বহুবিবাহের আইনি নীতিমালা করতে হাইকোর্টের রুল

আগের সংবাদ

অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্র : উন্নয়ন সহযোগীদের ভুল বোঝানোর চেষ্টা চলছে, ২০২২ সাল হবে অবকাঠামো উন্নয়নের এক মাইলফলক > জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

পরের সংবাদ

স্বাধীন স্বদেশে জনকের পদধ্বনি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কিছু কিছু বিকেল থাকে অসম্ভব ভালোবাসার,
অথচ প্রচণ্ড বিপ্লবের।
কিছু কিছু বিকেল
রক্তের অক্ষরে লিখে রেখে যায়-
বেদনার ইতিহাস, বিজয়ের অমর কবিতা।

সেদিনও বিকেল ছিল,
যেদিন পিতা তাঁর সাহসী বাহু দিগন্তে প্রসারিত করে
আগ্নেয়কণ্ঠে ঘোষণা করেন স্বাধীনতা।

তারপর আঁধার ঘিরে এলো
রাতের আঁধারে ঝাঁক ঝাঁক গুলি
বজ্রের মতো নেমে এলো
পিতৃভক্ত, মুক্তিপাগল, উন্মত্ত বাঙালির বুকে।
সশস্ত্র হায়েনার সংঘবদ্ধ হিংস্রতার মুখে
বন্দি হলেন স্বাধীনতার মহান ঘোষক।
নয় মাসের দুর্ভেদ্য অন্ধকারে
বিরান হলো বঙ্গভূমি,
ছাত্র, শিক্ষক, শ্রমিক আর সাধারণ মানুষের শবে
বাংলা হলো খা খা শ্মশান।

অনাদি কালের ইতিহাস
বাঙালিকে বীরের জাতি বলেই অভিবাদন জানিয়েছে।
পরাজয় এ জাতির ভাগ্যলিপি নয়।
শত্রæর কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণও নয়
বাঙালির সহজ স্বভাব।
লাঙলচষা মৃত্তিকাখণ্ড
অরণ্যের শালবৃক্ষের শাখা,
গৃহস্থের দা, কুড়াল, লাঠি
অস্ত্রে রূপান্তরিত হয়ে জ্বলে উঠল শত্রæর বিরুদ্ধে।
বাংলার কুরুক্ষেত্রে লড়াই বাঁধল মানবে-দানবে।
অসংখ্য বীরের প্রাণ বিসর্জিত হলো,
রক্তধারা নদী হয়ে বয়ে গেল সমুদ্রের বুকে।
হার না-মানা বলিষ্ঠ বাঙালি
অসম মহাযুদ্ধে বিজয়ী হলো।

ডিসেম্বরের বিকেলে পরাজিত রাক্ষসের দল
বাঙালির পায়ের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করে
দাসখত দিতে বাধ্য হলো।
কিছু কিছু বিকেল থাকে বেদনার,
অথচ অসম্ভব অর্জনের।
ষোলোই ডিসেম্বরের বিকেল
তেমনি একটি অপরূপ অপরাহ্ণ।

বাঙালির বিদ্রোহ,
বাঙালির বিজয়,
সবকিছুই বিকেলের বর্ণিল রঙে আঁকা।
বাঙালির মধ্যরাতগুলো আর্তনাদে ভরা,
প্রভাতগুলো বিলাপে বিবর্ণ,
বিকেলগুলোই কেবল সাহসের, সংগ্রামের,
বুক ফুলিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার।
যে স্বাধীনতার জন্য আমরা
হাজার বছর অপেক্ষা করছিলাম,
রক্ত, মৃত্যু, সম্ভ্রম উৎসর্গের পর
যখন সে স্বাধীনতা
আমাদের ভাঙা কুটিরের দরজায় এসে দাঁড়াল;
তাকে বরণ করার জন্যেও
দশ জানুয়ারির আরো একটি প্রশান্ত বিকেল
আমাদের প্রয়োজন ছিল।

আট তারিখেই শত্রæর কারাগার ভেঙে
বেরিয়ে পড়েছিলেন সুদর্শন প্রমিথিউস।
তারপর,
দশদিগন্ত পরিভ্রমণ করে
দীর্ঘদেহী লড়াকু নেতা
পা রাখলেন বাংলার শ্যামল উঠোনে।
স্বাধীন স্বদেশ জনকের পদধ্বনিতে প্রকম্পিত হলো।
আবেগে তিনি বাকরুদ্ধ,
সাড়ে সাত কোটি বাঙালির
পনেরো কোটি চোখের অশ্রæ
পাহাড়ি ঢলের মতো নেমে এলো তাঁর দু’চোখ বেয়ে।
বাংলাদেশের ক্ষত-বিক্ষত, রক্তাক্ত স্বাধীনতা
পিতার চোখের জলে ¯œাত হয়ে শুদ্ধ হলো।
তাঁর ভালোবাসাপূর্ণ হৃদয়ের স্পর্শে
সূর্য আরও লাল হলো,
সবুজ আরও গাঢ় সবুজ হলো
পরিপূর্ণ হলো আকাক্সিক্ষত স্বাধীনতা।

কিছু কিছু বিকেল থাকে
চোখের কোনায় থমকে থাকা জলবিন্দুর মতো
নির্বাক, নিশ্চল, নিরাবেগ।
কিন্তু, আমাদের বিকেলগুলো
বিসর্জন ও বিজয়ের সাতরঙে আঁকা।
আমাদের বিকেলগুলো-
বিপ্লবের,
বিস্ময়ের,
দিগি¦জয়ী মহান পিতার ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়