চট্টগ্রামে অসহায়দের কোরিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের ক্যাশ টাকা বিতরণ

আগের সংবাদ

বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী : তরুণদের সশস্ত্র বাহিনীতে আসতে উদ্বুদ্ধ করবে

পরের সংবাদ

পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে তরুণদের ভূমিকা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

পত্রিকার পাতায় চোখ বুলালে, অনেক স্বপ্নবাজ তরুণের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা জানা যায়। অনেক তরুণ পায়ে হেঁটে নতুন নতুন জিনিস আবিষ্কারের চেষ্টা করছে। কেউ কেউ সাহসিকতার সঙ্গে পাহাড়-পর্বতের চূড়ায় আরোহণ করে লাল-সবুজের পতাকা উঁচু করে ধরছে। তাদের মধ্যে অনেকে দেশের পাহাড়-পর্বত ছাপিয়ে এভারেস্টের চূড়ায় বাংলাদেশের পতাকা উঁচু করে ধরার স্বপ্ন দেখছে। আবার কেউ কেউ দেশের নদ-নদী, পাখ-পাখালি, জীববৈচিত্র্য নিয়ে গবেষণাধর্মী কাজ করছে। পাখির জন্য গাছে গাছে মাটির হাঁড়ি বসাতে দেখা যায় অনেককে। যা আগামী দিনগুলোতে তারুণ্যের সম্ভাবনাকেই তুলে ধরে।
পর্যটন শিল্পের বিকাশে তরুণদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। অন্যরাও যেন ভ্রমণে আগ্রহী হয় সে জন্য তাদের নিজেদের অভিজ্ঞতা অন্যের সঙ্গে শেয়ার করতে হবে; এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যমে হলো- পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। কোথাও ঘুরতে গিয়ে তারা সেখানকার দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতা মোবাইল কিংবা পিসিতে লিখে পত্রিকা অফিসে মেইল করে দিতে পারে। পাঠানো লেখাটি পত্রিকায় ছাপিয়ে দিলে, সেটা পড়ার মাধ্যমে হাজারো তরুণ নতুন জ্ঞান লাভ করতে সক্ষম হবে। আবার কেউ চাইলে ফেসবুক লাইভে এসে, বাংলা কিংবা ইংরেজি ভাষায় সে স্থান সম্পর্কে মানুষকে জানাতে পারে। ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলে ধরা যেতে পারে। প্রযুক্তি যথাযথভাবে ব্যবহার করে এভাবে তারা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে দেশের দর্শনীয় স্থানগুলো তুলে ধরতে পারে। এছাড়াও পর্যটন এলাকায় যাতে জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়ক্ষতি না হয়, তার জন্যও তরুণরা প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারে। সাধারণ মানুষকে পর্যটন এলাকার প্রকৃতি ও পরিবেশ সম্পর্কে বিভিন্নভাবে সচেতন করতে পারে।
অন্যদিকে বর্তমান প্রজন্মের কাছে যদি দেশি সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য না তুলে ধরা হয়, তাহলে প্রযুক্তির এ সহজলভ্যতার যুগে তারা বিদেশি সংস্কৃতির কবলে পড়ে ভুলে যাবে দেশমাতৃকার সমৃদ্ধ ইতিহাস-ঐতিহ্য। কাজেই পিতা-মাতার উচিত তাদের সন্তানকে অবসর সময়ে দেশের ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে নিয়ে যাওয়া। তাদের সামনে দেশের লোকশিল্প, মৃৎশিল্প, কুটিরশিল্প, বাঙালির জীবনযাত্রা, দেশীয় রান্নাবান্না, খাবার-দাবার তুলে ধরা। সেজন্য দরকার দেশের আনাচে কানাচে ছুটে যাওয়া। আমাদের মনে রাখতে হবে, যারা নিজেদের শেকড়কে ভুলে যায় তারা বেশি দিন টেকে না। পর্যটনের মাধ্যমে তরুণদের মাঝে শুধু যে ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরা যায় শুধু তা নয়, এর মাধ্যমে তারা সুশৃঙ্খল জীবনযাপনের দীক্ষা লাভ করতে পারে। দেখা যায়, অনেক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা বছরের একটি সময় স্টাডি ট্যুরে বের হয়। তাদের সঙ্গে শিক্ষকরাও থাকেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের বলে দেয়া হয়- কখন, কোন জায়গায় কী করতে হবে, কোন কাজগুলো করা যাবে না এবং শিক্ষার্থীরা তা পালন করে থাকে। এভাবে তারা বছরব্যাপী শ্রেণিকক্ষে যা শিখল ভ্রমণে এসে তা চর্চা করার সুযোগ পায়। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এতে যেমনি আনন্দ পায়, তেমনি পরবর্তী জীবনে এটি তাদের সুশৃঙ্খল হতে সাহায্য করে।
বিভিন্ন সময় ভ্রমণে গিয়ে অনেক তরুণ-তরুণীকে বিপদের সম্মুখীন হতে দেখা যায়। এক্ষেত্রে তাদের অবশ্যই ঘুরতে বের হওয়ার আগে পরিকল্পনা ঠিক করে নিতে হবে এবং সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আরেকটি কথা হলো, তরুণদের পর্যটন এলাকায় কোনোভাবে বিশৃঙ্খল হওয়া যাবে না, তাদের নম্রতা, ভদ্রতার পরিচয় দিতে হবে সেখানে। কেননা, আজকের তরুণরাই আগামী দিনে দেশের নেতৃত্ব দেবে। তাই তাদের সুনাগরিক হওয়ার বিকল্প নেই। মোদ্দাকথা হলো, পর্যটন শিল্পে বাংলাদেশের রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। আর এ শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সবার আগে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে।

মারুফ হোসেন : শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।
[email protected]+

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়