চট্টগ্রামে অসহায়দের কোরিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের ক্যাশ টাকা বিতরণ

আগের সংবাদ

বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী : তরুণদের সশস্ত্র বাহিনীতে আসতে উদ্বুদ্ধ করবে

পরের সংবাদ

প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন না ভুক্তভোগী কৃষকরা : কালীগঞ্জে ৫শ বিঘা ফসলি জমি অনাবাদির আশঙ্কা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৬, ২০২২ , ১:১৩ পূর্বাহ্ণ

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি : কালীগঞ্জে কালাইলের বিলের কৃষি জমির মাটি ভাগ-ভাটোয়ারা করে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। মাটি কেটে নেয়ায় ওই বিলের ৫ শতাধিক বিঘা কৃষি জমি অনাবাদি থাকার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না প্রভাবশালী ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে।
মাটি কাটার ঘটনায় জড়িত ওই দুই নেতার নাম ম. বজলুর রহমান ও মো. আলামিন আকন্দ। দু’জনের বাড়িই কালীগঞ্জ পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের দুবার্টি গ্রামে। বজলুর রহমান গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ছিলেন। অন্যদিকে আলামিন পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। তবে তাদের সঙ্গে ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আরমান আকন্দের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে জানান কালাইলের বিলের ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজন কৃষক ও যুবলীগ নেতা আলামিন।
সরেজমিনে দেখা যায়, কালাইলের বিলের দুর্বাটি উত্তরপাড়া ও বৈরাইল এলাকায় ২০-২৫ একর ফসলি জমি থেকে এক্সকাভেটর (ভেকু) দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। এতে জমির বিভিন্ন স্থানে ৭-৮ ফুট গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
দুর্বাটি গ্রামের কৃষক কামরুল ইসলাম জানান, বজলু ও আলামিন বিলের কৃষি জমির মাটি কেটে নিচ্ছে। তবে তারা বাধা দিলে তাদের ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছে বলেও জানান তিনি। একই গ্রামের আরেক কৃষক আব্দুল হক জানান, কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে নেয়াতে জমির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। প্রতিবাদ করায় নেতারা বলেছে মাটি কাটা শেষ হলে এক্সকাভেটর (ভেকু) দিয়ে ঠিক করে দিবে। মাটি কেটে নেয়ায় জমিতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে এই বছর আর জমিতে ফসল করতে পারবেন না বলে জানান তিনি। দুবার্টি গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন জানান, জোর করে ভূমিদস্যুরা তার জমির মাটি কেটে বিক্রি করে দিচ্ছে। মাটি কাটতে বাধা দিলেও তারা কেটে নিবে। আমরা সাধারণ মানুষ তাদের সঙ্গে পেরে উঠব না। বাধা দিতে গেলে নানা ধরনের হুমকি ও হয়রানির শিকার হতে হয়। ওইসব কৃষি জমিতে এবার কোনো চাষাবাদ করতে পারেননি। তাই ইচ্ছা করেই নিজের কৃষি জমির মাটি বিক্রি করে মাছের জন্য ডাঙ্গি (মাছ জমার স্থান) তৈরি করে ফেলছি।
লরি চালক শাকিল, ছাব্বির, আতিক ও আরিফুল জানান, তারা পার্শ্ববর্তী নরসিংদী জেলা থেকে লড়ি নিয়ে এসেছেন। সারাদিন মাটি কাটার কাজ করেন। আর সন্ধ্যার পর দুবার্টি গ্রামে বজলু ও আলামিনের ব্যবস্থাপনায় রাত্রি যাপন করেন। এ ব্যাপারে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আরমান আকন্দ বলেন, আলামিন আমার কৃষি জমির ওপর দিয়ে লড়ির রাস্তা করার কারণে অনাবাদি হয়ে পড়ে আছে। তাকে কয়েক দফা বাধা দিয়েছি। এরপরও সে শুনেনি। মাটি কাটার বিষয়টি স্বীকার করে আলামিন আকন্দ বলেন, কৃষকদের ক্ষতি পূরণ দিয়ে মাটি কাটছি। আর এর সঙ্গে শুধু আমি না আরো অনেকেই জড়িত। কৃষি জমি থেকে মাটি কাটার বিষয়ে ম. বজলুর রহমান বলেন, কৃষি জমিতে মাটি জমে থাকায় তা কাটছি। আরো অনেকেই মাটি কাটছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা তাসলিম বলেন, ফসলি জমির মাটি কাটার বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসসাদিকজামান বলেন, ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়