গয়েশ্বর চন্দ্র রায় : নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে সীমান্ত হত্যা বন্ধে ব্যর্থ সরকার

আগের সংবাদ

ওমিক্রনের সামাজিক সংক্রমণ! জিনোম সিকুয়েন্সিং বাড়ানোর তাগিদ > সার্বিক পরিস্থিতি বুঝতে আরো দুই সপ্তাহ লাগবে : বিশেষজ্ঞদের মত

পরের সংবাদ

ভারতে জেল খেটে দেশে ফিরল ২১ নারী-শিশু

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

যশোর প্রতিনিধি : ভারতে বিভিন্ন মেয়াদে জেল খেটে দেশে ফিরেছে ২১ জন নারী, শিশু ও কিশোর-কিশোরী। গতকাল শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের গ্রহণ করে। একই সঙ্গে আরো ৭ জনের ওমিক্রন সংক্রমণ হওয়ায় তাদের পাঠানো হয়নি।
এ সময় কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রথম সেক্রেটারি শামিমা ইয়াসমিন স্মৃতি ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক সেহেলি শাবরিনসহ উপস্থিত ছিলেন শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলীফ রেজা, বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি মামুন খান ও ইমিগ্রেশন ওসি মো. রাজু।
দেশে ফেরত আসারা হলো- নড়াইল জেলার জামরিলডাঙ্গা গ্রামের নজরুল সিকদারের ছেলে আবুদা সিকদার, একই গ্রামের ইউনুস মিয়ার ছেলে আয়ান ও তার স্ত্রী তাসলিমা আক্তার, বাগেরহাট জেলার মুকুল দাসের ছেলে হৃদয় দাস, যশোর জেলার সোনা হুসাইনের ছেলে সাকিল সেখ, ঠাকুরগাঁও জেলার এনাতুর রহমানের ছেলে মাসুদ রানা, বাগেরহাট জেলার নুরুল শেখের ছেলে রাব্বি শেখ, একই জেলার নয়া মিয়ার ছেলে রাকিব মিয়া, ঢাকা জেলার জাহাঙ্গীর মিয়ার মেয়ে মুন্নি, নিহার মণ্ডলের ছেলে পার্থ মণ্ডল, চট্টগ্রাম জেলার মো. আলীর মেয়ে ইয়াসমীন, মুন্সীগঞ্জ জেলার সাইদুর রহমানের মেয়ে নওশীন রহমান ও ফিউনা রহমান, বাগেরহাট জেলার আব্দুল হালিমের মেয়ে শিমুল বেগম, ঢাকা জেলার সাবু শেখের মেয়ে আরিফা খাতুন, ঝিনাইদাহ জেলার আবু তালেব শেখের মেয়ে সালমা খাতুন, নড়াইল জেলার মাসুদ মোল্যার মেয়ে মরিয়ম, হাদিস শেখের মেয়ে মুসলিমা বেগম , তার মেয়ে নাইমা খাতুন, শিমুল শেখের মেয়ে রুকাইয়া ও খুলনা জেলার অমল সরকারের ছেলে রাকেশ সরকার ।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি মোহাম্মাদ রাজু বলেন, এরা ভারতে গিয়ে কেউ হারিয়ে যায়, কেউ পুলিশের কাছে আটক হয়ে আদালতের মাধ্যেমে সে দেশের সেফ হোমে থাকে। এ পথ দিয়ে ২৮ জনের আসার কথা থাকলেও ৭ জন ওমিক্রণে আক্রান্ত হওয়ায় দেশে ফিরেছে ২১ জন। ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে এদের বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সেক্রেটারি শামিমা ইয়াসমিন স্মৃতি বলেন, এরা কেউ কেউ পাচারের শিকার ও কেউ কেউ নিজ ইচ্ছায় ভারতে অবস্থানের পর সে দেশের পুলিশের কাছে আটক হয়। এরপর বাংলাদেশ উপহাইকমিশন কলকাতা, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রাণালয়ের যৌথ উদ্যোগে বিভিন্ন সেফ হোমে অবস্থানরত এসব বাংলাদেশি নারী ও শিশুদের নাগরিকত্ব যাচাই-বাছাইপূর্বক বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যেমে বাংলাদেশে ফেরত আনা হয়েছে। বাংলাদেশ পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক সেহেলি শাবরিন বলেন, আমরা বিভিন্ন দেশে নারী ও শিশু পাচার হওয়াদের উদ্ধারে কাজ করে থাকি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পাচার হওয়া ২৮ জন শিশু ও নারীকে আমরা উদ্ধার করি। এরপর ভারতে তাদের সংক্রমণ পরীক্ষার পর ৭ জনের ওমিক্রন ধরা পড়ে। যার ফলে আমরা দেশে আজ ২১ জনকে ফিরিয়ে এনেছি। শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলীফ রেজা বলেন, ভারতে পাচার হওয়া শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের সরকারি প্রচেষ্টায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের এনজিও সংস্থা এদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সহযোগিতা করেছে।
ভারতে পাচার হওয়া নড়াইল জেলার বনগাঁও গ্রামের ৪ বছরের শিশু রুকাইয়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মা-বাবার কাছ থেকে গত ৫ মাস আগে হারিয়ে যায়। সেও আজ দেশে ফিরেছে। তার খালা লিমা আক্তার বলেন, আমরা তাকে পেয়ে ভীষন আনন্দিত। এ সময় রুকাইয়ার খালা আনন্দে কেঁদে ফেলেন।
যশোর মহিলা আইনজীবী সমিতির সমন্বয়কারী রেখা বিশ্বাস বলেন, পাচার হওয়া ও স্বেচ্ছায় গিয়ে হারিয়ে যাওয়া শিশুদের পরিবার থেকে অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা সরকারের মাধ্যমে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কাজ করি। এরপর ৫ মাস থেকে ৬ বছর পর্যন্ত জেল ও সেফ হোমে থাকা শিশু, কিশোর ও কিশোরীদের দেশে ফিরিয়ে আনি।
যশোর জাস্টিস এন্ড কেয়ারের ফিল্ড অফিসার রোকেয়া বেগম বলেন, মানবপাচার এবং বিদেশে বাংলাদেশিরা আটক হলে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে জাস্টিস এন্ড কেয়ার কাজ করে থাকে। ইমিগ্রেশন কাস্টমস ও থানার আনুষ্ঠানিকতার পর তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়