জরায়ুমুখের ক্যান্সার সচেতনতা দিবস আজ

আগের সংবাদ

উৎসবমুখর নারায়ণগঞ্জ : প্রচারণায় এগিয়ে আইভী

পরের সংবাদ

রাজধানীতে বুটেক্স শিক্ষার্থী ও হকারদের বিক্ষোভ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানীতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) শিক্ষার্থী ও হকাররা। গতকাল শনিবার পৃথকভাবে তেজগাঁও ও উত্তরার রাজল²ী এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এ বিক্ষোভ করা হয়। এ সময় করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় হল ও সশরীরে পরীক্ষার আয়োজন বন্ধসহ পাঁচ দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। এছাড়া হকাররা দাবি জানান, উচ্ছেদ বন্ধ ও স্থায়ী পুনর্বাসনের।
দীর্ঘক্ষণ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করায় মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে বিপাকে পড়ে হাজারো মানুষ। বুটেক্স শিক্ষার্থীরা ৪ ঘণ্টা ও হকাররা ২ ঘণ্টা বিক্ষোভ করার পর সড়ক ছেড়ে দেন। পরে ধীরে ধীরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বেলা ১১টায় তেজগাঁও মূল সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন বুটেক্স শিক্ষার্থীরা। চার ঘণ্টা পর বিকাল ৩টার দিকে উপাচার্য ও তেজগাঁও পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ প্রত্যাহার করেন তারা। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, গতকাল সকালে বুটেক্স উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন তারা। তখন শিক্ষার্থীদের দাবি উড়িয়ে দেন উপাচার্য।
পাশাপাশি বুটেক্স রেজিস্ট্রার শাহ আলিমুজ্জামান বেলাল শিক্ষার্থীদের বলেন, করোনা যার যার, দায়ভার তার।
রেজিস্ট্রারের ওই বক্তব্যের পরই সড়কে নামেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, আবাসিক শিক্ষার্থীসহ মেসে থাকা শিক্ষার্থীরাও ব্যাপক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। কেননা, হলগুলোতে আমরা অনেক গাদাগাদি করে একই রুমে অবস্থান করি। যার কারণে হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সম্ভব নয়। আবার মন্ত্রিপরিষদ থেকে বলা হয়েছে, ১২ বছরের অধিক বয়সি শিক্ষার্থীরা ১ ডোজ টিকা ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসতে পারবে না এবং টিকা-কার্ড ছাড়া যানবাহনে উঠতে পারবে না। আমাদের অনেক শিক্ষার্থী এক ডোজ টিকা এখনো পায়নি। অনেকে দ্বিতীয় ডোজের জন্য আবেদন করেও এসএমএস পায়নি।
শিক্ষার্থীরা বলেন, করোনার কারণে সংক্রমণের হার ইতোমধ্যে পাঁচ শতাংশের বেশি হয়ে গেছে। এ অবস্থায় শিগগিরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা আর সেশনজট বাড়াতে চাই না। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা দ্রুত অফলাইনে বিকল্প পদ্ধতিতে পরীক্ষাগুলো দিতে চাই। সংক্রমণ বেড়ে গেলে প্রয়োজনে হল বন্ধ করেও যথাসময়ে অনলাইনে পরীক্ষা দিতে চাই। এ অবস্থায় প্রশাসন ১১ জানুয়ারি থেকে পরীক্ষার আয়োজন করেছে। তাই আমরা পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছি।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি ও আন্দোলনের বিষয়ে বুটেক্স উপাচার্য অধ্যাপক আবুল কাশেম বলেন, আমি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। মৌখিকভাবে বলেছি, ১১ জানুয়ারির পরীক্ষা স্থগিত, হলগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে, যাতে তারা আতঙ্কিত না হয়ে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে পারে। আর পরবর্তী সময় পরীক্ষা অফলাইনে নাকি অনলাইনে হবে সেটি নিয়ে আমরা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত জানাব। সেজন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সময় চেয়েছি।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল পুলিশের এডিসি হাফিজ আল ফারুক বলেন, দীর্ঘ সময় সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। এতে আশপাশের সড়কে তীব্র যানজট তৈরি হয়। মানুষকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। আমরা অনুরোধ করেছি, ভিসির সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা পর শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে দেয়। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এদিকে গতকাল বেলা ১১টার দিকে উচ্ছেদ বন্ধ ও স্থায়ী পুনর্বাসন দাবিতে উত্তরায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে হকাররা। এ সময় বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের। এতে সড়কটির দুই দিকের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ১ ঘণ্টা পর সড়ক থেকে সরে যান হকাররা।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে উত্তরার রবীন্দ্র সরণিতে জড়ো হন তারা। পরে উত্তরার রাজল²ী বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন এলাকায় ঢাকা-১৮ আসনের সাংসদ হাবিব হাসানের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন তারা। হকারদের নেতা ও উত্তরা পশ্চিম থানা কৃষক লীগের যুগ্ম সম্পাদক রাসেল মণ্ডল বলেন, কয়েক দিন ধরে উত্তরার বিভিন্ন এলাকায় হকারদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। তারা হকারদের স্থায়ী পুনর্বাসন চান। হকাররা জানান, করোনার সময় তারা ব্যবসা করতে না পেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বিভিন্ন সমবায় সমিতি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করেন তারা। এখন যদি তাদের পুনর্বাসন না করে উচ্ছেদ করা হয়, তাহলে তারা পথে বসবেন। এছাড়া ধার-দেনাও পরিশোধ করতে পারবেন না তারা।
রাজল²ী এলাকার দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) আকতারুজ্জামান জানান, হকাররা সড়কের দুই পাশেই অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। এতে সড়কের উভয় পাশেই যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পরে হকারদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হয়। পরে হকাররা সংশ্লিষ্টদের আশ্বাসে সড়ক ছেড়ে দেন। তবে অবরোধে সৃষ্ট যানজটের রেশ কাটতে বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়