গয়েশ্বর চন্দ্র রায় : নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে সীমান্ত হত্যা বন্ধে ব্যর্থ সরকার

আগের সংবাদ

ওমিক্রনের সামাজিক সংক্রমণ! জিনোম সিকুয়েন্সিং বাড়ানোর তাগিদ > সার্বিক পরিস্থিতি বুঝতে আরো দুই সপ্তাহ লাগবে : বিশেষজ্ঞদের মত

পরের সংবাদ

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন > অন্যায়-অত্যাচার করি না : আইভী > মেহমানে কাজ হবে না : তৈমূর

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

অনতু রেজা, নারায়ণগঞ্জ থেকে : নির্বাচনী ঢামাঢোল বাজছে নারায়ণগঞ্জে। পুরোপুরি জমে উঠেছে নির্বাচনের সব আয়োজন। বাড়ি বাড়ি প্রার্থীদের ধরনা দেয়াও আগের তুলনায় বেড়েছে। প্রার্থীরা নিশ্চিত ভোট পাওয়ার জন্য প্রার্থীদের কাছ থেকে নানা কৌশলে কথা নিয়ে নিচ্ছেন। তবে আগের নির্বাচনগুলোর তুলনায় এবারের নির্বাচনে প্রার্থীদের খুবই সচেতন দেখা যাচ্ছে। ভোটাররাও বিভিন্ন স্থানে কথা বলে প্রার্থীদের অবস্থান সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন। এদিকে নারায়ণগঞ্জে বহুল প্রচারিত একটি স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা তাদের নিজস্ব জরিপ চালিয়ে দেখেছে ডা. আইভী পাবেন ৭৪ শতাংশ ভোট এবং এডভোকেট তৈমূর পাবেন ২৬ শতাংশ ভোট।
প্রতিদিনের মতো গতকাল শুক্রবারও মূল দুই মেয়র প্রার্থী নগর ও বন্দরে প্রচারণা এবং গণসংযোগ চালিয়েছেন। এ সময় আওয়ামী লীগ প্রার্থী ডাক্তার আইভী বলেন, ভোটাররা আমাকে চেনেন, আমি অন্যায় অত্যাচার করি না। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী এডভোকেট তৈমূর বলেন, ঢাকার মেহমান এনে বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে লাভ হবে না।
শুক্রবার নাসিক ১১নং ওয়ার্ডের তল্লা এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডাক্তার আইভী বলেন, ভোটাররা আমাকে অনেক দিন ধরে চেনেন। আমি অন্যায়-অত্যাচার করি না। চাঁদাবাজিও করি না। তাই ভোটাররা আমাকেই বেছে নেবেন। ভোটারদের বলব নারায়ণগঞ্জে যদি আপনারা শান্তিতে থাকতে চান তবে কোনো শঙ্কায় না থেকে আমাকে ভোট দেন। তিনি বলেন, নৌকা জিতলে ব্যাপক উন্নয়ন হবে। তিনি আরো বলেন,

পোস্টার ব্যানার দেখে মানুষ ভোট দেয় না। ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ শহরে আমার কোনো পোস্টার ছিল না। নারায়ণগঞ্জের মানুষ কিন্তু আমাকে ভোট দিয়েছিল। ২০১৬ সালে ধানের শীষের প্রার্থীর সবচেয়ে বেশি পোস্টার ছিল, আমার পোস্টার ছিল না। এবারো আমার পোস্টার কম। আমি এ ধরনের অপরাজনীতি করি না। আমি সবাইকে সমান গুরুত্ব দিয়ে চলাফেরা করি। এটা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার।
আইভী আরো বলেন, আকরাম সাহেব (আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক এমপি) ২০১১ সালে আমার সঙ্গে ছিলেন। তখন তিনি আমাদের দল করতেন। উনি কিন্তু এখন আমাদের দল থেকে পদত্যাগ করে অন্য দলে চলে গিয়েছেন। তিনি যেহেতু অন্য দলে এখন তাহলে কীভাবে আমার সঙ্গে থাকবেন। উনি তো এখন আওয়ামী লীগেই নেই।
তিনি বলেন, প্রতিদিনই ভোটারদের চাহিদা বাড়ছে। নতুন নতুন এলাকায় যাচ্ছি তাদের চাহিদা শুনছি। তাদের চাহিদা পূরণ করাই আমার টার্গেট। যত রটে তত ঘটে না। নারায়ণগঞ্জের রাজনীতির যে ধারাবাহিকতা, এখানে অনেক অপপ্রচার চালানো হয়, প্রোপাগাণ্ডা রটানো হয়। কিন্তু অবশেষে সব ভোট সুন্দর হয়, পরিবেশ সুষ্ঠু থাকে। আমি আশা করি, এখানেও তাই থাকবে।
তিনি আরো বলেন, এখানে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আমি কোনো ট্যাক্স বাড়াইনি। আমি অনেককে বলেছি ট্যাক্সের কাগজটা নিয়ে আসেন। আমি যদি ট্যাক্স বাড়াতাম তাহলে কী এই দুই/তিন বছরে আমাকে কি কেউ অভিযোগ করত না? এখন কেন এটা ব্যাপকভাবে প্রচারণা করা হচ্ছে। আমার যে ক্ষমতা বিধিমোতাবেক পনেরো পার্সেন্ট মওকুফ করা, কেউ এলে আমি সঙ্গে সঙ্গে মওকুফ করে দেই।
অপরদিকে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেছেন, মানুষের হৃদয়ে এখন হাতি লেখা হয়ে গেছে। ঢাকা থেকে মেহমান এনে আমাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়ায় আর কাজ হবে না। আল্লাহর রহমতে আমাদের একটা গণভিত্তি আছে, জনগণ আমাদের পাশে আছে।
জনগণ চাচ্ছে, তাই প্রার্থী হয়েছি। জনগণ তাদের মনের মতো প্রার্থী পেয়েছে বলে আজ স্বেচ্ছায় ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ নেমে পড়েছে। আমি যেখানে যাই শুধু আগের দিন জানিয়ে দেই তারাই সবাইকে নিয়ে সমন্বয় করে থাকেন। এখানে আজ আমি গণজোয়ার দেখেছি। এই গণজোয়ার পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহির্প্রকাশ।
শুক্রবার দুপুরে বন্দরের শাহী মসজিদ এলাকায় গণসংযোগকালে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তৈমূর এ কথা বলেন। তিনি বলেন, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার বিষয়টি আইভী অস্বীকার করেছেন বলে আমি পত্রিকায় দেখেছি। আবার আশপাশের তারা দেখেছেন এবং আপনারা মানুষকে জিজ্ঞাসা করেন তাহলে জানতে পারবেন।
শুক্রবার সকাল থেকে বন্দরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাজী নজরুল ইসলাম কলেজের সামনে থেকে এ গণসংযোগ শুরু হয়। এতে সব দল ও স্তরের ভোটার এবং সাধারণ মানুষ অংশ নেন। তারা সবাই তৈমূর আলম খন্দকারের হাতি মার্কার পক্ষে ভোট চেয়ে মিছিল করেন এবং দোয়া চান।
এতে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এস এম আকরাম, বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান বিএনপির আতাউর রহমান মুকুল, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির দেলোয়ার হোসেন, বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির এহসান উদ্দিন আহমেদ, মুছাপুর ইউনয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির মাকসুদ হোসেন, স্বতন্ত্র নির্বাচনে জয়ী ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন- মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামাল, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী নজরুল ইসলাম টিটু, বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি নুর উদ্দিন, সদর থানা ছাত্রদলের সভাপতি কাজী নাহিসুল ইসলাম সাদ্দামসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়