চট্টগ্রামে অসহায়দের কোরিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের ক্যাশ টাকা বিতরণ

আগের সংবাদ

বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী : তরুণদের সশস্ত্র বাহিনীতে আসতে উদ্বুদ্ধ করবে

পরের সংবাদ

উত্তরাঞ্চলে জেঁকে বসেছে শীত : গরম কাপড়ের দোকানে উপচে পড়া ভিড়

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ঠাকুরগাঁও ও গাইবান্ধাসহ উত্তরাঞ্চলে জেঁকে বসেছে শীত। কয়েক দিন ধরে ঠিকমতো সূর্যের দেখা মিলছে না। এতে করে বিভিন্ন বয়সি মানুষজন পড়ছেন বিপাকে। প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া ঘর থেকে তেমন বের হচ্ছে না সাধারণ মানুষ। এ অবস্থায় গরম কাপড়ের দোকানে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। এ সম্পর্কে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট-
ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁওয়ে কয়েক দিন ধরে কুয়াশায় জেঁকে বসেছে শীত। তীব্রতাও অনেক বেশি। শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় কুয়াশার কারণে গত ৫-৭ দিন ধরে ঠিকমতো সূর্যের দেখা মিলছে না। দুপুরের পর ২-১ দিন সূর্য উঠলেও বেশিক্ষণ তীব্রতা থাকে না। এতে করে বিভিন্ন বয়সি মানুষজন সমস্যায় পড়ছেন। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন। প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া ঘর থেকে তেমন বের হচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। এ অবস্থায় গরম কাপড়ের দোকানে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। তবে সুযোগ বুঝে বিক্রেতারা কাপড়ের দাম বেশি হাঁকাচ্ছেন বলে ক্রেতারা জানিয়েছেন।
গতকাল বুধবার পৌর শহরের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় বড় মাঠের সামনের হকার্স মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, নারী-পুরুষ, শিশুরা ভিড় জমিয়েছেন। তারা প্রয়োজনীয় শীতের কাপড় কিনছেন সেখানে। কাপড় কিনতে আসা পৌর শহরের হাজীপাড়া মহল্লার সুমি আক্তার জানান, এখানে বাচ্চার জন্য শীতের কাপড় কিনতে এসেছেন তিনি। শীতের তীব্রতা আরো বাড়তে পারে ভেবে তিনি এখানে কাপড় কিনছেন। ভালো মানের কাপড় এখানে পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।
প্রায় প্রত্যেক দিন সকাল থেকে দেখা যায়, মহাসড়কে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ¦ালিয়ে চলাফেরা করছেন। এ কয়েক দিনের প্রচণ্ড শীতে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা বেশি। প্রতিদিন রাত ৮টার মধ্যেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে গ্রামগঞ্জ ও শহরের হাটবাজারগুলো। শীত নিবারণের জন্য গরম কাপড় কিনতে শীতের পুরনো কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় করছেন অনেকেই। শহরের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় বড় মাঠের পাশের মার্কেট ও ঠাকুরগাঁও রোড যুব সংসদ মাঠে পুরনো গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় সবচেয়ে বেশি। বিক্রিও হচ্ছে ভালো। তবে সন্ধ্যার পর যুব সংসদ হকার্স মার্কেটে ভিড় জমতে দেখা যায় বেশি। সেখানে বিভিন্ন বয়সিদের জন্য নানা ধরনের কাপড় বিক্রি হতে দেখা যায়। শীতে কাজ করতে অসুবিধা হওয়ায় অনেকটা বিপাকে

পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। এ অবস্থায় কাজে যোগদান করতে না পেরে অসহায় হয়ে পড়েছেন তারা। সেই সঙ্গে শীতে জড়োসড়ো হয়ে গেছে গবাদিপশুও। কেউ কেউ আবার খড়কুটোয় আগুন জ¦ালিয়ে করছেন শীত নিবারণের চেষ্টা।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার পর্যন্ত জেলায় সর্বোচ্চ ২৮ ডিগ্রি ও সর্বনিম্ন ১১ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে। এছাড়া ব্যক্তিগত উদ্যোগে বেশ কয়েকটি সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকেও শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে সদর উপজেলার বালিয়ায় করিমা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ৬ শতাধিক ও সদর উপজেলার ছোট বেগুনবাড়িতে এভারগ্রিন ৮৯/৯১ ব্যাচের পক্ষ থেকে শতাধিক শীতার্তের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়।
গাইবান্ধা : ঘন কুয়াশা আর উত্তরের হিমেল হাওয়ায় গাইবান্ধায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা। গত দুদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। এতে বিপাকে পড়েছেন শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের মানুষ।
গাইবান্ধার বিভিন্ন উপজেলায় বুধবার সকাল থেকে দেখা মেলেনি সূর্যের। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা গ্রামের পর গ্রাম। বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ। বোরো ধানচাষিরা নতুন বছরের শুরুতেই তীব্র শীতে হতাশায় পড়েছেন।
কৃষি শ্রমিক আজাদুল ইসলাম বলেন, শীতের কারণে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। বাতাসে মাঠে কাজ করা যাচ্ছে না। এই আবহাওয়া আরো কয়েক দিন চললে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের কৃষি শ্রমিকদের সংসারে অভাব নেমে আসবে।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সোনাইডাঙ্গা গ্রামের কৃষক রুহুল আমিন বলেন, গত দুদিন ধরে শীতের তীব্রতা বেড়ে গেছে। ঘন কুয়াশার সঙ্গে শৈত্যপ্রবাহের ফলে আমাদের ইরি-বোরো ধানের বীজতলায় পচন ধরেছে। ধানের চারাগুলো লালবর্ণ ধারণ করে মারা যাচ্ছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কৃষি গবেষক মো. নজরুল ইসলাম জানান, শীতের হাত থেকে বীজতলা রক্ষা করতে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। অথবা সকালের শিশিরগুলো বীজের গা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিতে হবে।
বগুড়া আঞ্চলিক আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসাইন জানান, জানুয়ারি মাসে স্বাভাবিকের তুলনায় কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এই মাসে দুই থেকে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করতে পারে। যার মধ্যে একটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহের রূপ নিতে পারে। এর তাপমাত্রা ৪ থেকে ৬ ডিগ্রিতে আসতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়