সিলেট ব্যুরো : ২০২১ সালে সিলেট বিভাগজুড়ে ৩১৫ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৭৮ জন। আহত হয়েছেন সাড়ে ছয়শ’র বেশি মানুষ। সড়কে নিরাপত্তার জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য দেয়া হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২১ সালে সিলেট বিভাগে মোট ৩১৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন ২৭৮ জন, আহত হয়েছেন ৬৫৪ জন। ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে দুর্ঘটনার সংখ্যা ও প্রাণহানির ঘটনা বেড়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। সংগঠনটির তথ্য বলছে, সিলেট বিভাগে ২০২০ সালে ১৮৭টি দুর্ঘটনায় ২৫০ জনের প্রাণহানি হয়েছিল, আহত হয়েছিলেন ৩৯৮ জন।
নিসচার তথ্যানুসারে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে সিলেট জেলায় ১৩৪টি দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ১১৯, আহত ৩১৩ জন। সুনামগঞ্জ জেলায় ৪২টি দুর্ঘটনায় নিহত হন ২৮ জন, আহতের সংখ্যা ১৯৩। মৌলভীবাজার জেলায় ৪২টি দুর্ঘটনায় ৩৩ জন নিহত ও ৪৬ জন আহত হন। এছাড়া হবিগঞ্জ জেলায় ৯৭টি দুর্ঘটনায় নিহত হন ৯৮ জন, আহতের সংখ্যা ১০২।
দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে সড়কের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিংয়ের অভাব, টাস্কফোর্স প্রদত্ত ১১১টি সুপারিশনামা বাস্তবায়ন না হওয়া, চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ও বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর প্রবণতা, লাইসেন্স ছাড়া চালক নিয়োগ, পথচারীদের মধ্যে সচেতনতার অভাব, ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে ওভারটেকিং করা, বিরতি ছাড়া দীর্ঘসময় ধরে গাড়ি চালনা, সড়ক-মহাসড়কের মোটরসাইকেল ও তিন চাকার গাড়ি বৃদ্ধি, রাস্তার পাশে হাটবাজার ও দোকানপাট বসানোকে উল্লেখ করা হয়েছে।
যার মধ্যে অশিক্ষিত ও অদক্ষ চালক, রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ বাস্তবায়ন না হওয়া ইত্যাদি মূল কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে চিহ্নিত করা হয়।
প্রতিবেদনে জেলা পর্যায়ে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে অতিরিক্ত লোক সংখ্যা, অপর্যাপ্ত রাস্তা, মোটরসাইকেল ও রিকশার আলাদা লেন না থাকা, পথচারীদের নিয়ম না মানার প্রবণতা, জেব্রাক্রসিং, ওভার ব্রিজ, আন্ডারপাস ব্যবহার না করে যত্রতত্র পারাপার ও রাস্তা চলাচল এবং পারাপারের সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করাকে দায়ী করা হয়েছে।

নিসচা কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক এবং চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগীয় কমিটির সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মিশু জানান, দেশের ১১টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, অনলাইন সংবাদমাধ্যম ও নিসচার শাখা সংগঠনগুলোর প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনারোধে ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ বাস্তবায়নের পাশাপাশি চালক, শ্রমিক ও জনসাধারণের সচেতনতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।