গয়েশ্বর চন্দ্র রায় : নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে সীমান্ত হত্যা বন্ধে ব্যর্থ সরকার

আগের সংবাদ

ওমিক্রনের সামাজিক সংক্রমণ! জিনোম সিকুয়েন্সিং বাড়ানোর তাগিদ > সার্বিক পরিস্থিতি বুঝতে আরো দুই সপ্তাহ লাগবে : বিশেষজ্ঞদের মত

পরের সংবাদ

আমার বাংলাদেশ হাসপাতালে শিশু মৃত্যু : সরকারি হাসপাতালের রোগী এনে ফেলা হয় বিলের ফাঁদে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে আমার বাংলাদেশ হাসপাতালে ভর্তি করার পর বিলের ফাঁদে জিম্মি করা হতো। আদায় করা হতো মোটা অঙ্কের টাকা। বনিবনা না হলে বের করে দেয়া হতো। নানা অনিয়মের মধ্য দিয়েই হাসপাতালটি পরিচালনা করা হচ্ছিল।
বিল পরিশোধ না করায় যমজ দুই শিশুকে বের করে দেয়ার পর একজনের মৃত্যুর ঘটনায় আমার বাংলাদেশ হাসপাতালের মালিক মোহাম্মদ গোলাম সারোয়ারকে (৫৭) গ্রেপ্তারের বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় র‌্যাব লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক বলেন, রাজধানীর শ্যামলীতে বেসরকারি আমার বাংলাদেশ হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিল পরিশোধ না করায় চিকিৎসাধীন যমজ শিশুকে জোর করে বের করে দেয়ার ফলে যমজ এক শিশুর মৃত্যু ও অপর শিশুর আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নির্মম ও অমানবিক এ ঘটনায় দেশব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় র‌্যাব তাৎক্ষণিকভাবে ঢামেক হাসপাতালে গিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের পাশে দাঁড়ায়। যমজ সন্তান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় ভুক্তভোগী মোহাম্মদপুর থানায় আমার বাংলাদেশ হাসপাতালের মালিক ও পরিচালককে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শুক্রবার বিকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে আমার বাংলাদেশ হাসাপাতালের মালিক মোহাম্মদ গোলাম সারোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, দীর্ঘ ২০-২২ বছর ধরে তিনি রাজারবাগ, বাসাবো, মুগদা, মোহাম্মদপুর ও শ্যামলী এলাকায় ৬টি হাসপাতালে পরিচালনা করে আসছেন। সেগুলো হলো- ঢাকা ট্রমা, বাংলাদেশ ট্রমা হাসপাতাল, মমতাজ মেমোরিয়াল ডায়াগনস্টিক,

আরাব ডায়াগনস্টিক, মোহাম্মদিয়া মেডিকেল সার্ভিসেস ও আমার বাংলাদেশ হাসপাতাল। এর মধ্যে আমার বাংলাদেশ হাসপাতাল বাদে সবই বন্ধ করেছেন নানা অনিয়ম ও প্রতারণার অভিযোগ ওঠার পর। প্রায় এক বছর ধরে শ্যামলীতে ‘আমার বাংলাদেশ হাসপাতাল’ খুলে পুনরায় ব্যবসা শুরু করেন তিনি। বিগত সময়ের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি আমার বাংলাদেশ হাসপাতালের সঙ্গে দালাল সিন্ডিকেট তৈরি করেন। যারা বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল হতে রোগীদের ফুসলিয়ে নিজের হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসতেন। তিনি আরো বলেন, হাসপাতাল পরিচালনার বিধিমোতাবেক সার্বক্ষণিক তিনজন চিকিৎসক ডিউটিরত থাকার কথা থাকলেও সার্বক্ষণিক একজন ডিউটিতে থাকতেন। মূলত আইসিইউ কেন্দ্রিক ব্যবসার ফাঁদ তৈরি করে তিনি অবৈধ ব্যবসা করে যাচ্ছিলেন। অনুমোদন পাওয়ার শর্ত না মেনেও কী করে হাসপাতালটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন পেয়েছে সে ব্যাপারে কোনো তথ্য র‌্যাব পেয়েছে কিনা জানতে চাইলে কমান্ডার মঈন বলেন, বিগত সময়ে যখনই অনিয়ম-প্রতারণা ও রোগী জিম্মির বিষয়টি সামনে এসেছে তখনই তিনি হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি বন্ধ করেছেন। এরপর নতুন নামে ফের আরেকটি প্রতিষ্ঠান চালু করেছেন। তিনি যখন অনুমোদন পান তখন হয়তো সে ধরনের শর্তপূরণের বিষয় তিনি সচেষ্ট থেকে পরিদর্শন দলকে দেখিয়েছেন। তবে পরে আর তা রক্ষা করেননি। তবে আমাদের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানের সময় ছিলেন, তারাও নিশ্চয় বিষয়টি পর্যালোচনা করবেন। আমরা জিজ্ঞাসাবাদে বিষয়টি জানার চেষ্টা করব। অবহেলাজনিত মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে। যেহেতেু জোরপূর্বক নির্যাতন করে বের করে দেয়ায় যমজ এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এতে হত্যার অভিযোগ আনা হবে কিনা জানতে চাইলে র‌্যাবের মুখপাত্র বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা বিষয়টি দেখবেন। যেহেতু এখানে ময়নাতদন্তের বিষয় আছে। তদন্তে তা উঠে এলে অবশ্যই হত্যার বিষয়টিও অভিযোগপত্রে আসবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়