয় আর বিশ্বনেতৃত্বের চাপে বন্ধ হয়ে যায় ফাঁসি কার্যকরের আয়োজন। পাকিস্তানের জেল থেকে মুক্তি পেয়ে বিলাত ও ভারত হয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফেরেন তিনি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর লায়ালপুর জেলখানার বন্দিজীবনভিত্তিক কাহিনী নিয়ে ‘নিঃসঙ্গ লড়াই’ শীর্ষক এই সত্যাশ্রয়ী গল্প নিয়েই রক্ত গর্জে ওঠা যাত্রাপালাটি লিখেছেন নাট্যকার মাসুম রেজা, নির্দেশনা দিয়েছেন সাইদুর রহমান লিপন। এতে উপদেষ্টা নির্দেশক হিসেবে ছিলেন ওয়াহিদা মল্লিক জলি।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের ব্যবস্থাপনায় গতকাল শনিবার শীত সন্ধ্যায় শিল্পকলার নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে নাটকটির মঞ্চায়ন হয়। এতে
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।