প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
কাগজ ডেস্ক : যুদ্ধবাজ দেশগুলো ২০২১ সালে তাদের প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা নীতিতে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে। যেমন- ব্রিটেন প্রতিরক্ষা খাতে ডিজিটাল প্রযুক্তি, অমানবিক বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং সাইবার প্রযুক্তিতে বাজেট বাড়িয়েছে। সনাতনী যুদ্ধাস্ত্র ও সৈন্য সংখ্যার পেছনে বরাদ্দ কমেছে। রাশিয়া ইউক্রেন সীমান্তে সেনা সমাবেশ করেছে। চীনও উচ্চ কণ্ঠে হুঁশিয়ার করে বলেছে প্রয়োজনে যুদ্ধ করে হলেও তারা তাইওয়ান পুনর্দখল করবে।
পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে আঞ্চলিক যুদ্ধ চলছে। ইথিওপিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে। ইউক্রেনে চলমান বিচ্ছিন্নতাবাদী সংঘাতে ২০১৪ সাল থেকে প্রাণ গেছে ১৪ হাজার মানুষের। সিরিয়ায় বিদ্রোহ কিছুটা ছাইচাপা আগুনের মতো স্তিমিত রয়েছে তবে আফ্রিকাজুড়ে উত্থান ঘটছে ইসলামিক স্টেটের। এ পরিপ্রেক্ষিতে আগামী দিনগুলোয় যুদ্ধের কৌশল কী হতে যাচ্ছে? ভবিষ্যৎ সমর কৌশলের একটা রূপরেখা আমরা ইতোমধ্যেই দেখেছি বলা চলে।
পশ্চিমা দেশগুলো আর চীন-রাশিয়ার মধ্যে সংঘাতে কী ধরনের প্রযুক্তি কৌশল ব্যবহার হবে, তা ইতোমধ্যেই তৈরি হয়েছে, মহড়া হয়েছে, মোতায়েনও করা হয়েছে। রাশিয়া গত ১৬ নভেম্বর মহাকাশে একটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায়। তারা নিজেদেরই তৈরি একটি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করে। বছরের মাঝামাঝি চীন তাদের হাইপারসোনিক (শব্দের চেয়ে দ্রুতগতিতে ছুটতে সক্ষম) ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। সাইবার দুনিয়ার হামলা চালিয়ে ক্ষতি সাধন কিংবা সম্পদ হাতিয়ে দেয়া একটা দৈনন্দিন ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্লিনটন এবং ওবামার যুক্তরাষ্ট্রে পেন্টাগনের নীতিগত প্রধান মিশেল ফ্লোরনয় বলেন, গত দুই দশক ধরে পশ্চিমা দেশগুলোর নজর ছিল শুধু মধ্যপ্রাচ্যে। এ নিয়ে তারা এতটাই ব্যস্ত থেকেছে যে তাদের প্রতিপক্ষ দেশগুলো সামরিক দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে গেছে। কৌশলগত দিক দিয়ে আসলেই আমরা একটা দুর্বল জায়গায় রয়েছি। আমরা বিশ বছর ধরে শুধু নজর দিয়েছি সন্ত্রাস ঠেকাতে আর বিদ্রোহ সামলাতে। ইরাক আর আফগানিস্তানে যুদ্ধ করে সময় পার করেছি। এখন চোখ খুলে দেখছি খুবই গুরুতর বিশাল একটা শক্তিমত্তার প্রতিযোগিতার মুখে পড়ে গেছি আমরা। চীন ও রাশিয়ার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আমরা যখন মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে পড়ে ছিলাম, তখন এ দেশগুলো পশ্চিমা কায়দায় যুদ্ধ লড়ার পাঠ নিয়েছে।
এ ধরনের লড়াই বাধলে প্রথমেই যেটা হবে, সেটা হলো দুপক্ষেই পাল্টাপাল্টি সাইবার হামলা শুরু হয়ে যাবে। একে অন্যের যোগাযোগ ব্যবস্থা- যেমন : স্যাটেলইট ব্যবস্থা কিংবা সাবমেরিন কেবল ধ্বংস করা চেষ্টা চালাবে। প্রশ্ন ছিল, যুদ্ধ শুরু হলে আমাদের ফোন কী হঠাৎ অকেজো হয়ে পড়বে? পেট্রল স্টেশনে কী হঠাৎ তেল ফুরিয়ে যাবে? খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা কী আকস্মিক অচল হয়ে যাবে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হ্যাঁ, এগুলো ঘটা খুবই সম্ভব। পরাশক্তিগুলো সাইবার স্পেসের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে উপগ্রহ ব্যবস্থা ‘জ্যাম’ করে দিতে পারে। আগামী দিনের সংঘাতে টার্গেট শুধু সামরিক বাহিনী হবে না, সার্বিকভাবে গোটা সমাজ হবে হামলার লক্ষ্যবস্তু।
আগামীর যুদ্ধ কৌশলে আরেকটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এর নাম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা- ইংরেজিতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা সংক্ষেপে, এআই। পেন্টাগন-ভেটেরান মিশেলের বিশ্বাস চীন তার পিপলস লিবারেশন আর্মির বিশালতার নিরিখে যেখানে অনেক এগিয়ে আছে, সেখানে তাকে টেক্কা দিতে একমাত্র উপায় হবে এআই।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।