গয়েশ্বর চন্দ্র রায় : নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে সীমান্ত হত্যা বন্ধে ব্যর্থ সরকার

আগের সংবাদ

ওমিক্রনের সামাজিক সংক্রমণ! জিনোম সিকুয়েন্সিং বাড়ানোর তাগিদ > সার্বিক পরিস্থিতি বুঝতে আরো দুই সপ্তাহ লাগবে : বিশেষজ্ঞদের মত

পরের সংবাদ

ওমিক্রনের আধিপত্য : ভারতে একদিনে রোগী বাড়ল লাখের বেশি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ভারতের বড় শহরগুলোতে ডেল্টাকে পেছনে ফেলে আধিপত্য বিস্তার করছে করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন; এক দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে সাত মাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ১ লাখ ১৭ হাজার ১০০ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে ২৮ শতাংশ বেশি।
রয়টার্স জানিয়েছে, গত বছর জুনের পর একদিনে এত বেশি রোগী আর ভারতে শনাক্ত হয়নি। গত সাত মাসের মধ্যে আর কখনো দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা লাখ ছাড়ায়নি। ডিসেম্বর থেকে আবার সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারায় দৈনিক শনাক্ত রোগী ১০ হাজারে পৌঁছানোর মাত্র আট দিনের মাথায় তা লাখ ছাড়িয়ে গেল।
১৩০ কোটি মানুষের এই দেশে মহামারীর দুই বছরে সব মিলিয়ে ৩ কোটি ৫২ লাখের বেশি মানুষের কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার খবর সরকারের হিসাবে এসেছে। আক্রান্তদের মধ্যে গত একদিনে মারা গেছেন আরো ৩০২ জন। তাতে সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৪ লাখ ৮৩ হাজারে।
নভেম্বরের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন পুরো বিশ্বেই আতঙ্ক তৈরি করেছে। ভারতের ২৮টি রাজ্যের মধ্যে ২৭টিতেই ছড়িয়ে পড়েছে এ ধরন। কোভিড রোগীদের শরীর থেকে ভাইরাসের নমুনা নিয়ে এ পর্যন্ত যেসব জিনোম সিকোয়েন্স করা হয়েছে, তার মধ্যে ৩ হাজার ৭ জনের মধ্যে ওমিক্রনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইনডিয়া। এর মধ্যে কেবল বৃহস্পতিবারই ৩৭৭ জনের ক্ষেত্রে ওমিক্রন শনাক্ত হওয়ার তথ্য এসেছে। সবচেয়ে বেশি ৮৭৬ জন ওমিক্রনের রোগী পাওয়া গেছে মহারাষ্ট্রে, রাজধানী দিল্লিতে ৪৬৫ জনের ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে।

ভারতের কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ-আইসিএমআর বলেছে, করোনা ভাইরাসের ডেল্টা ধরনকে টেক্কা দিয়ে ওমিক্রনই এখন প্রাধান্য বিস্তার করছে ভারতজুড়ে। সংক্রমণের এবারের বিস্তারে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় থাকা মহারাষ্ট্রে গত একদিনেই ৩৬ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। কেবল মুম্বাই শহরেই দৈনিক শনাক্ত রোগী ২০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে নতুন করে লকডাউন জারির কথা ভাবছে রাজ্য সরকার। দিল্লিতে একদিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৫ হাজার ৯৭ জন। গত বছরের মে মাসের পর এটাই সর্বোচ্চ। কলকাতা, চেন্নাই ও বেঙ্গালুরুতেও সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে। এই মুহূর্তে পুরো ভারতে কোভিড নিয়ে চিকিৎসাধীন আছেন ৩ লাখ ৭১ হাজার ৩৬৩ জন, অর্থাৎ আক্রান্ত হওয়ার পর তারা এখনো সেরে ওঠেননি। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৮৫ হাজার ৪০১ জন। মহারাষ্ট্র কোভিড টাস্কফোর্সের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইনডিয়া জানিয়েছে, এবারের সংক্রমণে রোগীদের শরীরে ডেল্টার তুলনায় কম সময় জ্বর থাকছে। ডেল্টায় আক্রান্ত যাদের হাসপাতালে যেতে হয়েছিল, তাদের সিটি স্ক্যানে ফুসফুসের দ্রুত সংক্রমণ ছড়ানোর চিহ্ন দেখা যাচ্ছিল। এবারের রোগীদের ক্ষেত্রে সেই সংখ্যাও কম আসছে।
গবেষণার প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে অনেক গবেষক বলছেন, ওমিক্রন অনেক বেশি সংক্রামক হলেও গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি ডেল্টার চেয়ে কম। তবে এ ধরনের সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর বিরোধিতা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, ওমিক্রনের কারণেও বিশ্বজুড়ে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। সুতরাং এ ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণকে ‘মৃদু’ বলা ঠিক হবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়