বহুবিবাহের আইনি নীতিমালা করতে হাইকোর্টের রুল

আগের সংবাদ

অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্র : উন্নয়ন সহযোগীদের ভুল বোঝানোর চেষ্টা চলছে, ২০২২ সাল হবে অবকাঠামো উন্নয়নের এক মাইলফলক > জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

পরের সংবাদ

তবুও নির্বাচনে সহিংসতা!

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ইউপি নির্বাচনের সর্বশেষ পঞ্চম ধাপেও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে ঘটেছে ব্যাপক সহিংসতা। তাই পরবর্তী প্রতিটি ধাপে বাড়তি সতর্কতাও ছিল নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু তাতে থামানো যায়নি সংঘাত। পঞ্চম ধাপের দিনে ভোটগ্রহণ চলাকালে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরপর ভোট গণনা শেষে ফল ঘোষণা নিয়ে সংঘর্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন আরো ৫ জন। এছাড়া অনেক স্থানে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, বোমাবাজি, ব্যালট ছিনতাই, বুথ দখল, জাল ভোট, প্রার্থীদের ভোট বর্জন, পুলিশের গাড়িতে আগুন, প্রিসাইডিং অফিসারকে মারধরের ঘটনা ঘটছে।
দেশজুড়ে মারামারি-হানাহানির এই খবর পত্রিকা, টেলিভিশন কিংবা ফেসবুক খুললেই দেখা যাচ্ছে। যা প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। বাংলাদেশের মতো স্বাধীন দেশে ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে কেন এই সহিংসতা? ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতার কি মূল্য দিচ্ছি আমরা? বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কি এ রকম বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতেন? যেখানে নিজেদের মধ্যে থাকবে স্বার্থ, আধিপত্য বিস্তার কিংবা নিজেকে শ্রেষ্ঠ আসনে জাহির করার মানসিকতা। যার জন্য একে অন্যকে হত্যা করতেও দ্বিধাবোধ করছে না।
সংবিধানে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাষ্ট্র পরিচালনার কথা আছে, যেখানে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন। সেই গণতন্ত্রের বাস্তবায়নে আজ ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু এসবের মধ্যে আজ স্থান করে নিয়েছে সহিংস মানসিকতা। সহিংসতা হচ্ছে আধিপত্য বিস্তারের। নিজেকে বিজয়ীর আসনে আধিষ্ঠিত করাই যেখানে মূল লক্ষ্য। এতে রাজনীতির মূল বিষয়ের অবক্ষয় ঘটছে। রাজনীতির মূল লক্ষ্য হলো জনগণের মুখে হাসি ফোটানো, জনগণের দুঃখে নেতার মন কাঁদবে। কিন্তু আজ ইউপি নির্বাচনে নির্বাচিত হওয়ার আগেই নেতারা জনগণের মনে দাগ কেটে ফেলছেন। নেতায় নেতায় সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটছে। নেতারা কর্মীদের লেলিয়ে দিচ্ছেন যেভাবে হোক সোনার হরিণ ছিনিয়ে নিতেই হবে। কর্মীরাও সে অনুযায়ী কাজ করছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ কি আমাদের এই শিক্ষা দেয়?
আজকে যে আমরা নিজেদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শ কর্মী হিসেবে দাবি করি সেটা কতটা যুক্তিযুক্ত? বঙ্গবন্ধু তো আমাদের শিখিয়ে যাননি মানুষ মেরে, দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করে ক্ষমতা দখল করতে। তাহলে আজ আমরা বঙ্গবন্ধুকে কতটা সম্মান দিচ্ছি? তাঁর আদর্শকে নিজের মধ্যে কতটা লালন করতে পারছি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিজেদের মধ্যে লালন করলে আজ এই ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে দাঙ্গা-হাঙ্গামা বাধত না। মানুষে মানুষে মারামারি, হানাহানি ঘটত না, ভোট জালিয়াতির অভিযোগও উঠত না। সর্বোপরি রাজনীতি চর্চায় রাজনৈতিক অঙ্গনে দরকার বঙ্গবন্ধুর মতো একজন সৎ, আদর্শবান ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের বহিঃপ্রকাশ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। যা বাংলার ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও প্রশ্ন জাগে সেই সময়ে সেই ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর দর্শন, নীতি ও আদর্শকেও কি হত্যা করেছিল নাকি এখন করা হচ্ছে? বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে যেখানে আমাদের পথ চলার কথা সেখানে ঘটছে বিপরীত। মুখে আদর্শকে ধারণ করা হচ্ছে কিন্তু সেটা কাজে প্রকাশ পাচ্ছে না। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে অপ্রীতিকর ঘটনা। বঙ্গবন্ধু হাতে গড়া সংগঠনকে রক্তাক্ত করা হচ্ছে নানাভাবে যা কখনো কাম্য নয়। এমন বাংলাদেশ তিনি চাননি। ক্ষমতার লোভে মারামারি-হানাহানি তার সংবিধানে ছিল না। জনগণকে সেবার লক্ষ্যে মানুষ ভালোবেসে তাকে নির্বাচিত করেছে আর আজ তারই কর্মী হয়ে ক্ষমতার লোভে, নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য মানুষকে হত্যা করতে দ্বিধা করছে না। এ ধরনের কর্মকাণ্ড সরকারকেও সমালোচিত করে তুলছে দেশজুড়ে। তাই এ ধরনের ঘটনা নিরসন করতে সরকারকে আরো কঠোর হতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুযায়ী পথ চলতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করতে হবে।
মো. আল-মামুন
শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়