চট্টগ্রামে অসহায়দের কোরিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের ক্যাশ টাকা বিতরণ

আগের সংবাদ

বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী : তরুণদের সশস্ত্র বাহিনীতে আসতে উদ্বুদ্ধ করবে

পরের সংবাদ

ধলেশ্বরীতে যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবে নিখোঁজ ১০

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

অনতু রেজা, নারায়ণগঞ্জ থেকে : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ধর্মগঞ্জে ধলেশ্বরী নদীতে ঢাকা থেকে বরিশালগামী লঞ্চের ধাক্কায় একটি যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবে গেছে। এতে নিখোঁজ হয়েছেন অন্তত ১০ জন। তাদের উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের তল্লাশি অভিযান চলছে। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, ট্রলারটি ৫০-৬০ জন যাত্রী নিয়ে বক্তাবলী সিপাইবাড়ী খেয়াঘাট থেকে ধর্মগঞ্জ খেয়াঘাটের উদ্দেশে যাচ্ছিল। সকালে ঘন কুয়াশার কারণে ট্রলারটি স্পষ্ট দেখা না যাওয়ায় এম ভি সোবহান নামে একটি যাত্রীবাহী লঞ্চের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। সঙ্গে সঙ্গেই ট্রলারটি নদীতে তলিয়ে যায়। অধিকাংশ যাত্রী সাঁতার কেটে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও অন্তত ১০ জন যাত্রী নিখোঁজ হন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তল্লাশি অভিযান শুরু করে। তবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নিখোঁজ কাউকে উদ্ধার বা ডুবে যাওয়া ট্রলারের অবস্থান শনাক্ত করা যায়নি।

খবর পেয়ে নৌপুলিশ, কোস্ট গার্ড, বিআইডব্লিউটিএ, ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদলসহ অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিরা কাজ শুরু করে। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত ফেরদৌস, নৌ পুলিশের এসপি মিনা মাহমুদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জানা যায়, ট্রলারটির যাত্রীদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন গার্মেন্টস কর্মী। দুর্ঘটনার পর নিখোঁজদের সন্ধানে ধলেশ্বরীর তীরে ভিড় করছেন তাদের স্বজনরা। নিখোঁজদের মধ্যে একই পরিবারে চারজন রয়েছেন। এক বছর বয়সের একটি শিশুও রয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রলার থেকে বেঁচে আসা ধর্মগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা নাঈম জানান, প্রায় ৫০/৬০ জন যাত্রী নিয়ে প্রতাপনগর ঘাট থেকে ট্রলারটি ধর্মগঞ্জ ঘাটের দিকে আসছিল। মাঝ নদীতে যাত্রীবাহী একটি লঞ্চ ট্রলারটিকে ধাক্কা দেয়। লঞ্চটি ট্রলারের ওপর দিয়ে দ্রুতগতিতে চলে যায়। তিনি বলেন, ঘনকুয়াশার কারণে নদীতে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। লঞ্চটি কোনো সিগন্যাল দেয়নি বা হর্নও বাজায়নি। খুব কাছাকাছি চলে আসার পরও লঞ্চটি থামানোর চেষ্টা করেনি চালক। উল্টো দ্রুতগতিতে চলে যায়।
স্থানীয় ঘাটের লোকজন জানান, এই ঘাট দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজারের বেশি মানুষ যাতায়াত করে। কিন্তু ইজারাদার লোকজন পারাপারের জন্য মাত্র একটি ট্রলার দিয়ে যাত্রী পারাপার করে থাকে। একটি ট্রলার হওয়ার কারণে ঘাটে যাত্রীদের ঘণ্টাব্যাপী অপেক্ষা করতে হয়। এ কারণে ঘাটে ট্রলার এলেই যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এতে করে ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী নিয়েই ট্রলারটি চালাতে হয়।
নৌ পুলিশের পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদ জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ৫০/৬০ জন যাত্রী নিয়ে বক্তাবলীর প্রতাপ নগর গুদারাঘাট থেকে ধর্মগঞ্জ গুদারাঘাটে আসার পথে মাঝ নদীতে দক্ষিণবঙ্গগামী একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ ধাক্কা দেয়। এতে লঞ্চটি ট্রলারটিকে প্রায় ৪০/৫০ গজ দূরে নিয়ে যায়। পরে যাত্রীদের মধ্যে অনেকে সাতরে তীরে উঠতে পারলেও অন্তত ১০ যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে। তিনি দাবি করেন ঘনকুয়াশার কারণে নৌকার যাত্রীরা লঞ্চটি এবং লঞ্চটিও ট্রলারটিকে দেখতে না পাওয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। নিখোঁজদের মধ্যে মনির, মোতালিব, আব্দুল্লাহ, মলি, তাসলিমা, তাসফিয়া এ ছয় জনের নাম জানা গেছে।
নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খুলেছি। কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এখানকার এসি ল্যান্ড এবং জন প্রতিনিধি যারা আছেন তারাও কাজ করছেন। আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে এই ট্রলারটিকে খুঁজে বের করা। যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা এই ট্রলারটিকে শনাক্ত করতে পারব ততক্ষণ আমাদের উদ্ধার অভিযান চলবে। যে লঞ্চটি ট্রলারকে ধাক্কা মেরেছে সেটিকে আটক ও লঞ্চটির চালককে আইনের আওতায় আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়